অবৈধ বালু উত্তোলন থেমে নেই ঘটনার নেপথ্যে কারা, তদন্তে কি বেরিয়ে আসে এবার দেখার পালা

শফিকুল ইসলামঃ কক্সবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু কুচক্রি মহল। এর পেছনে রয়েছে আরো একটি ভয়ংকর শক্তি সিন্ডিকেট। এদের হাত অনেক গভীরে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ১১সেপ্টেম্বর রোববার বিকালের দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কাইছার হামিদের নেতৃত্বে বালু উত্তোলনের মহোৎসব সরজমিনে গিয়ে দেখে আসেন। অপর দিকে কক্সবাজার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বালু কেখোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কথা ওঠে আসে। প্রতিবেদকের বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহিন ইমরান বলেন, সরকারি স্পদ কাউকে অপব্যবহার করতে দেয়া হবে না, অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলনকারী যে হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরজমিনে দেখা যায়, বাঁকখালীর নদী,খুরুশকুল ব্রীজের দু পাশে এবং বাংলা বাজার,দরগাহ পাড়া,ঝিলংজা, খরুরিয়া বাঁকখালী নদীর বি?ভিন্ন স্থানে,নদীর মহোনা নাজিরারটেক,চৌফলদন্ডী রাখাইন পাড়াস্থ বেরিবাঁধ,পশ্চিম পোকখালী সুইস গেইট, তেঁতিয়া খাল, ছনখোলা মাঝের পাড়াসহ এইসব এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদারসে বালু উত্তোলন করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দেখেও অনেকটা না দেখার ভান করে আছে। এই বিষয়ে দৈনিক কক্সবাজার ৭১ একাত্তর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর স্বপ্রণোদিত হয়ে বালু খেখোদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ মামলা করলে পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন মহল সাধুবাদ জানান। এদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কাইছার হামিদ জানান, দৈনিক কক্সবাজার ৭১ পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, প্রশাসন নিরব! শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রতিবেদনটি ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৯০ (১) (সি) ধারায় আমলে নেয়ার ক্ষমতা প্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আমলে নিয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাবেদ আখতার একটি মামলা দায়ের করেন। ওই প্রতিবেদনে বর্ণিত ঘটনা পর্যালোচনায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ৪ ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে মর্মে সন্দেহের কারণ রয়েছে যা তদন্ত হওয়া একান্ত প্রয়োজন মনে করছেন তিনি। উপর্যুক্ত অপরাধসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে আরো কার কার দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে তাদের বিস্তারিত নাম, ঠিকানা দৈনিক কক্সবাজার ৭১ পত্রিকার প্রতিবেদনে সুষ্পষ্ট নয়। সাক্ষীদের নাম, ঠিকানাও প্রতিবেদনে নাই সুতরাং অপরাধটি কাদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে তা প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিরুপন করা প্রয়োজন এবং তদন্তের মাধ্যমে আসামীদের সনাক্ত করা প্রয়োজন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে আসামীদের সনাক্তকরণ, সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র প্রস্তুত, ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট আলামত, পাইপ, ভলগেট, ড্রেজার মেশিন, ড্রামট্রাক তাৎক্ষনিক জব্দ করবেন এবং সরকারী নদী থেকে কত ঘনফুট বালু তোলা হয়েছে এবং কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করার নিদর্শনা দেন। দৈনিক কক্সবাজার ৭১ পত্রিকার প্রতিবেদক আব্দুল আলীম নোবেলসহ প্রয়োজনীয় আরো সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্য বলেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন । ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণসহ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তদন্তকাজে সার্বিক সহায়তা প্রদান করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদর কক্সবাজারকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদেশের অনুলিপি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কক্সবাজার এবং জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার বরাবর প্রেরণ করেন। বালু কেখোদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর খবর পেয়ে অনেকই গা ঢাকা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে বালু উত্তোলন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে আরো সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু উত্তোলনের সময় বেশ কিছু অপচিরিত লোকজনের উপস্থিত চোখে পড়ার মতো এমনকি অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে হাতে দেখা যায়। এই বালু কেখো সিন্ডিকেট এরা কাউকেই পাত্তা দেয় না। এলাকার সচেতন মহল দাবি করছেন এসব সরকারি সম্পদ উত্তোলন বন্ধ না করলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ