সর্বত্র স্বাভাবিক কর্মকান্ড বাজার রাস্তাঘাটে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা, মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

মিজানুর রহমান মিলন, স্টাফ রিপোর্টারঃ 
সাধারণ ছুটির পর জীবন ও জীবিকার তাগিদে সীমিত পরিসরে সবকিছু খুলে দেয়ার পর থেকে আগের মতই চলাফেরা করছে সবাই। সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও করোনা ভুলতে বসেছে সৈয়দপুরের জনসাধারণ। 

শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না অধিকাংশ মানুষ। বিশেষ করে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে মাস্ক ছাড়াই বাইরে চলাফেরা করছেন। এমনকি গায়ে গা লাগিয়ে বাজারে যে যার মত কেনাকাটা করছেন বা অহেতুক বাজারে বা সড়কে ঘুরছেন। 

করোনা সংক্রমণের জন্য বিপদজনক হলেও মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরি করছেন অনেকে। সব মিলিয়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে চলাফেরা করছেন মানুষজন।

এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনায় বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট খোলা রাখার নিয়ম মানছেন না এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী। এসব ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে অধিক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখছেন। 

এদের কারণে রাত পর্যন্ত বাইরে ঘোরাঘুরি সুযোগ নিচ্ছে অসংখ্য মানুষ। চলছে রিক্সা-অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন। এ অবস্থা শহরের একাধিক বাজার, মার্কেট, বাসটার্মিনাল ও কম্যব্যস্ত সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা যায়, গত ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংক্রমণ প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী বাইরে চলাচলের ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ আইনে কেউ মাস্ক না পরে বের হলে ৬ মাস জেল অথবা ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। 

আইনের বাইরেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরিধান করতে মানুষকে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করছেন। অথচ সৈয়দপুরে অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরিধানকে তোয়াক্কা না করে সর্বত্র স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছেন। কেউ সংক্রমণ প্রতিরোধের এই অতি দরকারি সতর্কতা আমলেই নিচ্ছেন না।

শহরের মূল সড়ক ও বাজারে দেখা যায়, কেউ কেউ মাস্ক পরলেও অনেকের মুখে মাস্ক নেই। অনেকে কথা বলার সময় মাস্ক খুলে ফেলছেন। বাজারের কয়েকজন দোকানীরা বলেন, আমরা ক্রেতাদের দূরে দাঁড়াতে, মাস্ক পরতে ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলি। কিন্তু ক্রেতারা অসন্তোষের ভাব নিয়ে কোন কথাই শুনতে চান না। 

বাজারে পণ্য কিনতে আসা মনোয়ার নামে এক ক্রেতা জানান, দেশে করোনার ভয়াবহ অবস্থা। এরপরও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। তিনি বাইরে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের অভিযান চালানোর তাগিদ দেন। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের হাট বাজারে মানুষজন মুখে মাস্কতো লাগাচ্ছোই না, সামাজিক দূরত্ব পর্যন্ত বজায় রাখছেন না।

এদিকে দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলার বিধি সৈয়দপুরে চরমভাবে লংঘন করতে দেখা যাচ্ছে। ইদানিং এক শ্রেণীর পণ্য ব্যবসায়ী রাত ৯টার পরও দোকান খোলা রাখছেন। 

শহরের শহীদ ডা. সামসুল হক সড়ক, শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, সিনেমা সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে কনফেকশনারী, অন্যান্য দোকানসহ হোটেলগুলো দিব্যি খোলা থাকছে। ওইসব ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক শার্টার বা ঝাপ খুলে দিব্যি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। প্রশাসনের লোকজন আসামাত্রই দোকান বন্ধ করছেন আবার তারা চলে যাওয়ার পর দোকান খুলে রাখছেন। 

তারা সরকারের স্বাস্থ্যবিধির ধার ধরছেন না। এসব ব্যবসায়ীদের কারণে অধিক রাত পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ বাইরে চলাফেরা করছে। এসব ব্যবসায়ীরা নিজেরাও বিধি মানছেন না, উল্টো অন্যদের অযথা বাইরে বের হওয়ার সুযোগ তৈরী করে দিচ্ছেন। 

ফলে শহরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের চলাচল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় সচেতন মহল পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার বিষয়ে জানতে চাইলে শহরের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক জানান, বাইরে চলাচলে অবশ্যই মাস্ক পরা এবং সাদ্যমত শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা। এর অন্যথা করলে সংক্রমণের বিপদ বাড়বে। তারা সংক্রমণ রোধে মানুষের অপ্রয়োজনীয় চলাচল, ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ