পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা প্রতিবাদে চট্টগ্রামে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ


গাজী গোফরান, চট্টগ্রাম: রাঙ্গামাটির কাপ্তাই রাইখালী ইউনিয়নে ৬ জন সাদা পোশাকধারী সেনা সদস্য কর্তৃক এক পাহাড়ি কিশোরীকে গণধর্ষণ ও রামগড় পতাছড়ায় বাগান মালিক রহমত উল্লাহ কর্তক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
 
নগর পিসিপি সম্পাদক অমিত চাকমার সঞ্চালনায় ও যুব ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শুভ চাকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুদেব চাকমা,এছাড়াও সংহতি বক্তব্য রাখেন গনতান্ত্রিক ছাত্র জোট চট্টগ্রাম অঞ্চলের পক্ষে আবিদ ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জয় রায়।এছাড়াও উপস্থিত থেকে সংহতি জানিয়েছেন ছাত্র ফেডারেশন এর নগর সভাপতি সাইফুর রুদ্র ও ছাত্র ইউনিয়ন নগর আহ্বায়ক জুয়েল শীল।
সমাবেশে বক্তারা কাপ্তাইয়ে সেনাসদস্য কর্তৃক মারমা কিশোরীকে গণধর্ষণ ও রামগড়ে বাগান মালিক কর্তৃক এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।বক্তারা অবিলম্বে কাপ্তাইয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে গণধর্ষণের সাথে জড়িত সেনা সদস্যদের অবিলম্বে শাস্তি প্রদান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অপারেশন উত্তরনের নামে সেনাশাসন প্রত্যাহারের দাবি জানান,একই সাথে রামগড়ের ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে শাস্তির জোর দাবি জানান।
সমাবেশে সুদেব চাকমা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণ নতুন কোন ঘটনা নয়।কল্পনা চাকমাকে সেনাবাহিনী অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া সহ ২০১৮ সালে বিলাইছড়িতে অভিযানের নামে ধর্ষণের মতন নারকীয় কর্মকান্ড চালাচ্ছে। তিনি ২০০৮ সালে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের যে প্রতিরোধ তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

গনতান্ত্রিক ছাত্র জোট এর আবিদ ইসলাম, সেনাবাহিনী পাহাড়ে জাতিগত নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে।এদেশের শাসকগোষ্ঠী পাহাড়ে গণবিরোধী কার্যক্রম জারি রেখেছে।

জয়রায় তার বক্তব্য রাষ্ট্রীয় মদদে ধর্ষণ সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কার্যক্রম জারি রেখেছে বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়াও রিতা বলেন,সেনাবাহিনীর জন্য পাহাড়ি নারী নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক কুমিল্লায় তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে,কল্পনা অপহরণ, বিলাইছড়িতে নারী ধর্ষণের মতন পৈশাচিক ঘটনা সংগঠিত হলেও ধর্ষকদের শাস্তি দেওয়া হয় না।যার ফলে পাহাড় ও সমতলে নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শাসকগোষ্ঠীর ছত্রাছায়ায় বিচারহীনতার জন্য এই ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি অবিলম্বে ধর্ষকদের যথাযথ শাস্তি দাবি জানান।

উল্লেখ্য গত ৩রা সেপ্টেম্বর কাপ্তাইয়ের রাইখালি ইউনিয়নের মিতিঙাছড়ি ক্যাম্প থেকে ৬ জন সেনাসদস্য কর্তৃক মিতুঙাছড়ি গ্রামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করে এবং পরে ভুক্তভোগীর পরিবার ও গ্রামের কার্বারিকে এ ঘটনা প্রচারে বাধা দেয়।এবং ঘটনা প্রচারিত হলে তাদেরকে কঠিন অবস্থা ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেন।এছাড়াও রামগড়ের পতাছড়ায় বাগানে কাজ করতে গেলে স্বামীকে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়াইয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা করে বাগান মালিক রহমত উল্লাহ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ