সৈয়দপুরে পৌর কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সংবাদ সম্মেলন

মিজানুর রহমান মিলন স্টাফ রিপোর্টারঃ
সৈয়দপুরের মিস্ত্রিপাড়া বাইপাস সড়কের পাশে গড়ে ওঠা সংগঠনের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সৈয়দপুর পৌর পাইকারী কাঁচামাল সবজি মার্কেট বন্ধ করতে ষড়যন্ত্রকারীরা গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। 

তাদের এসব চক্রান্তের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। ব্যবসায়ীদের শ্রম ও অর্থ দিয়ে গড়ে তোলা মার্কেটের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রয়োজনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র কারীদের মুখোশ  উন্মোচন করা হবে। 

এজন্য সংগঠনসহ মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে। আজ রোববার দুপুরে সৈয়দপুর পৌর পাইকারী কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে ব্যবসায়ীরা ওই ঘোষণা দেন। শহরের মিস্ত্রীপাড়া বাইপাস সড়কের পাশে সংগঠনের নিজস্ব কাঁচামাল পাইকারী মার্কেটে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। 

এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও সবজিবাজার একতা সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর পৌর পাইকারী কাঁচামালের মার্কেট গড়ে ওঠাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনার আসল তথ্য সকলকে জানাতে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন । 

সংগঠনের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান লিটন।  লিখিত বক্তব্যে সৈয়দপুর পৌর কাঁচামাল পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান লিটন বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় আমরা কাঁচামালের পাইকারী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। 

শহরে এসব ব্যবসার আড়ত ছিল শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক সংলগ্ন আজিমউদ্দিন হোটেলের পিছনে। সেখানে রেলওয়ের কোয়ার্টারের আশেপাশে গড়ে ওঠে ওই বাজারটি।পরবর্তীতে শহীদ তুলশীরাম সড়কস্থ নয়াবাজার এলাকায় অবস্থিত বিশেষ পল্লী উচ্ছেদ হলে ১৯৯৪ সালে বাজারটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়৷ 

সেখানে মাত্র ৫১ শতক জমির ওপর মার্কেটটি পরিচালনা হয়ে আসছিল। এরমধ্যে পৌর পরিষদের নিজস্ব ১২ শতক, সরকারি ৩ শতক ও ব্যক্তি মালিকানায় ছিল ৩৬ শতক জমি। ওই জমির ওপরে গড়ে ওঠা ঘিঞ্জিপূর্ণ মার্কেটে অনেক কস্ট করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলাম আমরা।


তার উপরে সেটি এবং রেলওয়ের বাজারটি আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠায় দোকান মালিকরা দুই বছর পর পর ভাড়া বৃদ্ধির যে স্টীম রোলার চালাতো, তাতে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন এসব ছাড়াও কাঁচামাল লোড আনলোড করতে গিয়ে যেমন অতিরিক্ত খরচসহ তেমনি অনেক সময় মালামালের ক্ষতি হতো। 

এছাড়া ব্যস্ততম সড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়ে জনদূর্ভোগ চরমে উঠতো তিনি বলেন ব্যস্ততম শহীদ তুলশীরাম সড়কে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ব্যাংক বীমাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকায় মানুষজন ও যানবাহনের চলাচল অনেক বেশী।

ফলে ওই সড়কে সৃষ্ট যানজটের প্রভাব পড়তো গোটা শহরে। আর এসবের প্রভাব পড়েছিল পাইকারি সবজি বাজারে। ফলে এসব সমস্যা সমাধানে সকল ব্যবসায়ীর মতামতের ভিত্তিতে নিজস্ব জায়গায় পাইকারি মার্কেট গড়ে তোলা হয়। কিন্তু  এখন ওই মার্কেট যখন চালু হয়েছে তখন একটি ক্ষুদ্র অংশ বাইপাস সড়কের পাইকারী কাঁচামালের  আড়ৎ  বন্ধে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।


সংবাদ সম্মেলনে ষড়যন্ত্রকারীদের  রুখে চিহৃতি করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে বলে জানানো হয়। এমসয় ব্যবসায়ীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বক্তব্য বলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মো. সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক। 


এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা সাবের আলী,লুৎফর রহমান, সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তফা মারুফ বিন কবির,সহ সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শাহিন সাংগঠনিক সম্পাদক বজলার রশিদ বাবলু, কোষাধ্যক্ষ মো. গুলশানসহ অন্যান্যরা। 


এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল মোহাম্মদ আজম। সংগঠনের একাধিকজন জানান, দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে দুই বাজারের ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে গত ২০০৮ সালে সৈয়দপুর পৌর পাইকারী কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি গঠন করা হয়। 


পরে সমিতির সিদ্ধান্তে শহরকে যানজটমুক্ত করতে ও সুষ্ঠু পরিবেশে ব্যবসার জন্য সংগঠনের নিজস্ব অর্থায়নে ২০১২ সালে মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ১১২ শতক জমি ক্রয় করা হয়। পরবর্তীতে সেখানে ২০১৫ সালে ব্যাংক ঋণসহ প্রায় ২ কোটি  টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয় শতাধিক দোকান।


যা লটারীর মাধ্যমে সমিতির সদস্যদের মধ্যে পজেশন হিসেবে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকেনতুন জায়গায় বাজারটি স্থানান্তর করা হয়নি কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের ষড়ষন্ত্রের কারণে।


এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতিতে গত ১১ এপ্রিল উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি, পৌর পরিষদ, থানা প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে শহরে জনসমাগম এড়াতে পাইকারী কাঁচা বাজার এখানে স্থানান্তর করা হয়। তখন থেকে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে এখানে বাজার পরিচালিত হচ্ছে। তারা জানান, গত ৩১ মে সরকার লকডাউন শিথিল করার প্রেক্ষিতে নয়াবাজারের পূর্বের স্থানের সেই স্বার্থান্বেষী মহল আবারও শহরের ভিতরে কাঁচাবাজার পূনঃস্থাপনের ষড়যন্ত্র শুরু করে। 


তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনসহ পৌর কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজার স্থায়ীভাবে বাইপাস সড়কে পরিচালনার ঘোষণা প্রদানের বিরুদ্ধে গত ১১ জুন বৃহস্পতিবার গুটি কয়েক ব্যবসায়ী যারা পৌরসভার নিজস্ব জমি ও খাস জমি দখল করে বিনা পয়সায় ব্যবসা করছেন এবং দোকান মালিকরা বহিরাগতদের দিয়ে কাফণের কাপড় পড়ে বিক্ষোভ করেছে। 

ব্যবসায়ীরা  বলেন এখানে আমরা মহামারী করোনার মধ্যে সরকারের নির্দেশনা মেনে অত্যন্ত খোলামেলা পরিবেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে পারছি। যা নয়াবাজারের ওই আড়তে কোন দিন কল্পনাও করা যায়না। গুটি কয়েক ব্যক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে সৈয়দপুরের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারিনা। 

প্রয়োজনে নিয়মতান্ত্র্রিক আন্দোলণের মাধ্যমে আামাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ