কক্সবাজার বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের আড়ালে কৃষকের আর্তনাদ! যেন দেখার কেউ নেই

আব্দুল আলীম নোবেল:
কক্সবাজার বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের আড়ালে কৃষকের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। ইউএস-ডিকে গ্রীন এনার্জি লিমিটেড তত্ত্বাবধানে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২২ টি ইউন্ড টারবাইন তৈরির কাজ চলছে। কাজ চলমান থাকলেও স্থানীয় কৃষকের জমি ক্রয় না করে জোর কে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে এই কোম্পানির বিরুদ্ধে।. ইউ-এসডিকে গ্রিন এনার্জি (বিডি) লিমিটেড প্ল্যান্টটির উন্নয়নে ১১৬.৫১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ধরা হলেও জমি ক্রয়ে তারা নানা চালচাতুরী আশ্রয় নিয়ে চাষিজমি নষ্টসহ কৃষকের অধিকার হরণের বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের উপর বালির বাঁধ, ধানি জমিতে লবণ পানি ঢুকিয়ে একটি বিব্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এই নিয়ে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক কক্সবাজার ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, ইউএস-ডিকে গ্রীন এনার্জি লিমিটেড কক্সবাজার সদর উপজেলাধিন, ঝিলিংজা মৌজা, চৌফলন্ডী মৌজা ও তেতৈয়া মৌজার বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি টারবাইনের জন্য ২০ শতক করে ২২ টি উইন্ড টারবাইনের জন্য ৪৪০ শতক জমি ক্রয় করে। তবে এইসব কাজ বাস্তবায়নের জন্য রাস্তা ক্রয় না করায় কাজ করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। যেমনটি একটি টান্সমিশন টাওয়ার থেকে অন্যটির দুরত্ব বেশ খানিকটা, তার মাঝখানের জমি কোম্পানি ক্রয় না করে অপর জনের মালিকানাধিন ধানি জমির উপর দিয়ে কাজ বাস্তবায়নের জন্য রাস্তা তৈরি করায় ক্ষিপ্তহন স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষকগণ, কারণ তাদের জমিতে বালি,কংকর, লবণ পানি ঢুকে চরমভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তপশীল বর্ণিত জমির অধিগ্রহণ ব্যতিত বেআইনিভাবে জবর দখল করে ৩ ফসলী জমি ভরাট পূর্বক রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জোর দাবী তুলেছেন তারা। এই বিষয়ে, ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের আসে পাশের বেশ কিছু জমির স্বত্ত্বদখলকার ও মালিক তিনি। তবে তপশীলোক্ত জমি ক্রয়ের পর হতে নিয়মিত সন সন খাজনাদি পরিশোধ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ দখলে রয়েছি। ৩ ফসলী জমি হিসেবে মৌসুম ভিত্তিক চাষাবাদ করে আসছি। এদিকে, ইউএস-ডিকে গ্রীন এনার্জি লিমিটেড জমি আইনগত প্রক্রিয়ায় অধিগ্রহন পূর্বক বৈদ্যুতিক টারবাইন স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই বৈদ্যুতিক টারবাইন স্থাপনের লক্ষ্যে যাতায়াত সুবিধার জন্য ঠিকাদারের মাধ্যমে রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়। ওই রাস্তা নির্মাণকালে অধিগ্রহণ ব্যতিত আমার ৩ ফসলী জমির উপর দিয়া বেআইনীভাবে স্থানীয় শাহাজাহান মিয়া, শাহাজাহান, বর্তমান ইউপি মেম্বার, ও কক্সবাজার মধ্যম বাহারছড়ার বাসিন্দা ল্যান্ড নেগুশিয়েশন কর্মকর্তা, মোঃ এনাম, ইউএস-ডিকে গ্রীন এনার্জি লিমিটেডের প্রকল্প কর্মকর্তা, মো: আমির হোসেনসহ প্রকল্প পরিচালক পার্শ্বোক্ত ব্যক্তিগণ গায়ের জোরে সন্ত্রাসী কায়দায় রাস্তা নির্মাণ শুরু করে। বেআইনীভাবে রাস্তা নির্মাণ কাজ না করার জন্য অনুরোধ করিলে এই ব্যক্তিগণ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক টা সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার চেষ্টা করে। এইসব কাজ বন্ধ না করলে আমার অপূরণীয় ক্ষতি হবে এমটি দাবি করেন তিনি। এছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কক্সবাজার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর, কক্সবাজার, , সিইও, র‍্যাব-১৫, কক্সবাজার, চেয়ারম্যান, চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ বরাবরে অনুলিপি দেন। অপর দিকে স্থানীয় আরেক ভুক্তভোগী কৃষক জাকারিয়া, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহও একই সমস্যার কথা দাবি করেন তারা। এই বিষয়ে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আমিও শুনেছি এই ধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে তবে আমার কাছে কোন ভুক্তভোগী লিখিত আবেদন না করায় ভুক্তভোগীদের সহযোগী করতে পারিনি। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিচালক, ফরিদ আহমেদ বলেন, বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের লোকজন আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে কাজ করার জন্য। স্থানীয় ভুমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার জানান,ছৌফলদন্ডীতে ৫টি ট্রান্সমিশন টাওয়ার পড়েছে তার মধ্যে একটি সৃজিত খতিয়ানের কাগজ হাতে এসেছে, আর কোন জমির কাজ হাতে আসেনি, তবে আরো বি়ভিন্ন দাগে ৬৫ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য তালাসি করে প্রস্তাব করেছে। এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহিদ ইকবাল বলেন, কেউ লিখিত আবেদন করছের কি না বিষয়টি এই মুহূর্তে জ্ঞাত নয় তবে দেখে বিস্তারিত জানাবো। লেন্ড নেগসিয়েশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনাম জানান, ওই এলাকার মানুষ অনেক কষ্ট দিয়েছে, রাস্তা তৈরির করার সময় কিছু লোকজনকে টাকা দিয়েছি সবাইতো টাকা দাবি করলে দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও(চৌফলদন্ডী) সালমান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের উপর তারা অনুমতি ছাড়া বালি ফেলছে, আমরা বাঁধা দেওয়ার পরেও বালি ফেলেই চলছে। এদিকে, শাহজান মিয়া ও ইউপি সদস্যের কাছে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ