ঢাকার ২ সিটির নির্বাচন শেষে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল

নিউজ ডেস্কঃ
রাজধানী দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কারণে ভর মৌসুমেও পুরো জানুয়ারি মাস চরম পর্যটক খরা গেছে। পুরো এক মাস জুড়ে কক্সবাজারে পর্যটক আসেনি। এতে করে পর্যটন কেন্দ্র ও পর্যটন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চরম মন্দায় ছিলো। এই নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বেশ হতাশ ছিলো। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন শেষ হলে কক্সবাজারে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন উপলক্ষ্য করে শুক্রবার থেকে পর্যটকের ঢল নেমেছে।
কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘিরে কক্সবাজারের বিপুল সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে এসেছে। একদিনেই অন্তত অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক এসেছে ধারণা করা হচ্ছে। আকস্মিক এই বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসায় কক্সবাজার শহরসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের প্রাণচাঞ্চল্য আর পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে। এতে করে পর্যটন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আবদুর রহমান জানান, পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারে যে পরিমাণ পর্যটক বেড়াতে আসে তার মধ্যে সব সময় অর্ধেক থাকে রাজধানী ঢাকার লোকজন। কেননা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে ঢাকার লোকজন তুলনামূলকভাবে কক্সবাজার বেশি বেড়াতে আসেন। কিন্তু এর মধ্যে নতুন বছরকে সামনে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ে ঢাকার মানুষ নির্বাচনমুখী হয়ে পড়ে। পুরো জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ঢাকার সকল মানুষ নির্বাচন বেশ ব্যস্ত ছিলো। এ কারণে কোনোভাবেই তারা বেড়াতে বের হয়নি। যার কারণে ওই এক মাসজুড়েই কক্সবাজারে পর্যটকের আনাগোনা তেমন ছিলো না। নির্বাচন সম্পন্ন হলে ঢাকার মানুষ বেড়াতে বের হয় এবং তারা কক্সবাজারকে প্রাধান্য দিয়ে এখানে একপ্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পর্যটকের পদভারে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। সৈকতে পদচারণা করা প্রায় সব পর্যটক ঢাকাসহ বিভিন্ন দূরবর্তী স্থান থেকে বেড়াতে এসেছেন। এভাবে সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজারসহ সব পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকের উপস্থিতি বেশ বেড়েছে।
কথা হলে ঢাকার কামরাঙ্গীচর থেকে আসা পর্যটক আবদুল আজিজ বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন বিতর্কিত হয়ে উঠলেও বিএনপিসহ বিভিন্ন দল অংশগ্রহণ করায় ঢাকা দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের স্বত:স্ফুর্ত আগ্রহ ছিলো। তাই ভোট নিয়ে ‘ভোটপাগল’ ঢাকার মানুষ দারুণ ব্যস্ত ছিলো। নানাভাবে ভোটারদের আঁকড়ে রেখেছিলো এই নির্বাচন। তাই ওই সময় খুব প্রয়োজন ছাড়া ঢাকার স্থায়ী লোকজন কোথাও বের হয়নি।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে হামিদুল হক বলেন, ‘প্রতি বছর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একবার কক্সবাজারে বেড়াতে আসি। এবারও তেমন পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পড়ে গেলে নির্বাচন নিয়ে বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই জানুয়ারিতে আসার কথা থাকলেও নির্বাচনি আমেজকে পাশ কাটিয়ে আসা হয়ে উঠেনি। নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে এসে পড়লাম।’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘পর্যটকের আগমণ বাড়ায় কক্সবাজারের সব হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউজ ও কটেজগুলোতে ভালো ব্যবসা হচ্ছে। সবখানে জমে উঠেছে। এতে পুরো পর্যটন শিল্পে বেশ চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। খুশি হয়ে উঠেছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা।’
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটিকে ঘিরে কক্সবাজারে পর্যটক বেড়েছে। এসব বাড়তি পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। কোথাও কোনো ধরণের নিরাপত্তা ঘাটতি নেই। পর্যটকেরা নির্বিঘেœ বেড়াতে পারবেন।’
/সিবিএন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ