সৈয়দপুরে বিয়ের ৫ মাসেই শ্বশুর বাড়িতে লাশ হলেন নববধু

সুজন মহিনুল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বিয়ের মাত্র সাড়ে ৫ মাসে শ্বশুড়বাড়িতে লাশ হলো নববধু শম্পা রানী। রবিবার (৭জুন) স্বামী অনিবাশ চন্দ্র সরকারের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া থেকে ওই নববধুর লাশ উদ্ধার করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল। শম্পা দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা বাসুদেব পাড়া গ্রামের জোতিষ চন্দ্র দাসের মেয়ে। স্বামী অনিবাশ চন্দ্র সরকার কুড়িগ্রামে ব্র্যাকে কর্মরত। সে বাবা মায়ের পছন্দে শম্পাকে বিয়ে করলেও তার কর্মস্থলে স্ত্রীকে নিয়ে যায়নি। শম্পার শ্বশুড় সতিষ চন্দ্র সরকার জানান শনিবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে বাড়িতে আগুন লাগে। আগুনে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রাত আনুমানিক দেড়টার সময় পুত্রবধু শম্পা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হলে তার মৃত্যু হয়। এরপর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে শম্পার বাবা জোতিষ চন্দ্র দাস ও আত্বীয়স্বজনরা এসে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে অভিযোগ তুলে সৈয়দপুর থানায় খবর দেয়।

নিহত শম্পার বাবা জানান, মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে মেরে ফেলে বাড়িতে আগুন লাগার নাটক করেছেন। আমরা এ হত্যা-কান্ডের বিচার চাই । শম্পার মামা অভিজিৎ দাস মিঠু বলেন, বাড়িতে আগুন লাগার যে ঘটনা তারা উল্লেখ করছেন সেটা যে সাজানো তা আগুনে পোড়া ঘরের দৃশ্য দেখলেই বোঝা যায়। বলা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। কিন্তু তাতে ঘরের নিচের অংশে কোন কিছুুই পুুড়ে নাই। শুধুমাত্র উপরের চালের কাঠ ও টিন পুুড়ে গেছে। এমনকি ঘরের অন্যান্য জিনিস পত্র সামান্যতম ক্ষতিগ্রস্থও হয়নি। মুলতঃ তারা সন্ধ্যা রাতেই শম্পাকে র্নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে । পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে আগুনের নাটক করে। তারা মামলা না করার জন্য সালিশ বৈঠকের জন্য চাপ দিচ্ছে। অথচ বিয়ের সময় আমরা মেয়ের সুখের জন্য নগদ ৭ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা মূূল্যের স্বর্নালংকার ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র প্রদান করা হয় ছেলে পক্ষকে। এরপরেও আমাদের মেয়ের লাশ দেখতে হলো ! আমরা টাকার বিনিময়ে মিমাংসা নয়, এ্ই হত্যা-কান্ডের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।

সৈয়দপুর থানার ওসি আবুল হাসনাত খান বলেন, নিহত গৃহবধূর বাবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।রবিবার বিকেলে শম্পা রানীর মরদেহ লাশ জেলার মর্গে ময়না তদন্ত করা হয়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ