সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় উখিয়ার মেয়ে শাহেদা আক্তার রিপা


ওমর ফারুক সোহাগ:শক্তিশালী দল ভারতকে হারিয়ে সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দলের সেরা খেলোয়াড় শাহেদা আক্তার রিপা।শাহেদা আক্তার রিপার জম্মস্থান কক্সবাজার জেলা উখিয়া উপজেলা। এ জয়ের পর রীতিমতো উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে গ্রামের বাড়িতে।

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা কমলাপুর স্টেডিয়ামে ভারতকে ০-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ  টুর্ণামেন্টে বাংলাদেশের হয়ে অনুর্ধ ১৯ নারী দলের শ্রীলংকার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক ও ভুটানের বিরুদ্ধে দুটি গোল করে করেন রিপা। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জয়ের পিছনে সাহেদা আক্তার রিপার অসাধারণ নৈপুণ্য ছিল। ৮০ মিনিটের মাথায় শাহেদা আক্তার রিপার পায়ের বলের পাস থেকে করা গোলেই বাংলাদেশের কাঙ্খিত জয় পায়।

খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সাফ নারী টুর্ণামেন্টে সেরা গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হিসেবে দুটি ট্রফি তুলে দেন কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার মেয়ে শাহেদ আক্তার রিপার হাতে।

উখিয়া উপজেলা জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাছড়ি গ্রামের জালাল আহমদ ও শামসুন্নাহারের দ্বিতীয় কন্যা হচ্ছে শাহেদা আক্তার রিপা। সে বর্তমানে বিকেএসপির দশম শ্রেণীর ছাত্রী। ২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
বুধবার রাতে কথা হয় শাহেদা আকতার  রিপার  পিতা জালাল আহমদের সাথে। বাংলাদেশ জয়ের পিছনে তার মেয়ের অসামান্য অবদান থাকায় তিনি ভীষন খুশি। তিনি বলেন, শাহেদা কেবল আমার মেয়ে নয় সে বাংলাদেশের অহংকার এবং সকলের মেয়ে।তিনি আরো বলেন, টিভিতে খেলায় দেখার সময়  মেয়ের নৈপুণ্য, ফুটবল শৈলী দেখে খুবই ভালো লেগেছিল। আর বাংলাদেশের জয় এনে দিতে পারায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ছোটকালে আমার মেয়ের ফুটবল খেলা দেখে আমি উৎসাহ দিতাম। স্বপ্ন ছিল একদিন সে অনেক বড় মাপের ফুটবলার হবে। আমার স্বপ্ন বিশ্বকাপে যেন আমার মেয়ে অংশ নিতে পারে।

সাহেদা আক্তার রিপার পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না বলেই রিপা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিকেএসপিতে ভর্তি হতে পারেননি। এমতাবস্থায় অত্র এলাকার সমাজসেবক শামসুল আলম সোহাগ তিনি বর্তমানে এলজিইডি বিশিষ্ট ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন। একদিন তিনি সাহিদা আক্তার রিপার গ্রামাঞ্চলে খেলা দেখে মুগ্ধ। হঠাং করে খবর নিয়ে দেখা গেল মেয়েটিকে ভাল দলে খেলবে। তিনি তাৎক্ষণিক খবর নিয়ে সরাসরি ঢাকা বিকেএসপিতে খবর নেন।সে সুবাদে২০১৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি করে দেয়,অত্র এলাকার বিশিষ্ট ঠিকাদার শামসুল আলম সোহাগ। পাশাপাশি ওনার ও সহযোগী একজন বন্ধু ছিল। বিকেএসপিতে রিপাকে ভর্তি করিয়ে দেয়। এবং শামসুল আলম সোহাগ নিজে স্বাক্ষর করে রিপার জন্য  বিকেএসপির অভিভাবক হয়ে বিকেএসপি তে ভর্তি করে দিয়ে তিনি চলে আসেন।সেই থেকে এই পযন্ত রিপারকে আর্থিক থেকে শুরু করে অনেক কিছুর অবদান রয়েছে বলে জানান শামসুল আলম সোহাগ। বর্তমানে শাহেদা আক্তার রিপার জন্মদাতা অভিভাবক একজন হলেই বিকেএসপিতে শামসুল আলম সোহাগ একজন অভিভাবক হিসেবে রয়েছে।সেই ২০১৭ সালে ভারতে খেলার সুযোগ পান সাহেদা আক্তার রিপা। ওই বছর ভারতের বিরুদ্ধে ৪০ সেকেন্ডের মাথায় দ্রুততম গোল করে এবং ২০১৮ সালে অনুর্ধ ১৫ ভুটানের বিরুদ্ধে ৭৩ ও ৮৩ মিনিটে ২টি গোল করে বাংলাদেশের হয়ে নারী ফুটবলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পান।খেলার শেষ হওয়ার পর পরই সরাসরি তার জন্মদাতা পিতার খবর না নিয়ে আগে তার বিকেএসপির অভিভাবক শামসুল আলম সোহাগের খবর নেয়।তাও আবার ভিডিও কলে সরাসরি দেখা যায় মত কথা বলেন।

এই বিষয় নিয়ে বিশিষ্ট ঠিকাদার শামসুল আলম সোহাগ বলেন,আমি দীর্ঘ দিন ধরে রিপার পেছনে জড়িত ছিলাম যা পারি তা, দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা, করে আসছি। কিন্তু আজকে রিপার সাফল্য অর্জন দেখে আমি নিজেকে গর্ব বোধ করি।সেইসাথে রিপার জন্য সারাজীবন দোয়া থাকবে ইনশাআল্লাহ, আমি চাই যেন রিপা একদিন বাংলাদেশের হয়ে আরো বড় সাফল্য অর্জন করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ