কক্সবাজারে নব্য কোটিপতি আমির খাঁনের অজানা রহস্য, পর্ব-১

কক্সবাজারে নব্য কোটিপতি আমির খাঁনের অজানা রহস্য, পর্ব-১

মো. আমির প্রঃ আমির খাঁন, বয়স ২৩ বছর। কক্সবাজার পৌর এলাকার ১০ নং ওয়ার্ডের মোহাজের পাড়া এলাকায় থাকেন। ওই এলাকার দিদারের ছেলে তিনি। এই অল্প বয়সে আমির কোটি টাকার ছোঁয়া পেয়েছে। দেড় বছরের ব্যবধানে ২৪ লাখ টাকা দামের নোহা গাড়ি ক্রয়, নিত্য নতুন বাইক ব্যবহার, কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বড় রেস্তোরা, বাহারছড়া বাজারে বড় মাছের গুদাম, মাছ বিক্রির বড় জায়গায় ও ফিশারী ঘাটে মাছের অফিসের মালিক হয়েছে। গত এক বছরেই মোহাজের পাড়ায় তৈরি করেছে পাকা ঘরও। দেড় মাস আগে ছোট বোনের বিয়ে দেন ঝাঁকজমাকভাবে। জনশ্রুতি রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করে ছোট বোনের বিয়ে দেন তিনি। হঠাৎ আমিরের আলিশান জীবন যাপন তার নিজ এলাকায় তোলপাড় তৈরি হয়েছে। এতো সম্পদের মালিক ও নামিদামি গাড়ি ব্যবহারে চলছে আলোচনা ও সমালোচনাও। নিজ ব্যবসার এলাকা বাহারছড়া বাজারেও পুরাতন মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে আমির নিয়ে ভিন্ন কথা। হঠাৎ তার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের রহস্য কি।
কোটিপতি আমির খাঁন। ফেসবুক থেকে

ডেস্ক নিউজঃ
মো. আমির প্রঃ আমির খাঁন, বয়স ২৩ বছর। কক্সবাজার পৌর এলাকার ১০ নং ওয়ার্ডের মোহাজের পাড়া এলাকায় থাকেন। ওই এলাকার দিদারের ছেলে তিনি। এই অল্প বয়সে আমির কোটি টাকার ছোঁয়া পেয়েছে। দেড় বছরের ব্যবধানে ২৪ লাখ টাকা দামের নোহা গাড়ি ক্রয়, নিত্য নতুন বাইক ব্যবহার, কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বড় রেস্তোরা, বাহারছড়া বাজারে বড় মাছের গুদাম, মাছ বিক্রির বড় জায়গায় ও ফিশারী ঘাটে মাছের অফিসের মালিক হয়েছে। গত এক বছরেই মোহাজের পাড়ায় তৈরি করেছে পাকা ঘরও। দেড় মাস আগে ছোট বোনের বিয়ে দেন ঝাঁকজমাকভাবে। জনশ্রুতি রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করে ছোট বোনের বিয়ে দেন তিনি। হঠাৎ আমিরের আলিশান জীবন যাপন তার নিজ এলাকায় তোলপাড় তৈরি হয়েছে। এতো সম্পদের মালিক ও নামিদামি গাড়ি ব্যবহারে চলছে আলোচনা ও সমালোচনাও। নিজ ব্যবসার এলাকা বাহারছড়া বাজারেও পুরাতন মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে আমির নিয়ে ভিন্ন কথা। হঠাৎ তার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের রহস্য কি।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে; তিন বছর আগে মো. আমিরের পিতা দিদারকে এলাকার লোকজন মারধর করেছিল পাওনা টাকা না দেয়ার জন্য। এলাকায় অনেক দেনা ছিল দিদারের। অভাবের সংসার ছিল তাদের। পাহাড়ের উপর একটু ছোট জায়গায় ঝুঁপড়িতে ছিল বসবাস। গেল দুই বছর আগে শহরের বাহারছড়ায় মাছ বাজারে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বরফ ভাঙার কাজ করত দিদারের ছেলে মো. আমির। প্রায় ৫ মাছ বরফ ভাঙার কাজে জড়িত ছিল সে। এরপর সেখানে ছোটখাটো মাছের ব্যবসা চালিয়ে যায়। মাছের ব্যবসায় হাত দেয়ার পর পিছনে তাকাতে হয়নি আমিরের। যোগ হন ফিশারী ঘাটে মাছের ব্যবসায়। যে ফিশারীঘাট থেকে দৈনিক ১০ থেকে ২০টি মতো ট্রাক মাছ নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় রওনা দেন। গত এক বছর ধরেই মো. আমিরের নেতৃত্বে প্রতিদিন মাছ নিয়ে ফিশারীঘাট থেকে ট্রাক রওনা হয় ঢাকায়। সেই ট্রাকে কৌশলে নিয়ে যাওয়া হয় ইয়াবা ট্যাবলেট। এমন তথ্য একটি নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে। আমিরের এক বছরে বদলে যাওয়া গল্পটি ছিল মাদকের উৎস থেকেই। মাছের গাড়ি করে ইয়াবা পাচার করেই আমির আজ কোটিপতি।

এছাড়া আমিরের দুই সহযোগি ২৫ জানুয়ারি ট্রাকযোগ মাছের গাড়িতে করে ইয়াবা পাচারের সময় সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হাতে আটক হন। তারা হলো; কক্সবাজার পৌর এলাকার বৈদ্যঘোনার মৃত কবির আহম্মেদের ছেলে খোরশেদ আলম (৩৫) ও লিংকরোড বিসিক দক্ষিণ মহুরীপাড়ার মৃত আবুল বশরের ছেলে রেজাউল করিম (২৪)। এরমধ্যে খোরশেদ আলমের সাথে বাহারছড়া বাজারে সরাসরি ব্যবসায়ীক পাটর্নার ছিল আমির। আর পাচারের কাজ করত রেজাউল করিম। খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় রয়েছে মাদকের মামলাও। তারা দুইজন আটকের পর আমিরের বিষয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়। একের পর এক বের হয় অল্প বয়সে আমিরের আলিশান জীবন যাপনের রহস্যও।

অন্যদিকে আমিরের আরো দুইজন সহযোগি রয়েছে, তারা হলো রোহিঙ্গা কবির ও কালুর ছেলে মনির। তাদের দুইজনের বাড়িও আমিরের বাসার পাশে। গত নয় মাস আগে টেকনাফ থেকে ট্রাকযোগ মাছ নিয়ে আসার সময় টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের মরিচ্যা চেক পোস্টে কবির ও মনির ইয়াবাসহ আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় আমির ও তার বাবা দিদার গিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কৌশলে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। এমনকি সাত মাস আগেও আমিরের এলাকা মোহাজের পাড়ায় একটি সিএনজি টেক্সী থেকে প্রায় ৬ হাজার ইয়াবা লুট হয়। কয়েকজন ব্যবসায়ী এসব ইয়াবা নিয়ে আমিরের কাছে এসেছিল বলে এলাকার সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, এতো অল্প বয়সে হঠাৎ করে এতো টাকার মালিক ইয়াবা ব্যবসা ছাড়া কোনোভাবে সম্ভব নয়। সবার জানে তাদের অভাবের সংসারের বিষয়ে। মাছ বিক্রি করে কয়জনে চলতে পারছে ভালো মতো। পুরাতন অনেক মাছ ব্যবসায়ীর এখনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু দেড় বছরে এতো সম্পতির মালিক কিভাবে হয়। তাদের চলাফেরাও আলিশান। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে চাকরি করা রোহিঙ্গা কবির ও মনিরও এখনো লাখ লাখ টাকা পকেটে নিয়ে ঘুরে এলাকা। যদি প্রশাসন সঠিক অনুসন্ধান করতে পারে তাহলে তাদের আসল ব্যবসা বের হয়ে আসবে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আমির বলেন, আমি কোনো ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। মাছ বিক্রি করে আমি এসব সম্পতি করেছি। খোরশেদ আলম ইয়াবাসহ আটক হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। একসময় সে আমার সাথে মাছের ব্যবসা করত। করিব ও কালু আমার কাছে চাকরি করে। তারা ইয়াবা ব্যবসা করে না।

এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, অনেক ইয়াবা কারবারি রয়েছে; যাদের নামে কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। মামলা বা অভিযোগ না থাকলেও অনেকেই ইয়াবা ব্যবসা ও পাচারের সাথে জড়িত রয়েছে; এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তাছাড়া অল্প বয়সে একটি ছেলে কয় টাকার মালিক বা সম্পতির মালিক হতে পারে তা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। এতো আয়ের সোর্স কি। কোনো মাদক কারবারিকে পুলিশ ছাড় দিচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি সিন্ডিকেট প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে মাছের ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা পাচার করছে বলে তথ্য রয়েছে। পুলিশ এসব বিষয়ে কাজ করছে। আমিরের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। অল্প সময়ে এত কিছু কিভাবে সম্ভব তাও বের করা হবে। /দৈনিক পূর্বকোণ।
(শীঘ্রই আসিতেছে ২য় পর্ব, চোখ রাখুন 'পরিকল্পিত বার্তা'য়) ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ