নীলফামারীতে পোলের বদলে বাঁশের খুঁটি ও জীবন্ত গাছে বৈদ্যুতিক লাইন


আ. মালেক বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নীলফামারীতে বৈদ্যুতিক পোলের পরিবর্তে বাসের খুঁটি ও রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন গাছের সঙ্গে টানা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের মূল লাইন সংযোগ। এতে করে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে জনজীবন, এমনকি হুমকির মুখে পড়েছে অনেক প্রজাতির গাছ। 

বৈদ্যুতিক পোল না থাকায় বৃষ্টি বা মাঝারি ধরনের বাতাস বইলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায় । এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় কমলমতি শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসীকে। সদরের ৯টি ফিটারের মধ্যে গ্রাহক সংখ্যা ২৯হাজার থাকলেও প্রতিনিয়ত ১হাজারেরও বেশী গ্রাহককে পড়তে হয় চরম দূর্ভোগে। দীঘর্দিন ধরে সদর উপজেলার লক্ষিচাপ ও টুপামারি ইউনিয়নে বৈদ্যুতিক সংযোগের নামে তৈরি করা হয়েছে মরণ ফাঁদ। 

জীবন্ত গাছে আর বাঁশের খুঁটিতে নিম্নমানের তার দিয়ে চলছে এসব সংযোগ। কৃষি জমির উপরে ঝুলন্ত তার থাকায় কৃষকদের কাজ করতে হয় মহা আতঙ্কে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই অবস্থা চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন তারা। 

বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করলেও সমস্যার সমাধান পাননি ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড জুড়ে নিত্যানন্দি এলাকার জীবন্ত গাছে, এমনকি বাঁশের খুটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বসত-বাড়িতে লাইন স্থাপন করেছে উপজেলা নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কতৃপক্ষ। এমন চিত্র আরো দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে।

কোথাও দেখা গেছে, গাছের সঙ্গে লাগানো অ্যাঙ্গেলে ঝুলছে বৈদ্যুতিক জিআই তার। আবার কোথায় র্যাক ছাড়াই এসব তার দিয়ে টানা হয়েছে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ। ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত. ধনীর উদ্দিনের ছেলে, ইয়াসিন আলী(৭৩) ও মৃত. বাচ্চা মামুদের ছেলে, খাদিমুল ইসলাম(৬৫) সহ আরো অনেকে জানান, তাদের বাসার আশেপাশে গাছের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুতের তার রয়েছে। 

তারা একাধিকবার স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে খুঁটি স্থাপন করে নতুন সরবরাহ লাইন দেওয়ার অনুরোধ করেছেন, তবে এতে কোন কাজ হয়নি বলে জানান এসব ভুক্তভোগীরা। এছাড়াও তাদের অভিযোগ উপজেলা বিদ্যুত অফিসে প্রায় ১৫ বছরের অধিক দায়িত্বে থাকা লাইন সাহায্যকারী ছামিউল ইসলাম বাবলুর বিরুদ্ধে। তিনি গ্রাহকদের নিকট পোলের জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা নিলেও ১০ বছর পার হলেও এলাকায় ঢুকাতে পারেনি সরকারী কোন বৈদ্যুতিক পোল।  অভিযোগের বিষয়ে লাইন সাহায্যকারী ছামিউল ইসলাম বাবলুর কাছে জানতে চাইলে কথা না বলে, তিনি বিষয়টি নিয়ে রফাদফায় বসতে বলেন।

এ ব্যাপারে নীলফামারী নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নওশাদ আলম এর সাথে কথা বলতে চাইলে, তিনি কথা বলতে বলেন, রাজশাহী বিদ্যুত কেন্দ্রের হেড অফিসের ম্যানেজার সুবীর রঞ্জন প্রদ্দারের সাথে।

এক মাসের মধ্যে এসব খুঁটি থাকবেনা বলে মুঠোফোনে জানান, রংপুর অফিসের চীফ ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত হোসেন সরকার। বৈদ্যুতিক পোলের টাকা নেয়ার অভিযোগের বিষয় তিনি বলেন, যদি কেউ কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে প্রমান সহকারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

মুঠোফোনে সুবীর রঞ্জন প্রদ্দার বলেন, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা। তবে এসব কমপ্লেন যেন তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেয়া হয়, আমি এসি ও প্রকৌশলীর সাথে কথা বলবো যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, নওশাদ আলম কেন কথা না বলে আমার নাম্বার দিয়েছে, আমি তার কাছে যেনে নেবো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ