প্রবাসী ব্যক্তির জমি দখলে নিতে মরিয়া সন্ত্রাসীরা।

বার্তা পরিবেশকঃ
উখিয়ার সোনারপাড়ায় এক নিরীহ- অসহায় ব্যক্তির জমি দখলে নিতে নানা পায়তারা শুরু করেছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র। ওই ব্যক্তির উপর বার বার হামলা চালাচ্ছে চক্রটি। একাধিক বার ঐ ব্যক্তির উপর চক্রটি হামলায় করে ব্যাপক মারধর করে। বর্তমানে প্রাণনাশের হুমকি নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর সকালে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী জমির মালিক কে মারধর করে উক্ত জমি দখলে নেওয়ার জন্য সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে ঘেরা বেড়া ভেঙ্গে বাউন্ডারি নির্মাণ করে যাচ্ছে। জানা যায়, সন্ত্রাসী আব্দুল আজিজের নেতৃত্বে ফরিদ আলম, আব্দু ছমত, ফরিদ আলমসহ আরো ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী উক্ত জমিতে হামলা চালায়।সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রবাসী আবুল মনজুর উখিয়া থানায় সাধারণ ডাইরি করেন। ঘটনাস্থলে উখিয়া থানার এস আই কাউছার গিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষকে থানায় কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে কাজ বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান আবুল মনজুর। এব্যাপারে উখিয়া থানা অফিসার্স ইনচার্জ বলেন দীর্ঘদিন ধরে জমিটি নিয়ে একটি পক্ষের সাথে বিরুদ্ধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরী হয়েছে বলে সত্যতা নিশ্চিত করেন। উল্লেখ, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া বাজার এলাকার বাসিন্দা হাজী আবুল মনজুর (৫২)। পরিবারের চাকা সচল করতে জীবনের অধিকাংশ সময় প্রবাসে কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু দেশে এসেই নিজের আপনজনদের হাতে অনিরাপদ হয়ে গেলেন। সামান্য জমির লোভে তাকে প্রাণে মারতে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আপন ছোট ভাই মোহাম্মদ হাশেম ও ভাতিজা মো. এহসান ওরফে রাহামত উল্লাহ। অথচ ছোট ভাই মোহাম্মদ হাশেমের পরিবারের ভরণ-পোষন থেকে শুরু করে সবকিছু দীর্ঘদিন ধরে দেখভাল করে আসছিলেন আবুল মনজুর। পুলিশের কাছে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ করায় গত শুক্রবার (২৬ জুন) সোনারপাড়া বাজারে প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে আবুল মনজুরের উপর হামলা চালায় মোহাম্মদ হাশেম ও তার ছেলে এহসান ওরফে রাহামত উল্লাহ। এসময় আবুল মনজুরকে ব্যাপক মারধর করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এগিয়ে না আসলে আবুল মনজুর সেখানেই হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার আশঙ্কা ছিল। ওই ঘটনার ভিডিও ভুক্তভোগী পরিবারের মাধ্যমে প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েও ক্ষান্ত হয়নি ভূমিদস্যু চক্র। বর্তমানে তাদের প্রাণনাশের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় নিরীহ আবুল মনজুর। আবুল মনজুর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে আবুল মনজুর ৪০ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমি ২৫/৫/২০০৪ এবং ১/৬/২০০৪ তারিখে উখিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পৃথক দুটি দলিল মূলে ক্রয় করে আবুল মনজুর ভোগ দখল করে আসছিলেন। ওই জমিতে তিনটি ভাড়া বাসা, গাছপালা, বাউন্ডারী রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ওই জমির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ছোট ভাই মোহাম্মদ হাশেম ও তার ছেলে এহসানের। ওই জমিটি দখলে নিতে নানা পায়তারা চালিয়ে আসছে। কৌশলে জমিটি দখলে নিতে না পেরে গত বেশকিছু দিন ধরে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে জমি দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। গত ২০ জুন সকালে জমিটি দখলে নিতে সেখানে হামলা চালায় মোহাম্মদ হাশেম ও এহসান। এসময় বাঁধা দিলে আবুল মনজুরের উপর হামলা করা হয়। সেসময় প্রাণে বাঁচতে কোন রকম পালিয়ে যান তিনি। এঘটনার পর আবুল মনজুর উখিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন (শুক্রবার) ঘটনাস্থলে তদন্তে যান উখিয়া থানার উপপরিদর্শক খালেদ। তদন্তের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। তদন্তে পুলিশ কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে জমি দখল পায়তারার সত্যতা পান। ওইদিন পুলিশ কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পরই সোনারপাড়া বাজারের উপর প্রকাশ্যে আবুল মনজুরের উপর হামলা চালান মোহাম্মদ হাশেম ও তার ছেলে এহসান। এসময় পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন আবুল মনজুরকে। ছিনিয়ে নেন তার পকেটে থাকা নগদ টাকা। হামলার পরও তারা ক্ষান্ত হননি। বর্তমা প্রাণে মারতে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আবুল মনজুরকে। স্থানীয় দোকানকার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিরীহ আবুল মনজুরের কোন ছেলে সন্তান নেই। তার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবুল মনজুরের জমিটি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। তার উপর বার বার হামলা করে যাচ্ছে। প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে যেকোন সময় প্রাণহানির আশঙ্কা আছে। ভুক্তভোগী আবুল মনজুর বলেন, আমার কোন ছেলে সন্তান নেই। সবগুলো মেয়ে। তাই আমার পাশে দাঁড়ানোর মতও কেউ নেই। যাদের জন্য প্রবাসে সারাজীবন কাটিয়েছি তারাই এখন সামান্য জমির জন্য আমাকে প্রাণে মারতে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যেখানে দেখছে সেখানে হামলা চালাচ্ছে। এখন আমি চরম নিরাপত্তাহীন। আমি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ