সৈয়দপুরে র‌্যাবের অভিযানে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ উদ্ধার, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ফ্যাক্টরী মালিকের কারাদন্ড

মিজানুর রহমান মিলন স্টাফ রিপোর্টারঃ সৈয়দপুরে র‌্যাব ১৩ রংপুর ও র‌্যাব ১৪ ময়মনসিংহের যৌথ অভিযানে একটি ইউনানী ওষুধ ফ্যাক্টরী থেকে বিপুল পরিমাণ খোলা ট্যাবলেট ও ওই ফ্যাক্টরী মালিকের ভাড়া বাসা থেকে নকল প্যান্টোনেক্স ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। এসময় সেখানে ভ্রাম্যমাণ অাদালত বসিয়ে নকল ওষুধ সংরক্ষনের দায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ওই ফ্যাক্টরী মালিকের এক বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও একমাসের কারদন্ড দেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের নিয়ামতপুর বাস টার্মিনাল এলাকার মাহবুবা প্লাজার মেসার্স রেক্সটন ল্যাবরোটেরিজ (ইউনানি) নামক ওই ফ্যাক্টরীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতিতে কয়েক লাখ টাকা মূল্যের নকল ওইসব ওষুধ আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। র‌্যাব ১৩ রংপুর ও র‌্যাব ১৪ ময়মনসিংহের সুত্র জানায়, ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় নকল ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। 
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যার ১৪ ময়মনসিংহের সদস্যরা সম্প্রতি ওই এলাকার এক ব্যবসায়ীকে আটক করেন।  পরে তাঁর দেয়া তথ্যে আরও দুজনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্য থেকে একজনের তথ্যে তারা জানতে পারে ওইসব নকল ওষুধ সৈয়দপুরের র‌েক্সটব ল্যাবরোটরীজ থেকে কেনা হয়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে নকল ওষুধ উদ্ধার এবং এরসাথে জড়িতদের ধরতে র‌্যার ১৪-ময়মনসিংহের উপ অধিনায়ক মেজর আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান ও র‌্যাব ১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার হাফিজুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয় সৈয়দপুরে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সোর্সের দেয়া সংবাদে রেক্সটন ল্যাবরোটরীজের (ইউনানি) মালিক মো. আতিয়ার রহমানের শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের বহুতল ভবনের ভাড়া বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।  এসময় ওইবাসা থেকে কয়েক লাখ টাকা মূল্যের ৪ কার্টুন নকল প্যানটোনেক্স ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে শহরের নিয়ামতপুর বাস টার্মিনাল এলাকার মাহমুদা প্লাজায় অবস্থিত ওই ইউনানি ফ্যাক্টরীতে অভিযান চালিয়ে দুই ড্রাম লুজ (খোলা) ট্যাবলেট উদ্ধার করে র‌্যাবের অাভিযানিক দল। এসময় উদ্ধার করা ওষুধের কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় রেক্সটন ল্যাবরোটরীজের (ইউনানি) মালিক মো৷ আতিয়ার রহমানকে (৪৭) আটক করা হয়। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নকল ওষুধ সংরক্ষণ এবং এর স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ফ্যাক্টরী মালিক আতিয়ার রহমানকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদন্ডের রায় দেন আদালত। আদালতের এ রায় ঘোষণা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার। এসময় উদ্ধার করা কয়েক লাখ টাকা মূল্যের নকল ওষুধ আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আতিয়ার রহমান তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করলেও এক বছরের দন্ডপ্রাপ্ত হওয়ায়
তাকে নীলফামারী জেল হাজতে পাঠানো হয়। 
র‌্যাবের এ অভিযানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১৩ রংপুর সিপিসি -২ নীলফামারী ক্যাম্প কমান্ডার  সিহিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ,র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহের সহকারি পুলিশ সুপার তফিকুল আলম,  উপ-পরিদর্শক মো. ফিরোজসহ র‌্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃূন্দ। অভিঢ়োগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ইউনানি ওষুধ তৈরির অনুমোদন নিয়ে ফ্যাক্টরী মালিক আতিয়ার রহমান নকল ওষুধের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। র‌্যাব জানায়,নকল ওষুধ গ্রামাঞ্চলের হাট বাজারে সয়লাব হয়ে পড়ায় নকল ওষুধ তৈরী এবং বাজারজাত করা চক্রের সদস্যদের ধরতে সোর্স নিয়োগ করা হয়। পরে সাধারণ ভোক্তা, ফার্মেসী ব্যবসায়ী হয়ে মূল হোতাকে ধরতে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ