কক্সবাজারে ভুতুড়ে রিসোর্টে অস্ট্রেলিয়ান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৩

আব্দুল আলীম নোবেল ও এম আলমঃ
অন্ধকার ঘনিয়ে আসলে সৃষ্টি হয় এক ভুতুড়ে পরিবেশ। নেই কোন বৈদ্যুতিক আলো, যাতায়তেরও চরম কামখেয়ালিপনা। এমনকি সাইকেল নিয়ে যাওয়া তো দূরের মানুষ চলাচলের পথও নেই। কক্সবাজারের রামু থানাধীন পেচারদ্বীপ এলাকায় সাগরকূলে প্যারাবনের ধারে গড়ে উঠেছে নাম ঠিকানা ও অনুমোদন বিহীন এক রিসোর্ট। সেখানেই ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন অস্ট্রেলিয়ান পর্যটক তরুণী এলিসা বুকি (১৯)। গত ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড় টার দিকে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা ২ জনকে আসামী করে রামু থানায় মামলা দায়ের হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হল রিসোর্টের মালিক শামিমুল হক শ্যাম, নাইট গার্ড আনোয়ার উল্লাহ, একই এলাকার আব্দুল গফুর। এরমধ্যে বিল্লাল পলাতক রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মারমেইডের মালিক আনিসুল হক সোহাগের ছোটভাই ঐ বেনামী রিসোর্ট মালিক শামিমুল হক স্যাম এর সাথে পর্যটক তরুণীকে ঘটনার দুয়েকদিন আগে থেকে ঘুরাফেরা করতে দেখে এলাকার মানুষ। ঘটনার দিন শামিমুল হক স্যাম এর সাথেই ঐ রিসোর্টে পর্যটক তরুণী এলিসা বুকি (১৯) অবস্থান করেছিল। রাতে ঘুমানোর আগে এলিসা বুকি (১৯) রিসোর্টে রেখে শামিমুল হক স্যাম বাড়ীতে চলে যায়। পরে মধ্যরাতে ঐ রিসোর্টের নাইট গার্ড আনোয়ার উল্লাহ তার সহযোগি একই এলাকার আব্দুল গফুর ও বিল্লালদেরকে ডেকে এনে বিদেশী এই তরুনীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বলে জানায় এলাকাবাসী। 

মারমেইডের এফএন্ডবি ম্যানেজার ইয়াসির আরফাত রিশাদ বলেন, ঐ বেনামী রিসোর্ট মালিক শামিমুল হক স্যাম মারমেইডের মালিকের ছোট ভাই হলেও তার ঐ রিসোর্টের ব্যাপারে আমরা অবগত নই। এই ঘটনাটি ঘটার পরই আমরা জানতে পেরেছি ওখানে এমন একটি রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়া মারমেইডের মালিক আনিসুল হক সোহাগ বর্তমানে দেশের বাহিরে রয়েছেন।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, ১৫ই ডিসেম্বর দিবাগত রাতে স্বল্প পরিচিত একটি রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন ঐ নারী। এই অপরিচিত রিসোর্টটির লোকেশনও অনেক দূরে নির্জন এলাকা। সাগরকূলের রিসোর্টির পেছন দিকে রয়েছে একটি বাড়ি। এমন একটি রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন তিনি। সেখানেই রাতে তার রুমে ৩ ব্যক্তি ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঐ নারী চিৎকার দিলে আক্রমণ কারীরা পালিয়ে যায়। পরে ঐ নারী ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে তাৎক্ষনিকভাবেই পুলিশ সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে তার কথানুযায়ী হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের সহায়তায় তাকে একটি হোটেলে নেয়া হয়। এছাড়াও ঐ বিদেশী নারী কক্সবাজার ছেড়ে ঢাকায় ফেরার কথা বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ঐ রিসোর্টের নাইটগার্ড আনোয়ার উল্লাহ ও তার সহযোগী একই এলাকার আব্দুল গফুর এবং জড়িত সন্দেহে রিসোর্টের মালিক শামিমুল হক শ্যামকে আটক করা হয়েছে। আটক ৩ জন সহ পলাতক আসামী বিল্লাল ও অজ্ঞাতানামা ২ জনের বিরুদ্ধে রামু থানার এস,আই শৌরভ পাল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, ঐ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তারমধ্যে রিসোর্ট মালিক শামিমুল হক শ্যামকে সন্দেহাতিত ভাবে আটক করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ