বেঁচে থাকার গল্প: আলহামদুলিল্লাহ আজ আমার শুভ জন্মদিন- সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম

মোহাম্মদ হায়দার আলী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
"বেঁচে থাকার গল্প", লিখেছেন দৈনিক আমার সময় পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম। আজ ১১জুলাই ২০২০ইং শনিবার এই প্রবীণ সাংবাদিক এর শুভ জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর এই লেখাটি শুভেচ্ছা স্বরুপ প্রকাশ করা হল,পাঠক মহলে যেন আবারও নতুন করে আরেকবার পরিচিত হন।

আজ আমার শুভ জন্মদিন। আজ থেকে অনেক গুলো  বছর আগে এমনি একটি দিনে আমি পৃথিবীর আলোর মুখ দেখি । নিশ্চয় সেই দিনের জন্মক্ষণে আমি গলা ফাটিয়ে কান্না করেছিলাম আর আমার প্রান প্রিয় পিতা -মাতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা আমার কান্নাকে উপেক্ষা করে হাসি মুখে পরমানন্দে ভবিষ্যত লক্ষ্য নির্ধারণে ছিলেন অতি ব্যস্ত।

আমার মুখে কান্না ছাড়া আর কোন ভাষা ছিলোনা। ছলছল চোখে হয়ত দেখেছিলাম চারপাশটাকে আর অবাক দৃষ্টিতে সব কিছু পরখ করতে করতে আবার হয়ত কান্না, কান্নাই যে তখন একমাত্র ভাষা। আমার বাবা-মা আমার কান্না কে হয়ত আমার ক্ষুধার্তের সংকেত হিসেবে ধরে নিয়েছিলো তাই কোন খাবার আমার জন্য যুতসই সেটাই খুঁজতে কিংবা যোগাড় করতে তাঁরা ছিলেন মরিয়া অথচ তাঁরা কেউই প্রশ্ন করেনি আমার কান্নার পেছনে কি রহস্য প্রোতিত ছিলো !

আমি হয়ত সেদিন কেঁদেছিলাম এই ভেবে আমাকে যে পৃথিবীতে স্থানান্তর করা হলো তা আমার জন্য মোটেই বাস যোগ্য নয়, আমিতো আমার পূর্ববর্তী স্থানেই ভালো ছিলাম। কোন অপরাধে আমাকে জোর করে তোমরা এই বীভৎস পৃথিবীতে ডেকে আনলে ? এই বিশাল প্রশ্নের ভার সইতে না পেরে হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম আর সবাই ভাবলো এই বুঝি ক্ষুধা মিটেছে !

জীবনের অনবরত যুদ্ধে ক্লান্ত আমি,জন্মদিন মনে রাখার মতো সময় কোথায়? আমি আমার জানামতে জীবনে চলার পথে নিজ পরিবার পরিজন প্রতিবেশী 
সমাজ বন্ধু বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আমি আমার জায়গা থেকে পাশ্বে থাকার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটুকু তাদের মন জয় করতে পেরেছি। জীবনে চলার পথে যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি। 

জম্ম হল মানুষের পৃথিবীর জীবন শুরু। ১১ জুলাই অনেক গুলো বছর আগে এই দিনে আমার জম্ম। 
জম্ম ব্যাপারটাকে যত খুশির বলে মনে করা হয় আসলে তা তেমন খুশির নয়। জম্ম হওয়া মানে মৃত্যু ফল বিজ বোনা। এই বুঝি আজরাইল হাজির হইল। খালি ভয়। অবশ্য আল্লাহ ও তার রাসুল(দঃ) মৃতুকে স্মরন করতে বলেছেন বেশী বেশী। এতে মন নরম হয়। জগতের প্রতি মোহ থাকেনা।

পছন্দ অপছন্দ যাই করি না কেন এটা চির সত্য প্রত্যেকটি আত্মাকেই মৃত্যুর স্বাধ পেতে হবে। বর্তমান মানব সম্প্রদায় এই চির সত্যকে ভুলে থাকতে চেষ্টা করছে। এই জন্য তারা গা ডুবিয়ে দিচ্ছে নানা ধরনে বিলাস বাসনে। কিন্তু মৃত্যুকে ভুলে থাকলেই কি সব সমস্যার সামাধান হয়ে যাবে। জম্ম দিনের এতো আনন্দ কেক কাটা হই হুল্লোরের মাঝে ভুলে যাই আমার জীবন থেকে খসে পড়ল আরো একটি বছর। ঝড়ে যাচ্ছে বছরগুলো এক এক করে। হায়াত কমছে।

পবিত্র আল কোরআনে জম্মানো কারন হিসাবে বলা হয়েছে ইবাদতের কথা। অর্থাত আল্লাহর ইবাদত করার জন্যই প্রানের সৃষ্টি। প্রতিটি প্রানীই তার নিজস্ব নিয়মে ইবাদত করে। কিন্তু মানব সম্পদায় তার আরধনা দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করে না। সে ভুলে থাকতে চায় মুত্যর মত তার জম্মের উদ্দেশ্যকেও। জম্ম –মৃত্যু যতই ভাল বা খারাপ হোক না কেন, মনে রাখতে হবে জম্মের মাধ্যমে বান্দার পরীক্ষার হলে প্রবেশ। মৃত্যর মাধ্যমে পরিক্ষার সমাপ্তী। পরীক্ষার হলে বসে বসে কেউ যদি না লিখে সময় নষ্ট  করে সে হবে ক্ষতিগ্রস্থ। তেমনি দুনিয়াতে যতক্ষন থাকা হবে ততক্ষন যদি মানুষ ভোগবিলাসে কাটিয়ে মূল্যবান জীবন নষ্ট করা হয় তাহেলে একই রকম ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

আমরা দুনিয়ার সবাই যদি মুত্যকে স্মরন করতাম তাহলে সমাজে পাপ অনেক কমে যেত। মৃত্যু মানেইতো আল্রাহর কাছে জবাব দিহি দেয়া। "দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র"- আল হাদিস। শষ্য ক্ষেত্রে এখন যদি ভালভাবে কাজ করি আখেরাতে ভাল ফসল পাওয়া যাবে। আর তা না হলে সর্বহারা হয়ে কেয়ামতের ময়দানে আহাজারী করতে হবে। আমরা নিজ নিজ জম্মদিনে শপথ নিন এখন থেকে জীবন সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করব।

শুভেচ্ছান্তেঃমোহাং জাহাঙ্গীর আলম।বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক আমার সময় বিশেষ প্রতিনিধি, দুর্নীতির সন্ধানে 
নির্বাহী সম্পাদক, দুর্জয় বাংলা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ