নওগাঁর মহাদেবপুরে সদর খাদ্য গুদামের ৫০ মিটার দেয়াল দুই মাস থেকে ভাঙ্গা ঃ দেয়াল ঘেঁষে অট্টালিকা নির্মাণের অভিযোগ

কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, নওগাঁ
নওগাঁর মহাদেবপুরে যে কয়টি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম খাদ্যগুদাম। যেমন মহাদেবপুর সদর খাদ্য গুদাম, মহিষবাথান খাদ্যগুদাম, মাতাজীহাট খাদ্য গুদাম, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস অন্যতম। এরকম সংরক্ষিত এলাকা কিভাবে অরক্ষিত হয়ে যায় তা নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ৩০ মে বিকেলে মহাদেবপুর খাদ্যগুদামের পূর্ব পাড়ে গিয়ে দেখা যায় গোডাউনের দেয়ালের ৫০ মিটার ভাঙ্গা রয়েছে। কিভাবে এটি ভাঙলো এর জন্য দায়ী কে তা কেউ বলতে পারছে না। ব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শওকত জামিল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গোডাউনের সংস্কার কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সে ভাঙতে পারে। এছাড়া খাদ্যগুদামের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান। খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সারাদেশে পুরাতন খাদ্যগুদাম আনুষঙ্গিক সুবিধাদি মেরামত এবং আকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনে সারাদেশে বিভিন্ন খাদ্য গুদামের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কি কি কাজ, কত টাকা ব্যয় হচ্ছে তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, সোনাকান্দা বন্দর, নারায়ণগঞ্জ এর তত্ত্বাবধানে ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে বিভিন্ন সংস্কার কাজের জন্য ঠিকাদার কাজ শুরু করেন। যা আগামী ২০২০ সালের ১৭ জুলাই শেষ হবে। এজন্য তারা একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোন টাকার অংকের হিসাব নেই। কি কি কাজ সেটিও উল্লেখ নেই। অবস্থায় কিছু কাজ করার পরেই করোনা ভাইরাস আসায় কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খুব দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান। যেহেতু খাদ্য গুদাম গুরুত্বপূর্ণ একটি সংরক্ষিত এলাকা। অথচ এভাবেই গত দুই মাস ধরে অরক্ষিত অবস্থায় আছে। আদৌতো খাদ্য গুদাম এভাবে অরক্ষিত থাকতে পারে কিনা ব্যাপারে এলাকাবাসী মিলন, সোহেল, আরমান মোশারফ,এনামুল, মিঠু, রুবেল, খলিল ময়েন অভিযোগ করে বলেন, গোডাউনের কর্মকর্তার যোগসাজশে এটি ভেঙে ফেলা হতে পারে। ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, করোনা ভাইরাস এর কারণে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। অপরদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোডাউনের ভাঙ্গা দেয়ালের সাথে গড়ে উঠছে আরসিসি পিলারের বিশাল অট্টালিকা। যেটি আইনগত ভাবে করতে পারে কিনা নিয়েও এলাকাবাসীর মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে ইতি মধ্যে অট্রালিকার পিলারের রড ভাঙ্গা দেয়াল অতিক্রম করে উপরে উঠে গেছে। ফলে গোডাউনের বেশকিছু গাছ কেটে ফেলতে হবে। স্থানীয়রা বলছেন, গত দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন বাসা নির্মাণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে ধান, চাল গম ক্রয় করে এই সংরক্ষিত গোডাউনে রাখেন। সেখানে কিভাবে দেয়াল ভেঙ্গে গত দুই মাস রাখা হয়েছে তা সবাইকে ভেবে তুলেছে। দ্রুত তদন্ত করে সংরক্ষিত এলাকায় সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে যেকোনো সময় গোডাউনের মালামাল বিনষ্ট হরিলুট হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আসলে দায় কার তার কোন সঠিক জবাব পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে কি এভাবে অপরিবর্তিত থাকবে সংরক্ষিত খাদ্য গুদাম। সুবিধাভোগীরা সরকারি জায়গা ব্যবহার করে গড়ে তুলবে অট্টালিকা। এর কি কোনো প্রতিকার হবে না। এটি এখন জনমনে প্রশ্ন। ব্যাপারে নির্মাণাধীন বাসার মালিক উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিনের পুত্র মাসুদ আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সে কোনো সরকারি জায়গা দখল করেনি বরং তার জায়গা সরকারি গোডাউন এর মধ্যে রয়েছে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ