স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র পেলেও মুক্তিযুদ্ধার তালিকায় ঠাই মিলেনি বৃদ্ধ মকবুল হোসেনের নাম


মোঃ তোফাজ্জল হোসেন,  বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
 

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার বর্তমানে পলাশবাড়ী গ্রামে বসবাসকারী মোঃ মকবুল হোসেন জানান, তিনি ১লা মে ১৯৪৫ সালে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার জায়দাবাদ বড়বাড়ী গ্রামে পিতা মৃতঃ হাবিবুর রহমান ও মাতা মৃতঃ আছিয়া খাতুনের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। 

মুক্তিযুদ্ধকালীন দত্তের বাজারে থ্রি-নট থ্রি রাইফেল ও গ্রেনেট প্রশিক্ষণ গ্রহন করে ১৮ই মে ১৯৭১ইং সালে প্রথম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পূর্বে ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকুরীরত অবস্থায়  থাকা সেসময়ের তরুন এই যোদ্ধা  ইকবাল-ঈ- আলম কামাল কোম্পানীতে সহযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম, আবুল হোসেন,আঃ কুদ্দুস ( শামসুল আলম) ও অনেকে সহ বেশ কয়েকটি রনাঙ্গণে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখে যুদ্ধে এবং সক্রিয়ভাবে ছিমখালী, বাঁশিয়া, বারইহাটিতে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মঞ্জুরুল আলমের সেকশনের ১১নং মেজর হামিদুল্লাহ খান কমান্ডারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ সমাপ্ত করে এবং দেশ স্বাধীনের পর কোম্পানি কমান্ডারের নিকট অস্ত্র জমা দেন। 

তৎকালীন বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর অধিনায়ক মুহাম্মদ আতাউল গনী ওসমানী ও আঞ্চলিক অধিনায়কের যৌথ স্বাক্ষরিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দেশ রক্ষা বিভাগ হতে স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র প্রাপ্ত হয়ে বৃদ্ধ মকবুল জন্মভূমি ছেড়ে স্ব-পরিবারে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নে এসে বসবাসরত রয়েছেন। দারিদ্র্যতার কারণে বৃদ্ধ বয়সেও দিনহাজিরার কাজ করা মকবুল হোসেন কান্না ভরা কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, দেশজুড়ে সকল মুক্তিযোদ্ধারের তালিকা প্রস্তুত ও যাছাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় রইলোও অজ্ঞাত কারণে সেই তালিকায় নিজের নাম না থাকায় হতবাক, 

হতাশা গ্রস্থ এই যোদ্ধা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিব কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান ও সহযোগীতা প্রদানের নানামুখী কার্যক্রমে আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, মৃত্যুর আগ মূহুর্তে হলেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নিজের নাম দেখে যেতে চাই এবং একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, একজন সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার সম্মান নিয়ে মরতে চাই। তাই ৭১’র রণাঙ্গনের  এই যোদ্ধা মকবুল হোসেনের  আকুতি, চাইনা অনুদান, চাই স্বীকৃতি!

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে, তার আহ্বানে সারা দিয়েন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় আমার নাম ওঠেনি। মরার আগে হলেও অন্তত মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় নিজের নামটা দেখতে চাই”। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ তার একটাই আবেদন, তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বিকৃতি দেয়া হোক। তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বিকৃতি পেয়ে মৃত্যুবরন করতে চান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ