নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের

মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি সামান্য কমলেও এখনও বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চল ও নিম্নঞ্চলের ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগ বেড়েই চেলেছে নৌকায় বসবাসকারী বন্যা কবলিত পরিবারগুলোর। 

এ অবস্থায় জেলার ৯ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার প্রায় আড়াই শতাধিক চরাঞ্চলের ২ লাখ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এসব মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। গবাদি পশুর খাবারের সংকটে পড়েছে বন্যা দুর্গতরা।


উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের মশালের চরের বাসিন্দা জমর উদ্দিন জানান, সবকিছুই পানিতে তলিয়ে আছে। ৩ সপ্তাহ ধরে নৌকায় পানির উপর ভাসছি। ঘরে খাবার নাই, নলকুপের পানিও নাই। সীমাহীন কষ্টে রয়েছি আমরা।

একই উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের দুদু মোল্ল্যা জানান, নিজেরা তো নৌকার উপর কষ্ট করে আছি। পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে কষ্ট বেড়েছে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে আমাদের। ত্রাণ তো নাই। দশ জনের মধ্যে একজনও পায় না। চিড়া মুড়ি এগুলো খেয়ে বেঁচে আছি।

২য় দফা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, উলিপুর, সদর ও নাগেশ্বরী উপজেলা। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলার ৯ উপজেলায় বন্যা কবলিতদের জন্য নতুন করে আরো ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এদিকে বন্যা কবলিত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, সরকারী ভাবে বন্যা দুর্গতদের মাঝে এ পর্যন্ত যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। প্রায় ২ লাখ বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৫ লাখ টাকা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশরী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার ও সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ