কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামঃ
উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির পানির কারনে কুড়িগ্রামে অাবারও অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি। 

প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলগুলো। প্রথম দফা বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই আবারো বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দি মানুষজনের। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামের সবগুলি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

ফলে প্রথম দফা বন্যার কবলে পড়া বানভাসী মানুষজনের বন্যা অাশ্রয় কেন্দ্র বা নদী রক্ষা বাঁধ থেকে নিজ বাড়িতে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলি ঘর থেকে বের হতে না পারায় নানা রকম ভোগান্তিতে রয়েছেন। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যার্ত মানুষজন। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বড় ধরনের বন্যার অাশঙ্কায় দিন পার করছেন নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন।  

এদিকে জরুরী বৈঠক করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ শাহাবুল হোসাইন সাবুল জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ক্রমাগত পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্দি মানুষজন বড় ধরনের বন্যার অাশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার- অাবুল হোসেন, অাপেল মাহমুদ ও এরশাদুল জানান, অামাদের বাড়ির চারিদিকে বানের পানি। অামরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছিনা। জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে চাইলে নৌকা বা কলার গাছের ভেলায় চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। 

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ সরবেশ অালী জানান, অামার পুরো ইউনিয়ন পানিবন্দি। ইউনিয়নের এক দিকে উজানের ঢল ও অন্য প্রান্তে ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবেশ করছে। বন্যার্ত পুরো ইউনিয়নবাসী নানা ভোগান্তিতে রয়েছেন। বন্যায় অামার ইউনিয়নের ১ হাজার হেক্টর পাট,  ২০ হেক্টর জমির শাক সবজি সহ অামনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম জানান, ভিজিএফের চাউল ৪ লক্ষ ২৮ হাজার লোককে ১০ কেজি করে বিতরণ করা হয়েছে এদিকে ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারও বিতরণ হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ