সৈয়দপুরে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে বাজার পরিদর্শন করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও

মিজানুর রহমান মিলন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভারত কর্তৃক পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবরে সৈয়দপুরের বাজারে ৫৫ টাকার পেঁয়াজ ১০০ টাকায় উঠেছে।আজ বুধবার সকালে শহরের বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে পেঁয়াজের দামের এমন চিত্র মিলেছে। ফলে পেঁয়াজের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। 

স্বচ্ছল ক্রেতারা দাম আরও বাড়তে পারে এমন চিন্তা থেকে পেঁয়াজ কেনা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে হঠাৎ করে মূল্যবৃদ্ধির ফলে পেঁয়াজের বাজার পরিদর্শন করেছেন সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন ও বাজার মনিটরিং কমিটির সভাপতি সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসিম আহমেদ ।

স্থানীয় কাঁচামাল খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, সৈয়দপুর শহরে ৫/৬ জন পেঁয়াজ আমদানির বড় আড়তদার রয়েছেন। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবর জানার পর তারা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০/৪৫ টাকা বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে পেঁয়াজের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে। 

খুচরা ব্যবসায়ীরা চাহিদামত পেঁয়াজ কিনতে চাইলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে না। ফলে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। শহরের সবজি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা চাকুরিজীবী আব্দুল মান্নান জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা আগে মজুদ করা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে ১০০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনতে হল। 

দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং কমিটি থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সরেজমিনে সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর আমদানি দেখা গেলেও দামে কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। রেলওয়ে সবজি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. শাকিল জানান, 

আড়তে তাদেরকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০/৮০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তাদেরকে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়তে দাম না কমলে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে বলে আশংকা ব্যক্ত করেন। তার মতে পাইকারী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। অথচ বড় ব্যবসায়ীদের গুদাম বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ আছে। দাম বাড়ার কথা নয়।

এদিকে গত দুদিন ধরে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় বাজার পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো.  মোখছেদুল মোমিন ও বাজার মনিটরিং কমিটির সভাপতি  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসিম আহমেদ। আজ বুধবার সকালে কয়া 

মিস্ত্রীপাড়া বাইপাস সড়ক সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা পৌর পাইকারী কাঁচাবাজারে যান তারা। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও  পেঁয়াজের পাইকারী ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন এবং আড়তে পেঁয়াজের মজুদ দেখেন।

ব্যবসায়ীরা জানান,পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না ভারতের এমন ঘোষণা আসার সাথে সাথে স্থলবন্দরেই আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়েছেন। আজ বুধবার স্থলবন্দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০/৬৫ টাকা কেজিতে। 

এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন ও ইউএনও মো. নাসিম আহমেদ পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের বাজার মূল্য স্বাভাবিক রাখতে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ পৌর পাইকারী কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল মোহাম্মদ আজম ছাড়াও অন্যান্যরা। এ বিষয়ে জানতে আজ বুধবার বিকেল ৩.৩০ মিনিটে ইউএনও মো. নাসিম আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তার কোন মন্তব্য জানা যায়নি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ