নীলফামারী
প্রতিনিধি ॥ নীলফামারী পৌরসভার
মেয়র ও দুই চিকিৎসক
দম্পত্তি সহ জেলায় হোম
কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫২ জন। আজ
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ/২০২০)
দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিৎ কুমার বর্মন। তিনি জানান, ভারত ভ্রমনের পর সম্প্রতি দেশে
ফিরেন নীলফামারী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের
সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ এবং নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীলিপ কুমার রায় ও তার স্ত্রী
ডাঃ শেফালী রানী। আজ বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছায়
তারা নিজ বাড়িতে ঘরে হোম কোয়ারেন্টাইনে গিয়েছেন। তবে তারা সকলেই সুস্থ্য আছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কোভিড-১৯ প্রতিরোধ কন্ট্রোল
রুম জানান, গত ১ মার্চ
হতে ১৯ মার্চ জেলায়
বিদেশ ফেরা ৫২ জন ব্যক্তিকে
হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এর মধ্যে জেলা
সদরে ১৩জন, ডোমারে ১৪জন, ডিমলায় ১২জন, জলঢাকায় ৫জন, কিশোরীগঞ্জে ৩জন ও সৈয়দপুরে ৫জন
রয়েছেন। তাদের মধ্যে নীলফামারী পৌরসভার মেয়র ও সদর আধুনিক
হাসপাতালে দুই শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। ওই ৫২ জনের
মধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে ১৪ জন, ভারত
থেকে ১৩ জন, মালোয়েশিয়া
থেকে ৭ জন, দুবাই
থেকে ৪জন, সৌদি আরব থেকে ২জন, ইতালী থেকে ২ জন, মালদ্বীপ
থেকে ২জন, মরিশাস(পূর্ব আফ্রিকা) থেকে ২জন, কঙ্গো(মধ্য আফ্রিকা) থেকে ২জন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ১ জন, কাতার
থেকে ১ জন, ব্রনাই
১, বাহরাইন(মধ্য প্রাচর) থেকে ১ জন এসেছেন।
বর্তমানে তারা সকলে সুস্থ্য আছেন। নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি ভারতের যে এলাকায় গিয়েছিলাম
সেখানে করোনা ভাইরাসের কোনো রোগি সনাক্ত হয়নি। তার পরেও ভারত থেকে ফেরার পর বাড়িতে ছিলাম।
আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানে করোনা আক্রান্ত নয়, এটা শুনেও অনেকে আতঙ্কিত হন। এ বিষয়ে সবাইকে
জানতে হবে এবং এর সম্পর্কে সচেতনতা
বাড়ানো দরকার। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, গত ১ ডিসেম্বর
থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত
জেলায় বিদেশ ফেরতে ৮৯ জন। ইতোমধ্যে
৩৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পূর্ণ হয়েছে এবং তারা সুস্থ্য আছেন। তিনি জানান, নোবেল করোনা মোকাবেলায় ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ১৪টি কক্ষে ৫৮টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছি। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল
১১টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলার ছয় উপজেলা পরিষদের
চেয়ারম্যান, চার পৌরসভার মেয়র ও ৬০ ইউনিয়নের
ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামুলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এলজিএসপির প্রকল্পের প্রতিজন চেয়ারম্যানকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রচারনা চালানোর জন্য ২৫ হাজার টাকা
করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিৎ কুমার বর্ম্মন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( নীলফামারী সার্কেল) রুহুল আমিন সহ প্রমুখ বক্তব্য
রাখেন। জেলা প্রশাসক উক্ত সভায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা প্রচারনায় প্রতিটি ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যানকে আহবায়ক করে ২১ সদস্য করে
কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এসময় জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রস্তুতি মুলক কর্মসুচীর অংশ হিসেবে নীলফামারীর বিনোদন কেন্দ্র নীলসাগর বন্ধ ঘোষণা ছাড়াও জনসমাগম ঘটে এমন সব অনুষ্ঠান বন্ধের
নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত
এসব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা যাবে না। এছাড়া কোথাও কোচিং সেন্টার চালু থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুশিয়ারী দেয়া হয়। বিশেষ করে দ্রব্য মুল্যের উর্দ্ধগতি ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট সার্বনিক কাজ করবে প্রতিটি এলাকায়। তিনি বলেন, যারা কোয়ারেন্টিন মানবে না আমরা তাৎনিক
ভাবে আইন প্রয়োগ করবো ও তাদের তা
মানতে বাধ্য করবো। সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, আমরা সচেতনতা সৃষ্টি করছি। আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। বিশেষ করে যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তারা যাতে নিশ্চয় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। একা স্বাস্থ্য বিভাগ বা আমার পে
সম্ভব নয় এজন্য সবার
সহযোগীতা প্রয়োজন।
0 মন্তব্যসমূহ