বিশেষ প্রতিনিধি লালমনিরহাটঃ
শতশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর তীব্র আন্দোলন, মানববন্ধন ও আপত্তিকে উপেক্ষা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাকাব, লালমনিরহাট জোনের জোনাল ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পাওয়া খায়রুল ইসলাম তার পুরনো চেহারায় ফিরতে শুরু করেছেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, তিনি যোগদান করেই অধিনস্তদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের হুমকি প্রদর্শন শুরু করেছেন। সূত্র জানায়, খায়রুল ইসলাম, ইতিপূর্বে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় জোনাল ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অধিনস্থদের অশ্লীল ভাষায় কথা বলা, কথায় কথায় শোকজ ও বদলীর হুমকি ধামকি প্রদর্শনসহ বহু অনাকাংখিত ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন। একই কারনে, ২০২৪ সালের ২১ আগষ্ট নীলফামারী জেলার শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাতে তিনি চরম ভাবে লাঞ্চিত হন। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলে, গোপনে সটকে পড়েন এবং গা ঢাকা দেন।
ওই অবস্থায় তাকে রংপুর জিএম অফিসে বদলি করা হয়েছিল, কিন্তু সেখানেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাকে রাকাব, প্রধান কার্যালয়ে তুলে নেয়া হয়। একই ভাবে লালমনিরহাট জেলায় থাকাকালীন এক সঙ্গে ৯৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হলে খায়রুল ইসলামকে লালমনিরহাট থেকেও তুলে নেয়া হয়েছিল। সূত্র জানায়, খায়রুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের ঘটনায়, বাংলাদেশ ব্যাংক, রংপুর শাখার স্মারক নং ডিবিআই (সিআইপিসি) ৯৮৭/২০২৫-৪২৭, তারিখঃ ০৭/০৪/২০২৫ইং পত্রে খায়রুল ইসলামকে মাঠ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের ক্ষেত্রে তদন্তদল কর্তৃক প্রদত্ত তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লিখিত অনিয়ম/অভিযোগ সমূহ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার জন্য রাকাব, কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছিল। কিন্ত রাকাব, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই পরমর্শকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খায়রুল ইসলামকে পূনঃরায় লালমনিরহাট জেলায় জোনাল ব্যবস্থাপক হিসেবে পদায়ন করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শতশত কর্মকর্র্তা-কর্মচারী এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও জোনাল কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও অজ্ঞাত খুঁটির জোরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর অফিস সময়ের পূর্বেই অত্যন্ত গোপনে খায়রুল ইসলাম যোগাদান করে আবার গা ঢাকা দেন। এ নিয়ে পত্র পত্রিকায় খবরও প্রকাশিত হয়। সূত্র জানায়, কয়েক দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর খায়রুল ইসলাম রাকাব, বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম এর মধ্যস্থতায় গত ৬ নভেম্বর থেকে অফিসে আসতে শুরু করেন।
এদিকে রাকাব, লালনিরহাট জোনের বেশ কয়েকজন শাখা ব্যাবস্থাপক ও কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, তিনি যোগাদানের মাত্র ১০/১২ দিনের মাথায় স্বরুপে ফিরতে শুরু করেছেন। তিনি এরই মধ্যে বিভিন্ন শাখা ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তাগণকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের হুমকি প্রদর্শন এবং প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের শুপারিশ করায় শতশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাঝে পূনঃরায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে রাকাব, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম রহমতুল্লাহর মোবাইল নাম্বারে (০১৯১৬৭৫৫৪২৫) কয়েকবার ফোন দিনেও তাকে পাওয়া যায়নি।
0 মন্তব্যসমূহ