নির্বিচারে ধ্বংস হচ্ছে বন ও পাহাড় নিরব পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ (সাব সাইটেল)
আবদুল আলীম নোবেল: কিছু অসাধু পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ধ্বংস হচ্ছে বন ও পাহাড়। এর সাথে অভিযোগের তীর হাই ও পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের দিকে। সড়কের আপদ নামধারী ডাম্পারের রেজিস্ট্রেশন, রোড পারমিট ইন্সুরেন্সসহ কোন ধরনের বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে বছরের-পর-বছর কিছু কিছু পুলিশের টোকেন বাণিজ্যে রাস্তার রাজার হালতে চলে এইসব ডাম্পার এমন অভিযোগ অনেকের।
বাংলাদেশ রোড টান্সপোর্ট অথরিটি(বিআরটিএ)কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন
কক্সবাজারে এই পর্যন্ত মাত্র ১২১ টি ডাম্পার রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় রয়েছে। রাস্তায় বেশ কয়েক হাজার অবৈব ডাম্পার রয়েছে। সম্প্রতি আরটিএ'র সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে এইসব অবৈধ ডাম্পার গুলো আইনের আওতায় আনতে দ্রুত কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সড়কে মোটরযান চলানোর ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কাগজপত্র সাথে রাখার নিয়ম রয়েছে যেমন চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটরযানের নিবন্ধন সনদ ( ব্লুবুক) হালনাগাদ ট্যাক্সটোকেন, হালনাগাদ ফিটনেস সনদ,মোটরসাইকেল ব্যতিত সকলের, হালনাগাদ রুট পারমিট, বাণিজ্যিক মোটরযানের ক্ষেত্রে।
সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ি মাটি, কাঠ ও কৃষি জমির টপ সয়েল কাটার পেছনে নির্বিঘ্নে ব্যবহার হচ্ছে এসব অবৈধ ডাম্পার। বিশেষ করে কক্সবাজার জেলা জুড়ে আনুমানিক ৩ হাজারেরও বেশি ডাম্পার রয়েছে বলে দাবি করছেন সচেতন মহল।
জেলার সকল উপজেলা ও জেলা শহরসহ ইউনিয়নের সড়কে অবাধে চলছে কাগজপত্রবিহীন মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ফিটনেস বিহীন কয়েক হাজার ডাম্পার ও মিনি ট্রাক। অবৈধ ও অপরাধমূলক কাজে এসব অনিবন্ধিত ‘ডাম্পার ট্রাক’ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কেবল পাহাড় কাটা ও বালু তোলার কাজে নয়, গরু চুরি ও ইয়াবা পরিবহনেও ব্যবহার হচ্ছে নম্বরবিহীন এসব ডাম্পার ট্রাকগুলো।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ইয়াবা পাচার, চুরি ডাকাতি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহার হচ্ছে ডাম্পার গুলো।
ঝিলংজার বাসিন্দা রফিক বলছেন, নম্বরবিহীন এসব ডাম্পার ট্রাকের মালিকেরাই মূলত পাহাড় কাটা, বালু তোলা, কাঠ পাচারসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত।
তথ্য মতে, চলতি মাসে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ৩ মাসের ব্যবধানে ২০টি বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক মাস আগে কুতুপালং ও রাজাপালং পৃথকভাবে ডাম্পার গাড়ি চাপা দিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয় এবং বেশ কয়েকটি সিএনজি গাড়িও ভাঙচুর হয়। এরপরেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশীরভাগ চালক অল্পবয়স্ক কিশোর যুবক, যাদের সিংহভাগেরই নেই কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। ফলে বিভিন্ন সময় ঘটছে দূর্ঘটনা। মহাসড়কে নাম্বার ও ফিটনেসবিহীন ডাম্পার চলাচল নিষিদ্ধ থাকা সত্তেও এসব যান মহাসড়কে সর্বদাই যাতায়াত করছে। এসব ডাম্পার গুলো মহাসড়কে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতির প্রতিযোগীতা শুরু করে দেয়। ট্রাফিক সিগনাল না মেনে যেখানে সেখানে থামে, যেখানে সেখানে মালামাল উঠানামা করে ও বেপরোয়া ওভারটেক করার ফলে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা।
কক্সবাজার শহরের সৈকত পাড়ার বাসিন্দা হাফেজ জমিরুল কাদের বলেন, ডাম্পার যখন কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে উঠে তখন হাইওয়ে পুলিশের ভয়ে অবৈধ ডাম্পার ও মিনি ট্রাকগুলো সর্বোচ্চ গতিতে চালায় যাতে তারা মামলা থেকে বেচে যায়। এর ফলে সড়ক দূর্ঘটনা সম্মুখীন হয়। অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ডাম্পারগুলো আইনের আওতায় আনা উচিৎ। অন্যতায় সড়ক দূর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব না।
বিআরটিএ দাবী করেছেন কক্সবাজার জেলায় মোট ডাম্পারের সংখ্যা ২ হাজার, রেজিষ্ট্রেশন নেই ১ হাজার ৮ শত ৯৫টির, রেজিষ্ট্রেশন আছে ১ শত ২১টির তার মধ্যে নবায়ন করে নাই ৮০টি, মোট বৈধ ডাম্পার আছে হাতে গুনা কয়েকটি। এসব যানবাহন আটক ও কাগজপত্র পরীক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগ খুব একটা দৃশ্যমান নয়।
ফিটনেসবিহীন এসব ডাম্পার চলাচলের কারণে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। হতাহতের ঘটনাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। মেয়াদোত্তীর্ণ ও লক্কড় ঝক্কড় মার্কা ডাম্পার চলাচলের কারণে পরিবেশ দূষণ ও সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ডাম্পার মালিক ও ড্রাইভারদের দাবি, তারা মাসিক চাঁদা দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ ম্যানেজ করে সড়কে গাড়ি চলাচল অব্যাহত রেখেছে।
অবৈধ ডাম্পার চলাচলের ব্যাপারে জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা কেউ প্রতিবেদকের মুখোমুখি হতে নারাজ তারা। তবে তারা দাবি করছেন
এই অবৈধ ডাম্পারের পাশাপাশি অবৈধ বিভিন্ন গাড়িকে আমরা বিভিন্ন সময় মামলা দিয়ে থাকি। তবে ডাম্পারের বিষয়টা খতিয়ে দেখব এবং অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তারা।
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন সময় জরিমানা করি। অবৈধ ডাম্পারের বিরুদ্ধে অভিযান অভ্যাহত রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেস বিহীন ৬০০ ডাম্পার ও মিনি ট্রাক। অবৈধ ও অপরাধমূলক কাজে এসব অনিবন্ধিত ‘ডাম্পার ট্রাক’ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কেবল পাহাড় কাটা ও বালু তোলার কাজে নয়, গরু চুরি ও ইয়াবা পরিবহনেও ব্যবহার হচ্ছে নম্বরবিহীন এসব ডাম্প ট্রাকলো।
পরিবেশবাদী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর সদস্য গণমাধ্যমকর্মী সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় শত শত অবৈধ ডাম্পার বিনষ্ট করছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। এছাড়াও ইয়াবা পাচার, চুরি ডাকাতি বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহার হচ্ছে ডাম্পার গুলো।
নম্বরবিহীন এসব ড্রাম ট্রাকের মালিকেরাই মূলত পাহাড় কাটা, ছড়া থেকে বালু উত্তোলন, বনের কাঠ পাচারসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ডাম্পার গুলো।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশীরভাগ চালক অল্পবয়স্ক কিশোর যুবক, যাদের সিংহভাগেরই নেই কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। ফলে বিভিন্ন সময় ঘটছে দূর্ঘটনা। মহাসড়কে নাম্বার ও ফিটনেসবিহীন ডাম্পার চলাচল নিষিদ্ধ থাকা সত্তেও এসব যান মহাসড়কে সর্বদাই যাতায়াত করছে। এসব ডাম্পার গুলো মহাসড়কে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতির প্রতিযোগীতা শুরু করে দেয়। ট্রাফিক সিগনাল না মেনে যেখানে সেখানে থামে, যেখানে সেখানে মালামাল উঠানামা করে ও বেপরোয়া ওভারটেক করার ফলে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা।
কক্সবাজার জেলা আরটিএ কমিটির সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, অবৈধ ডাম্পার গুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ