নীলফামারীতে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু জাহিদুল, পরিবার বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন


আল-আমিন, নীলফামারীঃ

নীলফামারীতে ইউনিয়ন স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের ভুল চিকিৎসার কারণে দুই পা পঙ্গু হয়ে বাড়িতে পড়ে আছেন জাহিদুল ইসলাম। পঙ্গু পায়ের চিকিৎসায় সব হারিয়ে এখন চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের দুয়াড়ে দুয়াড়ে ঘুরছে তার পরিবার। জাহিদুল ইসলাম নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া এলাকায় মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। 

জাহিদুলকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে পঙ্গু করে রাখার ঘটনাটি ঘটে কুন্দপুকুর ইউনিয়ন স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের রুহুল আমিনের নিজস্ব বাড়িতে।জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ৪ বছর আগে আমার কোমড়ের ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য রুহুল আমিনের বাড়িতে যাই। তাকে আমার এই অসুস্থতার কথা বললে তিনি আমাকে কিছু ভিটামিন টেবলেট দেয়। টেবলেন নিয়ে আসার পথে তিনি আবার আমাকে ডেকে আমার শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করে। ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে আমার দুটি পা অবস হয়ে যায়। 

এরপর ডাক্তারের চেম্বার থেকে তার ৪ জন লোক আমাকে ভ্যানে করে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে। সেই থেকে আমি পঙ্গু। লাঠির ওপর ভড় দিয়ে কোনরকমে চলাফেরা করি। পরবর্তিতে ওই ডাক্তারকে কয়েকবার ডাকলেও তিনি কোনভাবেই সারা দেয়নি। আমার সম্পদ যা ছিলো বড় বড় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করতে সব শেষ,তবুও পায়ের উন্নতি হয়নি। ডাক্তারেরা বলে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করালে পাদুটো ঠিক হয়ে যেতে পারে। আমার স্ত্রী, সন্তান মিলে ৫ জন সদস্য নিয়ে খুবেই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিনা।

জাহিদুলের সহধর্মিনী জেসমিন বেগম বলেন, রুহুল আমিনের ভুল চিকিৎসার জন্য আমার স্বামী এখন পঙ্গু। কাজ কাম কিছুই করতে পারে না। ধার দেনা করে কোন রকমে সংসার চলে। ছেলে মেয়ের পড়া লেখা তো আছেই। আবার স্বমীর পায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে রংপুরের ডাক্তারেরা। তাই আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন করছি। সেইসাথে আমার পরিবারের এই দুর্দশার কারণে ওই ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি। জানতে চাইলে কুন্দপুকুর ইউনিয়ন স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আমি তাকে ভিটামিনের ইনজেকশন দিয়েছিলাম।পঙ্গুত্বের বিষটি শুকৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।

এবিষয়ে কুন্দপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহজাহান আলী চৌধুরী বলেন, জাহিদুলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বেশ কষ্টদায়ক। ভুল চিকিৎসার কারণে আজ সে পঙ্গু। আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে কিন্তু তার চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকার দরকার। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ কামণা সহ বিত্তবানদের কাছে আমার অনুরোধ প্রত্যেকে সহযোগীতা করলে জাহিদুল আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সহযোগীতা করতে আগ্রহীগণ ০১৭৯৭-৬৬১২৭৩ এই মোবাইল নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন। 

এবিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক মোঃ শাহজাহান বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ