টানা বৃষ্টিপাত ড্রেনেজে ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা নাকাল পঞ্চগড় পৌরবাসি


মোঃ কামরুল ইসলাম কামু পঞ্চগড়ঃ 
 

টানা র্বষণে ডুবছে পঞ্চগড় পৌরবাসি। গত তিনদিন ধরে অবিরাম বর্ষণে পঞ্চগড় এলাকায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।বৃহষ্পতিবার রাত থেকে আবার বৃষ্টি হয়েছে। সকালেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।মুরগীবাজার-মাছ বাজারে জলবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে পঞ্চগড় পৌরবাসীর চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কাজে আসছেনা পৌর এলাকার  ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। পৌরবাসীর অভিযোগ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নগরবাসী, তবে  দেখার কেউ  নেই।

পঞ্চগড় পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও নাগরিকরা প্রথম শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। বিশেষ করে এখানকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা এতটাই দুর্বল যে একটু বৃষ্টি হলে ড্রেনগুলো পানিভর্তি হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।

ড্রেনের ময়লা পানিতে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বর্ষাকালে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানিতে পৌরবাসী পড়েছে নানা সমস্যায়। এমনকি ড্রেনের পানি বসতবাড়িতে প্রবেশ করে গৃহিনীদের চরম ভোগান্তির কারণ হচ্ছে। ড্রেনগুলোর উপরে স্লাব (কভার) না থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

গতকাল বুধবার পৌর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ড্রেনগুলোর ওপর দিয়ে ময়লা পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেই ময়লা পানিগুলো বসতবাড়িতে প্রবেশ করছে। বাড়ির সামনে দরজাগুলো দিয়ে ময়লা পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়ছে মশার উপদ্রব।

এদিকে ড্রেনের ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে জেলা শহরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল চত্বরে, পৌর এলকার  মসজিদগুলোসহ এলএসডি গোডাউনে জলাবদ্ধতা হয়েছে। এতে করে এলএসডি গোডাউনের ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। পঞ্চগড় পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কামাতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাসনাত হামিদুর রহমান (৩৪) জানান, আমার এলাকায় পঞ্চগড় পৌরসভার দৃশ্যমান কোনও উন্নয়ন হয়নি।

মেয়রকে আমরা এলাকার জলাবদ্ধতার কথা বারবার জানিয়েছি। শুধুমাত্র আশ্বাস দেয় কিন্তু কাজ হয় না। অথচ অমরা প্রথম শ্রেণি পৌরসভার বাসিন্দা। পৌরবাসী ঠিকই বছরের পর বছর  প্রথম শ্রেণির কর দিচ্ছে।কিন্তু প্রথম শ্রেণির সুবিধা পাচ্ছেনা। ৩৪ বছর ধরে পঞ্চগড় পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমাধান হয়নি।

পৌর এলাকার মসজিদ পাড়া এলাকার বাসিন্দা রঞ্জন কুমার (৩৫) বলেন, গত কুড়ি বছর ধরে আমার বাড়ির সামনে ড্রেনগুলো কাজে আসছে না। প্রতি বছর বর্ষা এলেই অমাদের ময়লা পানির ওপর দিয়ে পথ চলতে হয়। পৌরসভাকে অনেকবার অভিযোগ করেছি কিন্তু ফল পাইনি। বর্ষাকাল যেন আমাদের জন্য অভিষাপ।

কামাত পাড়া এলাকার আসমা নামে গৃহিনী   বলেন, বৃষ্টি এলেই ড্রেনভর্তি হয়ে বাড়িতে ময়লা পানিতে প্রবেশ করছে। একাধিক মেয়রকে বলেছি ড্রেনগুলো সংস্কার করার কথা কিন্তু কোনও ফল পাইনি। আসলে আমাদের পৌর এলাকার নাগরিক হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। তা না হলে সরকার এত উন্নয়ন করছে কিন্তু ড্রেনগুলো আমাদের ঠিক হচ্ছে না।

নিমনগড় গ্রামের ছলেমান আলী (২৯) বলেন, আমাদের গ্রামের ড্রেনগুলোর অবস্থা নাজুক। সময়মত পরিষ্কার করা হয় না ড্রেনের ময়লা। এই এলাকার কাউন্সিলর তালেব হোসেনকে গত কয়েক বছর থেকে বলছি ড্রেনগুলো সংস্কার করার জন্য কিন্তু তার কোনও  উদ্যোগ নেই।  শুধু ভোটের সময় মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে কিন্তু কাজের বেলায় খোঁজ নেই।

পঞ্চগড় পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম নিজেও স্বীকার করেছেন ড্রেনের পানির কারণে জলাবদ্ধতার কথা তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে তিনি  বলেন, পৌরবাসীরা অসচেতন তারা এখনো বাড়ির ময়লা ঝাড়ু দিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়। প্রতিদিন আমাদের পরিষ্কারকর্মীরা ড্রেন পরিষ্কার করছে। বৃষ্টি হলে ড্রেনের ময়লা পানি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। 

আন্তরিকভাবে আমরা চেষ্টা করছি ড্রেনের ময়লা পানি নিয়ন্ত্রণ করতে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অথবা প্রকল্পের মাধ্যমে যদি বরাদ্দ পাই তাহলে আমরা ড্রেনগুলো ঢেকে দিতে পারি।এতে কিছুটা হলেও এই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা কাজ জনগনের সব কষ্ট বুঝি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ