সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেসের ৮টি বগি লাইনচ্যুত, ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন

ডেস্ক নিউজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারো সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৮টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় ট্রেনের লোকো মাস্টার এবং সহকারী লোকো মাস্টার আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের আগে লেভেল ক্রসিংয়ে রংপুর আন্তঃনগর এক্সপ্রেসটি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের ইঞ্জিনটি ছিঁড়ে রেলপথের পাশে উল্টে পড়ে আগুন ধরে যায়। পরে ওই আগুন লাইনচ্যুত আরও তিনটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সময় ট্রেনের যাত্রীরা দ্রত জানালার কাচ ভেঙে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়। ওই সময় বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনায় রেলকর্মীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়রংপুর মিটার গেজের এই এক্সপ্রেসটি ঢাকা থেকে লালমনিরহাট যাচ্ছিল। উল্লাপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের ৫০ মিটার দূরে রেলপথ পরিবর্তনের স্থানে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে লাইনচ্যুত সাতটি বগির মধ্যে দুটি বগি মূল রেলপথ থেকে অন্তত ১৫ মিটার দক্ষিণ দিকে চলে যায়। ট্রেনে মোট ১৪টি বগি ছিল। ঘটনার পরপরই উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুর্ঘটনা স্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নেভানো উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। উল্লাপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের মাল সংরক্ষণের জন্য ট্রেনটি ঘিরে ফেলেসিরাজগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের উপ-পরিচালক মঞ্জিল হক ঘটনাস্থলে জানান, দুর্ঘটনার পর আধা ঘন্টার মধ্যে আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। উল্লাপাড়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার নাদির হোসেন জানান, দুর্ঘটনার পরে প্রথমে রংপুর এক্সপ্রেসের উল্টে যাওয়া ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায় এবং আগুন দ্রত পার্শ¦বর্তী বগিগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। তিনটি বগির শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং অপর দুইটি বগি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ব্যাপারে ঘটনাস্থলে থাকা উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, তারা দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান করেন। ঘটনার পরে উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান পৌর মেয়র এস.এম. নজরুল ইসলাম দুর্ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সহযোগিতা করেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানান, ট্রেনের ড্রাইভার সহ - জন রেলকর্মী আহত হয়েছেন। এদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছেস্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রেলপথের ত্রটির কারণে এবং সিগন্যাল ভুলের কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনায় কবলিত হয়। তবে উল্লাপাড়া স্টেশনে দায়িত্বরত সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম সিগন্যাল ভুলের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, রেলপথের ত্রটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ব্যাপারে পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এই মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে বিভাগীয় ট্রাফিক কর্মকর্তা (ডিটিও) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দিকে দুর্ঘটনার পর দুপুর দুইটা থেকে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ উত্তরাঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। অপরদিকে উল্লাপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের কয়টি বগি দাঁড়িয়ে থাকায় প্রায় ঘন্টা পাবনা-বগুড়া পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলা বন্ধ হয়ে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ