লালমনিরহাটে জেলা প্রশাসকের সাথে ইউএনওদের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাটঃ  
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের সাথে জেলার পাঁচ উপজেলার ইউএনওদের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এতে বলা হয়, এই চুক্তি স্বাক্ষরকারী উভয়পক্ষ নিম্নলিখিত বিষয়সমূহে সম্মত হয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেন।

বৃহস্পতিবার ২৭ আগস্ট দুপুর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের সাথে জেলার পাঁচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সাথে বাৎসরিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে নিজ নিজ পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন। 

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহঃ রাশেদুল হক প্রধান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) টিএমএ মমিন, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) টিএম রাহসিন কবীর, সহকারী কমিশনার শাম্মী কায়সারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাৎসরিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র মতে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাস্তবায়ন করতে চান- সেবা প্রত্যাশীদের জন্য সুপেয় পানি ও শৌচাগার নির্মাণ, ৬৫লক্ষ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শতভাগ মিউটেশন কেস খতিয়ান হালকরণ, সরকারি সম্পত্তির হালনাগাদ ডাটাবেজ তৈরি, ৬০টি ভূমিহীন পরিবারকে পুর্ণবাসন, শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন ও লালমনিরহাট সদর উপজেলাকে মাদকমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা। 

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যুতের লোডশেডিং ও বাধাহীন ইন্টারনেট সংযোগের ঘাটতি এবং উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত কাজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে করতে চান-মাল্ডিমিডিয়া শ্রেণি পাঠদান নিশ্চিত করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বাঁশ উৎপাদন এলাকা হিসেবে এই খাতকে ব্যবহার করে বাঁশ ভিত্তিক শিল্প-কারখানা স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রহণ, গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করা, ফেসবুকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সমাধান এবং উপজেলা প্রশাসনকে জনবান্ধব-সেবামুখী হিসেবে গড়ে তোলা। 

একইভাবে কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বার্ষিক কর্মসম্পাদন করতে চান। জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান ও হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বলেন, ‘এটি নতুন অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হবে। আমরা যা কিছু করবো। তার একটি লিখিত বই করেছি। 

এতে জেলা প্রশাসক স্যার অনুমোদন দিয়েছেন। আমরাও চুক্তি সম্পাদন করেছি। এসব কর্মকান্ড এক বছর পর মূল্যায়নের ভিত্তিতে আমাদের পারফরম্যান্স রিপোর্ট তৈরি হবে।’


আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন দোলন ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘কাজের যেমন গতি বাড়বে তেমনি জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি এই বাৎসরিক কর্মসম্পাদন চুক্তি। বাৎসরিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র আমাদের জন্য নতুন হলেও পরবর্তী কর্মজীবনের জন্য কর্মপরিকল্পনায় অভিজ্ঞতা তৈরি হবে। আমরা সমৃদ্ধ হবো।’

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম কামরুন নাহার বলেন, ‘চুক্তি সম্পাদন করেছি। এই জেলায় নতুন যোগদান করেছি। এরপরও আশা করি আমি চুক্তিপত্র অনুযায়ী সকল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো। এতে আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বাৎসরিক পারফরম্যান্স নির্ণয়ের জন্য এই কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করা হলো। আগামী এক বছরে তারা কী কী কাজ করতে চান এবং বাস্তবায়ন করবেন। তা উল্লেখ করে নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন। 

এতে আমিও স্বাক্ষর করেছি। এক বছর পর তাদের সম্পাদিত চুক্তিমতে কর্মকান্ডের মূল্যায়ন করা হবে। সেটাই হবে তাদের ব্যক্তিগত সাফল্যের মাপকাঠি। এটি মন্ত্রী পরিষদ সচিব মহোদয়ের নির্দেশনার আলোকে করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ