আব্দুল আলীম নোবেল,
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নীতিমালায় রয়েছে দুর্দাশাগ্রস্ত মহিলা,অসহায় ও দুস্থ নাগরিকদের জন্য গৃহায়ণ কার্যক্রম গ্রহণের এমন নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে এইসবের কোন কিছুর মিল নেই। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বিভাগের আওতায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে ১০টি ভবন নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট রয়েছে ৪৬৯টি। এইসব ফ্ল্যাট বরাদ্ধের ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম ও বড় ধররে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে দায়িত্বে থাকা বড় কর্তারা এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। আর তাদের আসকরা পেয়ে ফ্ল্যাটের উপ-ভাড়াটিয়া মালিকরা রামরাজত্ব শুরু করেছে সরকারী এইসব ভবনে, আর এইসব ফø্যাট বরাদ্ধের নীতিমালা ভেঙ্গে আবাসিক হোটেল বানিয়েছে।
অবশেষে এই ফ্ল্যাট পরিচনায় কোন নিয়ম নিয়ম নীতির কেউই তোয়াক্কা করছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের দায়সারা মনোভাবের কারণে সরকারী এই ভবন গুলো এখন লুটের মালে পরিনত হয়েছে। তাদের নীতিমালার ১২ নং কলামে লেখা রয়েছে, ফ্ল্যাটটি আপনি নিজ পরিবারসহ এবং আপনার উপর নির্ভশীল বৃদ্ধ মাতা পিতা এবং ভাই বোনসহ বসবাস করতে পারবেন। আবাসিক উদ্দ্যেশ ছাড়া অন্য কোন উদ্দ্যেশে ব্যবহার করা যাবে না। আর এখন এইসব নীতিমালার কথা কাজীর গরু কাগজে আছে গোয়ালে নেই প্রবাদে রূপ নিয়েছে। কোন ফ্ল্যাট মালিক এইসব নিয়ম নীতি কেউ মানছে না। অনেকই আবার বাহারি নাম দিয়ে আবাসিক হোটেল বানিয়েছে।
এদিকে উপ ভাড়াটিয়া হিসেবে ৪নং ভবনে রয়েছে মো মেজবাহ উদ্দিন,গিয়াস উদ্দিন,(আবাসিক হোটেলের নাম দিয়েছে আল ফাতা রিসোর্ট) ৫নং ভবন রয়েছে আশরাফুল ইসলাম( হোটেল একুশে নীড়) ৬নং ভবনে রয়েছে সওয়ার আলম(ওয়াটার প্রারাডাইস রিসোর্ট) ৭নং টিপু সুলতান রিয়াদ(হোটেল ওশান ফ্রেন্ড) ৯নং ভবনে রেজাউল ইসলাম(সমুদ্র বাড়ি) ১০ আব্দুর রহমান(হোটেল দ্যা গ্রন্ড সেন্ডী) অতচ এইসব হোটেল পরিচালনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার েবিধান থাকলেও কারাে কাছে আবাসিক হোটেল পরিচালনা করারমত কোন বৈধ কাগজ পত্র নেই। এইসব হোটেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা লোকজন বলে বেড়ায়, আমাদের হোটেল গুলো বড় বড় সরকারী আমলাদের এখানে পুলিশ প্রশাসন অভিযান করবে না, এমন রং মাখানো কৌশলী ফাঁকা বুলি ছেড়ে অনৈতিক কার্যকালাপসহ অপরাধীদের আশ্রয়স্থলে পরিনত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এইসব উপ-ভাড়াটিয়া মালিকরা মোটা অংকের বিনিময়ে ফ্ল্যাট গুলো নিজের সম্পত্তিত মনে করে যা ইচ্ছে তাই করছে এমনটি অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিয়মকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে পুরো ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে এমন অভিযোগ সচেতন মহলের।
সরওয়ার কামাল নামে একজন উপ-ভাড়াটিয়া কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টের সড়কের পাশের ভবনের দেওয়াল ভেঙ্গে ভাড়া দিয়েছ বিভিন্ন পরিবহরের জন্য কাউন্টার। ফ্ল্যাট মালিকগং কালো টাকার মালিকের কাছে উপ ভাড়া দিয়েছে বলেও অভিযোগ এতে এখানে আশ্রয় নিচ্ছে পুলিশের দাগি অপরাধিরাও। অন্যদিকে উপ-ভাড়াটিয়া মালিকরা আবাসিক হোটেল বানিয়েছে এখানে প্রতিদিন শতশত পর্যটক আবাসিক হোটেল হিসেবে থাকছে। যদিও এটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নীতিমালার চরম লংঙ্গন। সম্প্রতি এমন ঘটনার তদন্তে সংশ্লিষ্ট উর্দ্দতন মহলের একটি দল কক্সবাজার এসে ফ্ল্যাট মালিকদের সাথে আলোচনায় বসেছিল। ওই সময় বেশিরভাগ মালিক পক্ষরা উপস্থিত না থাকায় আলোচনায় কোন সিন্ধান্ত আসতে না পারায়, এই তদন্ত দল নিরূপায় হয়ে আগামী ২০ দিনের মধ্যে স্ব স্ব কাগজ পত্রসহ ফ্ল্রাট পরিচালনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলছেন।
জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার কলাতলী এলাকায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ‘কক্সবাজার ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্পের’ নামে তৈরি করে ৪৭৯টি ফ্ল্যাট। প্রতিটি ফ্ল্যাটের দাম নির্ধারণ করা হয় ৩৪ থেকে ৪০ লাখ টাকা। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়াই গত তিন বছরে ফ্ল্যাটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয় কিস্তিতে। ২ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের পছন্দের লোকজনকে দেওয়া হয়েছে সেই বরাদ্দ। নীতিমালা অনুসারে কিস্তিতে ফ্ল্যাট নিয়ে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে মূল টাকা সঙ্গে সুদসহ পরিশোধ করার নিয়ম থাকলেও ক্রেতাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি সুদের টাকা। এক্ষেত্রে কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার আশায় পরস্পর যোগসাজশে মোট ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্রগুলোতে সুদের কথাটি উল্লেখ না করে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে। আর এই জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তেও।
এদিকে সব ঘটনার নাটের গুরু জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকেশৗলী ছোটন চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার অফিসে আসিয়েন এক কাপ চা খেয়ে যায়েন। অপর দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল হক মোতাইদ জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এইসব অনিয়মের সাথে কারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শক্ত আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছবি-শফিকুল ইসলাম।
0 মন্তব্যসমূহ