মো: জালাল উদ্দিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে লিচু বাগানগুলোতে পাকা, আধা-পাকা লিচুতে দুলছে কৃষকের মুখে হাসি। লিচু চাষিরা শতকোটি টাকার উপরে লিচু বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন। লিচুর রাজ্যে নামে খ্যাত গুরুদাসপুর উপজেলার লিচুর বাগানগুলোতে গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে আধাপাকা রসালো টসটসে ফল লিচু। ইতোমধ্যেই দেশি মোজাফফর জাতের লিচু ১৫শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা কানুমোল্লার বটতলা আড়তে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগেই বাজারে আসবে বোম্বাই ও চায়না জাতের লাল টসটসে রাসালো সুস্বাদু লিচু।
আবহাওয়ার অনুকলে থাকায় গুরুদাসপুরে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে লিচু চাষিরা বাজারে ভালো দাম পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন।
গুরুদাসপুরের রসালো লিচু ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে গুরুদাসপুর উপজেলায় এবার শত কোটি টাকার বেশি লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এ এলাকার লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা দিনরাত ধরে লিচুর শত্রু বাদুর আর কাঠবিড়ালি তাড়াতে টিনের তৈরি ঠংঠং শব্দ তৈরির রশি টানতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গুরুদাসপুর কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে এবার গুরুদাসপুরে ৪৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ করছেন কৃষকেরা।
লিচু আবাদ নিয়ে কথা বলতেই উপজেলার মামুদপুর, বেড়গঙ্গারামপুর, মোল্লাবাজার, বিন্যাবাড়ী, বিয়াঘাট, নাজিরপুর, নারীবাড়ি, পারগুরুদাসপুর, নারায়নপুরসহ প্রায় ২০টি গ্রামের কথা চলে আসে।
লিচু চাষি সাইফুল ইসলাম মহরী জানান, গুরুদাসপুরে বোম্বাই, চায়না-৩, মোজাফফরসহ দেশি জাতের লিচু আবাদ বেশি হয়। দেশি জাতের লিচু আকারে ছোট। তিনি আরও জানান, তাদের বাগানের সবগুলো গাছেই বোম্বাই ও চায়না-৩ জাতের লিচু। লিচু পাকতে আর ১ সপ্তাহ সময় লাগবে। রমজান মাসে লিচু পাকা পুরোপুরি শুরু হয়ে যাবে। লিচু আড়তদার আসাদ মোল্লা জানান, আমাদের এলাবার মাটি লিচু চাষের জন্য খবই উপযোগী। লিচু এখন গুরুদাসপুর উপজেলার একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে কম খরচে এবং কম পরিশ্রমে লিচু চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, আবহাওয়ায় অনুকলে থাকায় এবছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। শেষ সময়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে চাষিরা লাভবান হবেন।
0 মন্তব্যসমূহ