বিচার বহির্ভূত হত্যা সম্ভবত বৈধ হতে যাচ্ছে - রুমিন ফারহানা

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বৈধ করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের আলোচনায় রুমিন তাঁর শঙ্কার কথা বলেন।


রুমিন ফারহানা বলেন, ‘২০১৯ সালে গড়ে প্রতিদিন একজনের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড খুব সম্ভবত বৈধ হতে যাচ্ছে। কারণ, গতকাল আমরা দেখেছি সরকার ও বিরোধী দল—দুই দলই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে কথা বলেছে।’



গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ ও মুজিবুল হক ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে হত্যা করার দাবি জানিয়েছিলেন। সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সাংসদ তোফায়েল আহমেদ ও তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী জাপার দুই সাংসদের বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন।

আজ সংসদে জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের আলোচনায় রুমিন ফারহানা বলেন, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক কেন বারবার মার খান—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো তাঁরও একই প্রশ্ন। এর জবাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে থাকার কথা। নুরুল হক বারবার মার খান, কারণ প্রথমবার মার খাওয়ার পর কোনো বিচার হয়নি।
রুমিন বলেন, এই দেশে আইনের শাসন তার নিজ গতিতে চলে না। চলে সরকারের গতিতে। আইন সরকারের গতিতে চলে বলেই সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৭০ বারের মতো পেছানো হলো। যেকোনো ঘটনা ঘটায় সরকার যেভাবে চায়, ঠিক সেভাবেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।


রুমিন বলেন, ‘দেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছু নজির আমরা দেখতে পেলাম আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন। ২০১৯ সালে গড়ে প্রতিদিন একজনের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।’


রুমিন বলেন, গত বছর গ্রেপ্তারের আগে নির্যাতনে মারা গেছে ৬ জন। গুলিতে নিহত হয়েছে আরও ১২ জন। এ রকম শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণের পর ৪৮৭ শিশু নিহত হয়েছে। গণপিটুনিতে মারা গেছে ৬৫ জন। ১৪২ জন সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতন, হামলা, হুমকির শিকার হয়েছেন। কর্তৃত্ববাদী সরকারের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রধান অস্ত্র ভীতির পরিবেশ তৈরি করা এবং যেকোনো উপায়ে ভিন্নমত দমন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার, পুলিশ প্রশাসনকে ব্ল্যাংক চেক দেওয়া, বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ।
/প্রথম আলো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ