রংপুরে সিন্টিকেটের কারনে আলুর দাম বৃদ্ধি

রংপুর ব্যুরো অফিসঃ  

দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন অস্বস্তির নাম আলু। কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন উচ্চতায় ক্রেতার প্রয়োজনীয় এই পণ্যমূল্য। হঠাৎ করেই দাম বাড়ার কারণ এখনও অজানা। তবে, এক্ষেত্রে হিমাগার মালিকদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল। বলা হচ্ছে, করোনা এবং বন্যার ধোয়া তুলে সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে দাম আর এই দামের আগুনে পুড়ছে ক্রেতা। 

রংপুরে যে পাইকারি বাজার গুলো রয়েছে সে বাজারে ভোক্তাদের সর্বোচ্চ দামে আলু কিনতে হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। শাকসবজির যখন আকাশ ছোয়া তখন মানুষ আলুর উপর নির্রভরশীল ছিল। আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায়, ফলে এখন তারা বাজারে গিয়ে হাহুতাশ করছে।

করোনা ও চারদফা বন্যার পর তছনছ হয়ে গেছে উত্তরের কৃষি নির্ভর অর্থনীতি। ভাতের পর আলুর উপর নির্ভর করে নিম্ন আয়ের মানুষ সেই আলুরদাম এখন ৫০টাকার উপরে। প্রতি পদের আলুতে বেড়েছে কমপক্ষে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা। অথচ আলু নেই কৃষকের হাতে চলে গেছে মজুদদার এবং কোল্ডষ্টোরের মালিকদের হাতে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, দেশে এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমি থেকে আলু উৎপাদন হয়েছিল ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৭ মেট্রিক টন আলু। 

শস্যভাণ্ডারখ্যাত রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে টানা কয়েক বছর আলুর দাম না পেলেও চলতি বছরে কিছুটা দামে আগেভাগেই আলু ছেড়ে দিয়েছে কৃষক। করোনা আর চার দফা বন্যার পর যখন নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে টাকা নেই তখন আলুর দাম বাড়িয়েছে মজুদাররা।

রংপুরের হিমাগারগুলোতে এখন ৫০% শতাংশ আলু মজুদ থাকার পরও খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। এজন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, বন্যায় সবজির দাম বাড়তি থাকার সুযোগ নিয়ে সিন্ডিকেট চক্র আলুর এই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

রংপুর হিমাগারে একজন কর্মচারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি সাংবাদিকদের কে বলেন, হিমাগার গুলোতে এখনো ৫০ শতাংশ আলু মজুদ আছে। এর মধো যে বিজটা রয়েছে সেটা আমরা গ্রোয়াজ দেয়ার উদ্দেশে কোল্ড স্টোরেজে রাখি বা পাশাপাশি বিআরডিসি ব্রাক, সুপ্রিম সিট এনারে যে বিজ গুলোন রাখে সেটার পরিমান খুবই নগন্ন। 

এই আলুটা হিমাগারে মালিকরা ৩৬শ টাকা পযর্ন্ত  বস্তা বিক্রি করেছে। অথছ সিজেনের সময় তাদের কেনা পরছে ১২ টাকা ১৩ টাকা পযর্ন্ত। আর যে সমস্ত লোকেরা এ পযর্ন্ত  আলু রাখছে তারা সকলেই কোটিপতি। তিনি বলেন যারা প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়র এবং ভাল ভাল লোকেরা তারাই আলু গুলো কোল্ড স্টোরজে রেখে সিন্টিকেটের মাধ্যমে আলু গুলোন বিক্রি করছে। 

কোটিপতি এবং কিছু সিন্ডিকেটের হাতে আলু চলে যাওয়ায় এই দাম বৃদ্ধির মুল কারন। পাশাপাশি তিনি বন্যার পরিস্থিতিকে কিছুটা দায়ী করছেন। ধার-কর্যে জমি তৈরির পর আগাম বীজ আলু, মাটিতে বুনতে পারলেও কয়েকদফা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে একই জমিতে ২-৩ বার বুনতে হচ্ছে বীজ। আর বাজর মনিটরিং না থাকায় এ অচলাবস্থা বলছেন ক্রেতারা। 

প্রতি বছর আগাম শীতকালীন শাক-সবজিতে মাঠ ভরা থাকলেও এবার দ্রুত পচঁনশীল-সবজিসহ বেশিরভাগ ফসল বন্যায় নষ্ট হওয়ার কারণে আলুর উপর চাপ পড়েছে এজন্য দামটা একটু বেশি বলছেন ব্যবসায়ীরা।

রংপুরে আলুর আগামী মৌসুম শুরু হবে ডিসেম্বর মাসের শুরেতেই। আলু উৎপাদনই শুধু নয়, সারা দেশে শাক-সবজির ৪০ ভাগ চাহিদা পূরণ হয় এই অঞ্চল থেকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ