নওগাঁর মহাদেবপুরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ক্লিনিকে রেডিও লজিস্ট ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার আনিস অর্থোপেডিকের ভূমিকায়

কাজী সামছুজ্জোহা মিলন,নওগাঁ
নওগাঁর মহাদেবপুরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ক্লিনিকে রেডিও লজিস্ট ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার আনিস এবার অর্থোপেডিকের ভূমিকায়। প্রতারিত হচ্ছে ভুক্তভোগী চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত দুই মে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের গোপালকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত লজির উদ্দিন এর পুত্র ইসমাইল হোসেনের (৭৫)নিজ বাড়িতে প্রতিপক্ষের আঘাতে ডান হাত ভেঙ্গে যায়। ওইদিনই সকাল দশটায় ইসমাইল হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্মরত রেডিওলজিস্ট আনিস উদ্দিন তাকে সুকৌশলে হাসপাতাল সংলগ্ন থ্রী স্টার ক্লিনিক তমিজ উদ্দীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে তিনি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে তার হাত প্লাস্টার করে দেন খাবার ওষুধ লিখে দেন। এর কিছুদিন পর বৃদ্ধ ইসমাইলের হাতের অবনতি হলে তাকে পুনরায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ইসমাইলের মেয়ে উপজেলার বুজুরকান্তপুর গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী নাদিরা বেগম মান্দা উপজেলার খুদিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাহার উদ্দীনের স্ত্রী সেলিনা বানু, ইসমাইলের ভাতিজা আমিনুর রহমান তাদের নিজ নিজ বাড়িতে গেলে তারা বলেন, ঘটনার দিন আনিস তাদেরকে ডাক্তার পরিচয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। কিন্তু তাদের রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তারা জানতে পারেন আনিস হাসপাতালে রেডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।কেন তিনি তাদের রোগীর হাত প্লাস্টার করে দিলেন তা তাদের বোধগম্য নয় ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আমিনুর রহমান জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার আখতারুজ্জামান আলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা উভয়ে জানান, কোনভাবেই রেডিওলজিস্ট হিসেবে অর্থোপেডিক এর কাজ করা আইনগত ভাবে যাবে না। তার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জেলা সিভিল সার্জন জানান। ব্যাপারে থ্রী ষ্টার ক্লিনিক তমিজ উদ্দিন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী সাজ্জাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যে কেউ যেকোনো অপারেশন করতে পারবে। এমনকি ইচ্ছে করলে তুমিও করতে পারবে বলেও সাজ্জাদ হোসেন রহস্যময় ভাবে তার অভিমতে জানান। এছাড়া আনিস আরএমপির ট্রেনিংপ্রাপ্ত ডাক্তার। বিধায় তার পক্ষে অপারেশনে কোনো আইনগত বাধা নেই বলেও সাজ্জাদ জানান। অপরদিকে রেডিওলজিস্ট আনিসের সাথে যোগাযোগ করতে তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার তথ্য দিতে সাংবাদিকদের দফায় দফায় হয়রানি করেন। সর্বশেষ মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল।এরকম ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার দিয়ে ক্লিনিকের মালিকেরা বেপরোয়া ক্লিনিক সিন্ডিকেট খুলে বসেছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে এসব তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ