প্রতিবন্ধী শিশুদের নতুন ঠিকানা গাড়াগ্রাম প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)প্রতিনিধি:
বেবী আক্তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সরওয়ার হোসেন আকাশ ও শান্ত আক্তার শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু তাতে কি তাদের গান শুনে সবাই মুগ্ধ। জামরুল বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। বয়স ১২ বছর । অথচ মুঠোফোনের এমন কোনো প্রোগ্রাম নেই যেটা সে দক্ষতার সঙ্গে অপারেট করতে পারে না  জান্নাতি ও ময়নার কুঠির ও বুটিকের কাজ দেখে সবাই মুগ্ধ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কর্তৃক ১৮ই ডিসেম্বর ২০১৯ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার ১৭ পৃষ্টায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রতিবন্ধিতা সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯ অনুযায়ী ০১/০১/২০২০ইং তারিখে গাড়াগ্রাম প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে  দুপুর ১২:০০ ঘটিকা থেকে ১২:০৫ ঘটিকা পর্যন্ত ৫(পাঁচ)মিনিটের ভিডিওতে অংশ গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনিত কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারমোঃ আব্দুল হান্নান-এর উপস্থিতিতে ভিডিও ধারণ করা হয়। উক্ত ভিডিওতে ছাত্র/ছাত্রীদের Assembly -এর ছবি, শিক্ষকবৃন্দের ছবি, প্রত্যেক ক্লাসরুমের ছবি এবং সম্পূর্ণ স্কুল ভবনের ছবি।বিদ্যালয়টি স্বাস্থ্যকর ও মনোরম পরিবেশে মনমুগ্ধকর জায়গায় অবস্থিত  হওয়ায় পরিদর্শন কালে তিনি ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করেন। শিক্ষক/শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। বই বিতরণের শুভ উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে আনন্দে আপ্লুত হয়ে বলেনএরকম এত সুন্দর পরিপাঠি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় আগে কখন ও এভাবে দেখিনি। বিদ্যালয়টি যেন এমপিও ভূক্তি হয় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ওই বিদ্যালয়ে ৫ (পাঁচ) মিনিটের ভিডিও ধারণের সময় বিদ্যালয়ের নথিপত্রে ও রেকর্ডে দেখা গেছেপ্রথমে বিদ্যালয়টিতে ৯০ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে বিদ্যালয়টির অবকাঠামোপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ বৃদ্ধির জন্য গানবাজনার যন্ত্রপাতিশারীরিক কসরতের যন্ত্রপাতি ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যায় ডাক্তারের ব্যবস্থা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা ও ছুটির পর বাড়িতে রেখে আসার কারণে বিদ্যালয়টিতে দিন দিন শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ৪০ জনএক্টিভিটি কোর্সে ৪০ জনবৃত্তিমূলক শিক্ষা শ্রেণিতে ৭৩ জনমা ও শিশু শ্রেণিতে ১৯ জনবিশেষ শ্রেণিতে ৬৫ জনশিশু শ্রেণিতে ৬৫ জন শিক্ষার্থী মিলে মোট ৩০২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে সাতজন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন করে শিক্ষক থাকার নিয়ম থাকলেও এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ২০ জন। একটি সংস্থা থেকে পাওয়া প্রশিক্ষণ ও নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে এখানে চলে পাঠদান কার্যক্রম

প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেনবিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়ে অদ্যাবধি সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টি কিশেরগঞ্জ উপজেলার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি আরো বলেনআমরা অনেক আশা নিয়ে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে বিদ্যালয়টি চালিয়ে আসছি। বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এই অবহেলিত প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে সমাজের মূলধারার যোগ্য মানুষ হিসেবে যুক্ত হতে আমরা সহায়ক ভূমিকা রাখতে চাই

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা কাজলী বেগম বলেনআমার বাবার ৫ সন্তান। ৪ ছেলে ও ১ মেয়েসেই মেয়েটি আমি। আমার ৪ ভাইয়ের মধ্যে দুজন প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সমাজে তারা শুধু বোঝা। সমাজে তাদের কোনো মূল্য নেই। আর এই কষ্ট আমাকে কুরে কুরে খায়। আর সেই চিন্তা থেকে আমি আমার ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি

উক্ত বিদ্যালয়টি ২০১৩ইং সালে ২০ শতাংশজমির উপর নির্মিত হয়। ৮ শ্রেণী কক্ষে পাটদান কর্মসূচী ও শিক্ষকদের অফিস কক্ষ সহ কুঠির ও বুটিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কক্ষরয়েছে। ছাত্র/ছাত্রীদের পরিবহনের জন্য রয়েছে ৪টি ইজি বাইক ও বিনোদনের জন্য মাঠে তৈরি করা হয়েছে শিশু পার্ক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ