দখলমুক্ত হচ্ছে না কক্সবাজার শহরের রাস্তা ও ফুটপাত


এ কে সোহেলঃ
কক্সবাজার শহরের অধিকাংশ রাস্তা ও ফুটপাতে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এবং অসাধু ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। বাধ্য হয়ে পথচারিসহ পর্যটকেরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এ কারণে সড়কে প্রতিনিয়তেই যানজটসহ ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দূর্ঘটনা।

এমনকি প্রাণ হারানোর ঘটনাও ঘটছে মাঝে মধ্যে। বিশেষ করে রাস্তার দুই পাশে ভেড়ে ওঠছে অসংখ্য ভ্রাম্যমান দোকান।

পৌরসভা ও প্রশাসনের নজরদারিতে মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও ১/২ দিনের ব্যবধানে আবারও ফুটপাত দখল করে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ভ্রাম্যমান দোকানগুলো ফেদে বসে তারা।

ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা প্রত্যেকেই নাকি কিছু ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে ফুটপাতে এই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে একটি সিন্ডিকেট এসে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১’শ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও দুই পাশের যেসব সিএনজি পার্কিং করে তাদের থেকেও প্রতিনিয়তেই টাকা নিয়ে থাকে বলে জানা গেছে

রবিবার (১২ ডিসেম্বর) এই ভ্রাম্যমান দোকান বসানো কে কেন্দ্র করে নিলুপা আক্তার নামের এক মহিলা কে মারধর করলে আর এক ভ্রাম্যমান ব্যবসায় আলম।তাদের মধো একই জায়গা দোকান বসানো নিয়ে মারামারি হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও আসার পরপরেই ফের বসে যায় ওই সব ভ্রাম্যমান দোকানী। জনবল সংকট ও আর্থিক কারণে বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না প্রশাসনের। এরপরেও কয়েকদিনের মধ্যেই যারা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা আসছে তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে এডভোকেট শওকত বেলাল বলেন, শহরে প্রাণকেন্দ্র হল পর্যটন নগরী সুগন্ধা পয়েন্ট, সেখানে রাস্তার পাশে যদি এভাবে যত্রতত্র গাডি পার্কিং ও ভ্রাম্যমান দোকান বসে যানজট এমনিতেই কমবে না এবং দিনদিন বাড়তে থাকবে। এতে প্রতিনিয়তেই কোন না কোন ভাবে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। একদিকে রাস্তার বেহাল দশা অন্যদিকে যত্রতত্র পার্কিংসহ ভ্রাম্যমান ব্যবসায়দের দখল, সব মিলিয়ে আমরা কখন রেহায় পাবো এসব যানজট থেকে।

গতকাল শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র পর্যটননগরী সুগন্ধা পয়েন্টের সামনে প্রধান সড়কে রাস্তার দু’ধারে ব্যবসায়িরা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোরের উত্তর পাশের্ব সিএনজি পার্কিং ও যত্রতত্র ভ্রাম্যমান ব্যবসা,প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে ভ্রাম্যমান দোকানীর সয়লাভের কারণে যানজট ও জনদূভোর্গ সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া যত্রতত্র ইজিবাইক ও রিক্সার কারনে রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এসব ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের কারণে রাস্তার দু’ধার দিয়ে যেতে না পেরে বাধ্য হয়ে রাস্তার মাঝ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিকে রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও কাউন্টার কারণেও যানজট লেগেই থাকে।

জানা যায়,এসবে একশ্রেণীর লোকজন লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন। তাদের কারণে এই ভাবে গড়ে ওঠছে পর্যটক শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে এই অবৈধ স্থাপনা।অব্যবস্থাপনার কারনে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক ও পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সুনাম ক্ষুন্ন হবে বলে জানান, স্থানীয় লোকজন ও বেড়াতে আসা পর্যটকরা।

ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক বাবুল খন্দকার জানান, একদিকে কটেজ ও হোটেল এর সামনে গাড়ি পার্কিং অন্যদিকে রাস্তার আশপাশে ভ্রাম্যমান দোকানীর কারণে সড়কের মধ্যে যানজট লেগে থাকে। এতে একটি বিরক্তিকর বিষয় হয়ে দাড়াচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে।সবদিকে ভালো লাগলেও রাস্তায় চলাচলে চরম বিরক্তিকর হয়ে উঠছে।

বীচ কর্মীর ইনচার্জ মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন।আজকে আমরা কলাতলীতে যেসব অবৈধ স্হাপনা ছিল সেসব স্হাপন উচ্ছেদ করিছি।আমরা স্যারের সাথে কথা বলে এগুলো দেখবো।

এব্যাপারে পর্যটক সেল ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ ইসলাম জানান, আমরা প্রতিদিন এই অবৈধ স্হাপনগুলো তুলে দিন কিন্তু তারা আবারো প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই আবারো এই ভ্রাম্যমান দোকান গুলো বসতে শুরু করে।আমরা চেষ্টা করতেছি এগুলো কে একটা স্থায়ী সমাধান করতে করতে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ