পানেরছড়া বিট কর্মকর্তা ও বন প্রহরীর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের পানেরছড়া বিট কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা ও বন প্রহরী মোহাম্মদ সিয়াম বিরুদ্ধে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী সদস্যদের কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্যসহ বনের জায়গায় দখল করে পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ( ৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পানেরছড়া সংরক্ষিত বনভূমি রয়েছে প্রায় ৩৩ শত একর।এই সরকারি বনবিভাগের জায়গায় থেকে প্রায় জায়গা পাবলিকের জবরদখলে রয়েছে। তুলাবাগান রেঞ্জের পানেরছড়া বিটের পাশে আঞ্জুঘোনা বনাঞ্চলের পাহাড় কেটে রাত-দিন ডাম্পার গাড়িতে করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট। এসব ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিদিন চললেও তুলাবাগান বিট কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা বরাবরের মতো নীরব রয়েছেন। সুত্রে জানা যায় হোয়ারিয়া ঘোনা নামক এলাকা থেকে বালু ও পাহাড় কাটা হচ্ছে। বনতলা থেকে বনভূমির জায়গায় থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। চিকনছড়ি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বাগান থেকে প্রতিনিয়ত গাছ কাটা হচ্ছে। পানেরছড়া স্টেশন এর পাশে লম্বাঘোনা পশ্চিম দিক দিয়ে পাহাড় কাটা ও বনবিভাগের জায়গাতে ঘর নির্মাণ ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।আশ্রয়ণ প্রকল্পের পশ্চিম পাশে একে আজাদ এর ঘোনায় মুরগী ও গরুর ফার্মসহ প্লট আকারে সরকারি বনবিভাগের জায়গায় বিক্রি করা হয়েছিল।বিট অফিসের পাশের রোড দিয়ে নিয়মিত ডাম্পার গাড়ি নিয়ে মাঠি নিয়ে যাচ্ছে ।এবং তার পাশে রয়েছে আমিনের ঘোনা,এই ঘোনা থেকে বালু উত্তোলন করেন। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়,ওই এলাকায় পাহাড় কাটা বালু উত্তোলন ও বনবিভাগের জায়গা থেকে গাছ কাটা সহ মাঠি কাটার সাথে জড়িত রয়েছে।১/ নজরুল ইসলাম,লম্বা ঘোনায় নিয়মিত পাহাড় করে মাঠি বিক্রি করে যাচ্ছে ২/আবু তাহের,লম্বাঘোনা ও শিয়া পাড়ায় ডাম্পার গাড়ি দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।৩/জৈনক ব্যক্তি,যিনি বহু বন মামলার আসামি,সেই হোয়ারি গোনায় মাটি কাটা সহ বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।৪/ শাহজাহান,যিনি কিনা বনতলা থেকে পাহাড় কেটে মাঠি বিক্রি করে যাচ্ছে। এবং বনতলা এলাকায় কয়েকটি দলীয় সিন্ডিকেট রয়েছে।পানের ছড়া স্টেশন এর পশ্চিম ও পূর্ব পাশে বলি পাড়া এলাকায় ৫/ছৈয়দ নুর নিয়মিত পুরো এলাকা জুড়ে এসব অপরাধ প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে। ৬/সুইস এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও বাড়ি নির্মাণ করে যাচ্ছে একাধিক ব্যক্তি।তার মধ্যে রয়েছে জৈনক আরেক ব্যক্তি যিনি কিনা বহু মামলার আসামি বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে পাহাড় কাটা এবং বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় ওই এলাকায় কয়েকটি বাড়ি নির্মাণ করেছে এমন কয়েক জনের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়েছিল ওই বিটের প্রহরী মুহাম্মদ সিয়াম যার একাধিক ব্যক্তির নাম প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। ১/সিরাজুল হক দক্ষিণ মিঠাছড়ির চাইল্যাতলী এলাকার মোহাম্মদ কালুর ছেলে।২/নামঃ- রাশেদা বেগম ,ঠিকানাঃ- নিছের পাড়া সেই একটি বনবিভাগের জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেছে তাও সেই জায়গাটি ক্রয় করেছিল ওই এলাকার জৈনক ব্যক্তির কাছ থেকে। নিছের পাড়া খলিল মেম্বার বাড়ি পাশে বনবিভাগ এর জায়গায় বিক্রি করেছে খোদ খলিল মেম্বার। বর্তমানে ওই জায়গাতে একটি টিনশেড বাড়ি করা হয়েছে। ৩/নামঃ-নুরু,পিতাঃ পেটান আলী,ঠিকানাঃ- দক্ষিণ সমিতি পাড়া পানেরছড়া বিট অধীনে একটা জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেছে। পাকা দালান ৩ টি রুম বিশিষ্ট। ৪/ নামঃ-খলিল মেম্বার এর চাচা ,ঠিকানাঃ- নিচের পাড়া ,খলিল মেম্বার বাড়ি পাশে  সেই বনবিভাগ এর জায়গাতে ৫ তলা ফাউন্ডেশন বাড়ি নির্মাণ করেছে।৫/নুরুল ইসলাম সওদাগর,ঠিকানাঃ- দক্ষিণ সমিতি পাড়ায় বনবিভাগের জায়গায় ঘর করেছে যাচ্ছে প্রায় ৪ রুম করে।৬/ হাফেজ আহাম্মদ ,পিতাঃ- মনির আহাম্মদ,ঠিকানঃ- দক্ষিণ হোয়ারি গোনা, বনবিভাগের জায়গায় পাহাড় কেটে দোকান ও স্থাপনা করেছে।৭/নামঃ আব্দু গফুর ,পিতাঃ মোহাম্মদ হোছেন ঠিকানাঃ পূর্ব পানেরছড়া,সেই একটি বাড়ি নির্মাণ করেছে বনবিভাগের জায়গায়,৮/ আলী আহাম্মদ,ঠিকানা, গরিল্লার ছড়া ও জিনের ঘোনা,সেই একটি পাহাড় করে বাড়ি নির্মাণ করেছে। ৯/নামঃ জোসনা,পিতাঃ আবুল কালাম,সেই বিটের পাশে একটি বনের জায়গাতে বাড়ি নির্মাণ করেছে। পাশাপাশি জাম বাগানে গাছ কাটা ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।শুধু এরাই নয় এই বনবিভাগের জায়গাতে অহরহ অহরহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণ করে যাচ্ছে। এসব পাহাড় কাটা বন্ধ করতে না পারলেই সংরক্ষিত বনাঅঞ্চল বনভূমি বিলীন হয়ে যাব।তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব অপরাধের রোদ করার আহ্বান জানান ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি। বিট কর্মকর্তা অধীনে কাজ করে যাচ্ছে বন প্রহরী মুহাম্মদ সিয়াম,গেল কিছুদিন আগে পানেরছড়া এলাকায় পাহাড় ধসে সিরাজুল হক ওরফে গুরু (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পানের ছড়া জনু মাতবর পাড়া ফরেস্ট অফিস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও মূল আসামির কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করেছিল খোদ বন প্রহরী মোহাম্মদ সিয়াম। তথ্য সুত্রে আরো জানা যায়,স্থানীয় বাসিন্দা ও উপকারভোগী সদস্যরা জানান,ওই এলাকায় সড়ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সড়কের পাশের সামাজিক বনায়নের গাছ দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রয় করে দেয় বনবিভাগ। গাছগুলো দরপত্র প্রদানের পূর্বে গাছে নাম্বার প্রদানের নামে উপকারভোগী সদস্যদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায় করেন বন প্রহরী সিয়াম । উপকারভোগীদের দলিল ও কাগজপত্র জমা নিতে রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং অফিসের খরচ বাবদ আবারো ৫০০-৮০০ টাকা হারে ঘুষ আদায় করেন বন প্রহরী সিয়াম। উপকারভোগীদের অভিযোগ, বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বন প্রহরী বাগানের গাছ বিক্রয়ে দরপত্র আহবানের পূর্বে গাছে নাম্বার দেওয়ার সময় একাধিক বড় বড় গাছে একই নাম্বার দিয়ে দরপত্রে গাছের সংখ্যা কম দেখিয়ে বিপুল সংখ্যক গাছ কালো বাজারে বিক্রি করে দেয়। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে চলতি বৃক্ষরোপণ অভিযানে গাছের চারা নিয়েও নয়-ছয় করেছিলেন অফিসের লোকজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, উপকারভোগীদের বাগানের তাদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দিতে দলিল ও কাগজপত্র জমা নেওয়ার নামে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রহরী। এছাড়া অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিকভাবে বাগান তদারকি না করে অফিসে বসে বসে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এতে সামাজিক বনায়নের গাছগুলোর ৩০ শতাংশ বেড়ে উঠা কষ্ট হয়। কর্মকর্তার অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের কারণে সংরক্ষিত ওই এলাকায় অবাধে গাছপালা কাটায় জীববৈচিত্র্যের অভয়াশ্রম হুমকির মুখে পড়ছে, নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।স্থানীয়রা জানান,তাদের এলাকায় দীর্ঘদিন বসবাসরত মানুষের জরাজীর্ণ ঘর মেরামত কিংবা নতুন ঘর স্থাপনা করতে গেলেই বিট কর্মকর্তাকে দিতে হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে দিতে হয় এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। কেউ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর শুরু হয় এ্যাকশান। বিট কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাড়ি ঘর থেকে উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে এলাকার দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুষ আদায় করে আসছেন। এছাড়াও বন-বিভাগের উটলড বাগান রয়েছে তাও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। তার বিরুদ্ধে মুখ খোলাও বারন। তারা আরো জানায়, বনভূমির পাদদেশে খতিয়ানভূক্ত জমিতে বাড়ি ঘর করতে চাইলে নানা অজুহাতে জমির মালিকদের কাছ থেকে বিট কর্মকর্তা গুলাম মুস্তফা উৎকোচ দাবী করেন বলে একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বিট কর্মকর্তার অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থের একটি অংশ চলে যায় তার উর্ধতন এক কর্মকর্তার পকেটে। তাদের সহযোগিতায় বিট কর্মকর্তা সকল প্রকার অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। এব্যাপারে জানতে চাইলে পানেরছড়া বিট কর্মকর্তা গুলাম মুস্তফা সাংবাদিকদের জানান, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।শুধু তাই নয় বন প্রহরী সিয়াম এর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ কেন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে!সেই কি করেছে কি না করেছে তাও আমি অবগত নয়।এবং সেই সম্প্রতি অফিসিয়ালভাবে বদলি হয়েছে খুব শীঘ্রই সে এই অফিস থেকে চলে যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ