মসজিদে জমি দান করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন', ভিক্ষুক দম্পতি পেলেন ‘ঘর’

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ 
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোপাল রায় গ্রামের (পাঁচমাথা) ভিক্ষুক দম্পতি খইমুদ্দিন (৮০) ও তার স্ত্রী হামিজোন বেগমকে (৬৭) নিয়ে একটি জরাজীর্ণ টিনের ঘরে কাটিয়েছেন জীবনের বেশির ভাগ সময়। 

এবার ঈদে তাদের একটি আধপাকা ঘর তৈরি করে দিয়েছেন স্থানীয় ৩০ জন যুুবক। এই ভিক্ষুক দম্পতি মসজিদে জমি দান করে সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

জানা গেছে, বৃদ্ধ ভিক্ষুক খইমুদ্দিন প্যারালাইস রোগী। আর তার স্ত্রী হামিজোন বেগম প্রতিদিন গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করেন।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জরাজীর্ণ একটি কুঁড়েঘরে তাদের বসবাস। প্রতিদিনের ভিক্ষার চালে চলে তাদের সংসার। একদিন ভিক্ষা না করলে খাবার জোটে না। অনেক সময় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কেটে যায়। ওই দম্পতি নিঃসন্তান। সম্পদ বলতে বাড়ি ভিটার ৪ শতাংশ জমি। 

এই শেষ সম্বলটুকু গত কয়েক বছর আগে গ্রামের স্থানীয় নিত্যির দিঘি জামে মসজিদে দান করে দিয়েছেন তারা। তাদের এমন দান সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মসজিদে জমি দান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হামিজোন বেগম জানান, ‘বুড়া মসজিদে জমি দান করাতে সে দারুণ খুশি। দুজনের মৃত্যুর পর সম্পদের একটা হিল্লা হবে।’

স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে ঘর পেয়ে আনন্দিত জানিয়ে হামিজোন বেগম বলেন, ‘আমাদের স্বপ্নের মতো লাগছে। অনেক কষ্টের জীবনে একটি পাকা বাড়ি পেয়ে আমরা খুশি।’

স্থানীয় শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ভিক্ষুক দম্পতি মসজিদে জমি দান করে দিয়েছে। তাদের কোনো সন্তান নেই। মৃত্যুর পর গ্রামের ও সমাজের লোকজন তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করবে। এই ভিক্ষুক পরিবারটি মসজিদে জমি দান করে সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এ ব্যাপারে কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আতাউজ্জামান রঞ্জু জানান, ‘স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে এই ভিক্ষুক দম্পতিকে একটি পাকা ঘর তৈরি করে দিয়ে তারা ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। ঘর পেয়ে পরিবারটি খুব আনন্দিত।পরিবারটি এখন নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ