লবণের ন্যায্য মূল্যের দাবীতে কক্সবাজারের পোকখালীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

বামে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কাইসারুল হক জুয়েল, ডানে সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এ্যাড রফিকুল ইসলাম।
সাখাওয়াত হোসাইনঃ
লবণ শিল্প দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ শিল্পকে ধ্বংস করতে নেমেছে কিছু অসাধু লবণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ফলে লাগামহীনভাবে লবণের দাম কমে যাওয়ায় খুবই ক্ষতিগ্রস্থের শিকার প্রান্তিক লবণ চাষীরা। বিভিন্ন লবণের মোকামে লবণ মজুদ থাকার পরও বিদেশ থেকে লবণ আমদানী সহ নানা কারণে দিন দিন মূল্য কমে যাচ্ছে লবণের। এতে লবণ চাষীরা বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায্য মূল্য থেকে এবং ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নেমেছে দেশীয় লবণ বিক্রি। এই নিয়ে  কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী জনপদের প্রান্তিক চাষিরা লবণের ন্যায্য মূল্যের দাবীতে শত শত চাষি নিয়ে মানববন্ধন সহ সমাবেশ করেছে। শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে সদর উপজেলার পোকখালী পশ্চিম গোমাতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে কক্সবাজার সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এ্যাড রফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে প্রান্তিক চাষিরাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন ও সমাবেশে।

এ মানবন্ধনে এ্যাড রফিকুল ইসলাম বলেন, লবণ বাংলাদেশের এমন এক সম্পদ যার জন্য অন্যকোন দেশের উপর নির্ভর করতে হয় না। প্রতি বছর লবণের উৎপাদন সরকারের চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লবণ উদ্বৃত আছে। কিন্তু কিছু লোভী মিল মালিক, অসাধু ব্যবসায়ী ও ষড়যন্ত্রকারীরা লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে শিল্প লবণ আমদানীর অজুহাতে সোডিয়াম সালফেট, সোডিয়াম ক্লোরাইড আমদানী করে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, শীঘ্রই চাষীরা লবণের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা না করা হলে ট্রাকভর্তি লবণ নিয়ে পুনরায় মানবন্ধন করা হবে।

পরে সমাবেশে লবণের ন্যায্য মূল্যের দাবী নিয়ে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কাইসারুল হক জুয়েল, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান, পোকখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহের আহম্মদ, পোকখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিক আহম্মদ, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক, পোকখালী ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মাহমুদুল হক।

এ সময় বক্তরা বলেন, দেশের কিছু অসাধু লবণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এর অপতৎপরতার কারণে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক চাষিরা। বর্তমানে জেলায় হাজার হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনের কাজে নিয়জিত রয়েছে অসংখ্য প্রান্তিক চাষি। বিগত সময়ের বিপুল পরিমাণ লবণ মজুদ থাকায় এবং চলতি সময়েও লবণ উৎপাদন অব্যহত থাকায় বর্তমানে দেশে লবণের কোন প্রকার ঘাটতি নেই। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে চাষিরা যতাযত ভাবে লবণ উৎপাদন করে আসলেও লবণের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না চাষিরা। লবণের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করার দাবিতে এ মানববন্ধন। 

তারা আরও বলেন, মাঠ পার্যায়ে এক মন লবণ উৎপাদন করতে ব্যয় হচ্ছে ৩শত থেকে ৪শত টাকা। সে লবণ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। অথচ এক মাস আগেও প্রতি মণ লবণ বিক্রি হয়েছে ৫শত থেকে ৬শত টাকায়। এখন লাভের আশা তো দুরের, উল্টো গুনতে হচ্ছে লোকসান। মানববন্ধন থেকে নেতৃবৃন্দরা দ্রুত সময়ে লবণের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ