রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হচ্ছেনা : আরআরসি আবুল কালাম

আব্দুল আলীম নোবেলঃ
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের স্বদেশে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হচ্ছেনা। গত মঙ্গলবার ও বুধবার সাক্ষাৎকার নেয়া ২৯৫ জন রোহিঙ্গা শরনার্থীর মধ্যে ১ জন শরনার্থীও প্রত্যাবাসনে রাজী না হওয়ায় বৃহস্পতিবার পূর্বনিধারিত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মূলত স্থগিত করা হয়েছে। উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পের ২৬ নম্বর ইউনিটে বৃহস্পতিবার ২২ আগষ্ট বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে দেয়া এক প্রেস ব্রিফিং এ শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোঃ আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) এ কথা জানান। মিয়ানমার সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া ২২ হাজার রোহিঙ্গা শরনার্থীর তালিকা হতে গত ১৫ আগস্ট ৩ হাজার ৪ শ’ ৫০ জন রোহিঙ্গা শরনার্থীর বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট মায়ানমারে স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র দেয়। এ ছাড়পত্রের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাবাসনের জন্য সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের জন্য ছাড়পত্র পাওয়া ৩৪৫০ জন রোহিঙ্গা শরনার্থীর মধ্যে গত মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার কুতুপালং শালবন ক্যাম্পের ২৯৫ জন শরনার্থীর ইউএনএইচসিআর কর্তৃপক্ষ সাক্ষাৎকার নেয়। কিন্তু একজন রোহিঙ্গা শরনার্থীও স্বদেশে মিয়ানমারে ফিরে যেতে আগ্রহী প্রকাশ করেনি। বরং সাক্ষাৎকার দেয়া রোহিঙ্গারা শরনার্থীরা ৫ টি কড়া শর্ত দেয়। শর্তের মধ্যে মিয়ানমারে যাওয়ার আগে তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়া, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, উচ্ছেদকৃত বাড়িভিটে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের ফিরিয়ে দেয়া, জাতিসংঘের তত্বাবধানে রাখাইনে তাদের রাখা ইত্যাদি। সাক্ষাৎকারে অনেকে প্রয়োজনে গুলি খাব, তারপরও এসব দাবী বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ফেরত যাবেনা বলে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা ইউএনএইচসিআর-কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ করা ছাড়া কোন পথ খোলা ছিলনা বলে প্রেস ব্রিফিং এ শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) জানান। তিনি বলেন-বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসনে সবসময় প্রস্তুত, তাই প্রত্যাবাসন যে কোন সময়, যে কোন দিন হতে পারে। ব্রিফিং এর সময় তাঁর সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের রোহিঙ্গা সেলের প্রধান ও যুগ্ম সচিব রেজোয়ান আহমদ, কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আশরাফুল আফসার (উপসচিব), উখিয়ার ইউএনও নিকারুজ্জামান চৌধুরী, চীনা পরিদর্শকদল সদস্যরা সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসংগত, এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর নির্ধারিত সময়ে রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদের মুখে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। ওই সময় উখিয়ার ঘুমধুম ও টেকনাফের নাফ নদীর তীরে কেরুণতলী (নয়াপাড়া) প্রত্যাবাসন ঘাট নির্মাণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে, টেকনাফের প্রত্যাবাসন ঘাটে নির্মাণ করা প্যারাবনের ভেতর দিয়ে লম্বা কাঠের জেটি, ৩৩ টি আধাসেমি টিনের থাকার ঘর, চারটি শৌচাগার রয়েছে। সেখানে ১৬ আনসার ক্যাম্পের দায়িত্ব পালন করতো। সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসনের খবর প্রচার হওয়ায় সে সেট ও অবকাঠামো গুলো পুণরায় সংস্কার ও মেরামত করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ