হারিয়ে যাওয়ার ৮ বছর পর গাইাবন্ধার গোলজান বিবি ফিরে পেলো মেয়েকে


ওবাইদুল ইসলাম, গাইবান্ধাঃ
  

হারিয়ে যাওয়ার ৮ বছর পর ভারত থেকে বাড়ি ফিরলো গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের মেয়ে সাজেদা আক্তার ফেলানী (৪০)। ফেলানীকে ফিরে পেয়ে খুঁশি তার পরিবার। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিরা দলে দলে ফেলানীকে দেখতে ভিড় করছে তার বাড়িতে। 

জানা গেছে, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর মেয়ে সাজেদা আক্তার ফেলানী আক্তারের বিয়ে হয় আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে একই ইউনিয়নের খোর্দ্দমালিবাড়ীর দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফয়জার হোসেনের সাথে। গাইবান্ধা থেকে ফয়জার হোসেন তার পরিবার পরিজন নিয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার স্বামী ফয়জার হোসেন দ্বিতীয় বিয়ের পরই ফেলানীর জীবনে নেমে আসে স্বামীর চরম নির্যাতন এবং আর অবহেলা। একপর্যায়ে তার স্বামী ফেলানীকে বাপের বাড়িতে রেখে যায়। এতে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।

এক পর্যায়ে খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্বামীর কাছে যাওয়ার সময় ২০১৩ সালে ফটিকছড়ি থেকে হারিয়ে যায় ফেলানী। তখন থেকেই তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবারের লোকজন। এজন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এক পর্যায়ে জানা যায় ফেলানী ভারতে রয়েছে। ভারতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে দীর্ঘ ৮ বছর পর ফেলানী তার নিজ বাড়ি গাইবান্ধায় ফিরে আসতে সক্ষম হয়। মা তার সন্তানকে পেয়ে যেমন খুশি, মাকে ও পরিবারকে খুঁজে পেয়ে তেমনি খুশি হয়েছেন ফেলানী। ফেলানী সদর উপজেলার মৃত সৈয়দ আলী ও গোলভান নেছার মেয়ে।

এব্যাপারে ফেলানীর চাচা আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, ২০১৩ সালে স্বামীর নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সে ভারতে চলে যায়। প্রথমে তিন বছর কলকাতায় কারাভোগের পর ২০১৬ সালে জেল থেকে মুক্ত করে ফেলানীকে আশ্রয় দেয় সেখানকার একটি মানবাধিকার সংস্থা। এরপরই তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে অনেক চেষ্টা আর নানাভাবে যোগাযোগ করে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দেশে। কিন্তু তার স্বামী  সেই থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। 

হারিয়ে যাওয়া ফেলানী বলেন, পরিবারকে ফিরে পেয়ে আমি অনেক খুশি। একটাই দুঃখ থেকে গেল, বাবা আজ বেঁচে নেই। বাবা আমাকে দেখতে পারলেন না। বাবার মুখটা দেখা হলো না। ফেলানীর মা গোলভান নেছা বলেন, তারা মেয়েকে না পেয়ে মানষিক কষ্টে ছিল। দীর্ঘদিন পর খুঁজে পেয়ে তার চোখে-মুখে আনন্দ দেখে তিনিও অনেক খুশি। ওর বাবা বেঁচে থাকলে আরও বেশি খুশি হতো। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ