অর্থ সংকটে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির সড়ক ও জনপথের কাজ

মোঃ সাদিক-উর রহমান শাহ্ (স্কলার) রংপুর ব্যুরোঃ
ভূমি অধিগ্রহন, অর্থ সংকট সংক্রান্ত জটিলতায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে নীলফামারী-ডোমার সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প(একনেকে)  নীলফামারী-ডোমার আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নীলফামারী চৌরঙ্গী মোড় থেকে ডোমার চিকনমাটি মোড় পর্যন্ত  জমি অধিগ্রহন করার কথা থাকলেও গাছবাড়ি থেকে চিকনমাটি পর্যন্ত বুঝে দেয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিয়মানুযায়ী জমি হুকুম দখলের কাজ অব্যাহত থাকে। চৌরঙ্গীমোড় থেকে গাছবাড়ি পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায়, গাছবাড়ি থেকে চিকনমাটি পর্যন্ত   ১১৮কোটি  টাকা ব্যয়ে নীলফামারী- ডোমার সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতীকরণ কাজ দ্রুত গতিতে চলছিল কিন্তু করোনা কালীন দুমাস বন্ধের পরে আবারও চালু হয় কাজ।

প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় শেষ অবধি কাজ থমকে যেতে পারে, শুধু মাত্র অর্থ সংকটের কারণে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে সড়ক বিভাগ ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান অয়স্টার কনস্ট্রাকশন।সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানান ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করে সড়ক বিভাগ। একই বছরের আগস্ট মাসে ঠিকাদারি দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

কাজ শুরু থেকে ঝামেলা পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অয়স্টার ও রানা বিল্ডার্স  (জেভি)। তারা সম্পূর্ণ জমি অধিগ্রহণ চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দায়সারাভাবে এড়িয়ে যায়। তারপরেও নীলফামারী গাছবাড়ি থেকে চিকনমাটি পর্যন্ত ৪০ ভাগ কাজ সমাপ্ত করে কিন্তু চৌরঙ্গী মোড় থেকে গাছবাড়ি পর্যন্ত কাজ করতে পারছেন না ঠিকাদার কারণ জমি খালি না থাকার জন্য। 

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এ্যাডভাইজার আদেল মাহমুদ জুয়েল, সাংবাদিকদের কে বলেন নীলফামারী থেকে ডোমার  সড়কের ১৯ কিলোমিটারের মধ্যে সাববেজ ১২ কিলোমিটার, বেস-২ প্রস্তুত ৪ কিলোমিটার, প্যালাসেটিং প্রস্তুত ৩ কিলোমিটার এবং ১২ টি কালভার্টের মধ্যে ১০টি প্রস্তুত  কাজ করেছি। গাছবাড়ি থেকে চিকনমাটি মোড় পর্যন্ত সড়কের কাজ এগিয়ে চললেও, চৌরঙ্গী থেকে শহরের গাছবাড়ি পর্যন্ত কোনো জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি আমাদের, 

তাই জায়গার অভাবে  কাজ করা সম্ভব হয়নি। সম্পূর্ণ কাজের চল্লিশ ভাগ কাজ করার পরেও কোন বীল উত্তলন করিনি, আমাদের বীল ৩০কোটি টাকা কিন্তু ফান্ড না থাকায় কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছি।

এবিষয়ে সড়ক ও জনপথের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী কামিনী কান্ত রায় বলেন, কাজের অগ্রগতি ভালো কিন্তু ফান্ড না থাকায় আমরাও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করতে পারছিনা আপাতত, উপরে জানান হয়েছে হয়তো খুব শীঘ্র ফান্ড আসতেও পারে। চৌরঙ্গী মোড়ের সুমন রহমান বলেন, জমির টাকা বুঝে পাইনি, হটাৎ করে কোথায় বাড়ি বানাবো। শাকামাছা বাজারের মদন কুন্ডু বলেন, বিল্ডিং ভাঙতে হবে, কিন্তু এখন অবধি কোন সারা পাইনি।

চৌরঙ্গী মোড় থেকে গাছবাড়িপর্যন্ত প্রতিনিয়ত  যানজট লেগেই থাকে। এই যানজটের কারণে প্রতিদিন বাস-ট্রাক, অটোরিক্সা, অটোবাইক ও মোটরসাইকেলের সাথে দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে স্বল্প পরিসরের সড়কগুলো দিয়ে পথচারীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মাদ মনজুরুল করিম জানান, কার্যাদেশ প্রদানের সময়সিমা প্রায় শেষ, করোনা কালীন  কাজ সন্তোষজনক।  ভূমি অধিগ্রহণ, গাছ কর্তন, বিদ্যুতের খুঁটি প্রতিস্থাপন কাজে ধীরগতির কারণে কাজ এবং ফান্ডের কারণে  নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে না পারলে নানা সমস্যায় পড়তে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ