
বিশেষ প্রতিবেদক :কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার এবং জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, রাজনৈতিক প্রভাব ও ছোট ভাই নুরুল হক জুডিশিয়াল জজ পরিচয় দিয়া এবং বিচার বিভাগের পদমর্যাদার নাম ভাঙিয়ে তিনি এলাকায় একের পর এক জমি, দোকানপাট ও মার্কেট দখল করছেন। শুধু তাই নয়, মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে জেল খাটানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জানা যায় খুনিয়াপালং এলাকার সাবেক পুলিশ অফিসার মরহুম এম এ সামশুল হকের ছেলে বর্তমানে কানাডা প্রবাসী এম এস আজিজুল হকের নিজস্ব মার্কেট দোকানপাট সহ বিগত তিন দিন আগে জবর দখল করে জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব।
কানাডা প্রবাসীর অভিযোগ:কানাডা প্রবাসী এম এস আজিজুল হক অভিযোগ করেন,খুনিয়াপালং এলাকায় তার মালিকানাধীন মার্কেট (ভাই মরহুম শাহিনুল হক শাকিল এর জায়গা সম্প্রতি হাবিবুর রহমান হাবিব জবরদখল করেছেন। তিনদিন আগে দোকানের তালা ভেঙ্গে দখলের পর তার দেশে থাকা পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং কানাডা প্রবাসী এম এস আজিজুল হক দেশে আসলে মেরে ফেলার হুমকি দিতেছে,
তিনি বলেন—“আমার কষ্টার্জিত টাকায় করা মার্কেট দখল করেছে। এখন আমার পরিবারও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি একজন এতিম, আমার বাবা মা, ভাই বোন মারা গেছে এবং আমি একা বিদায়, আমার এই পৃথিবী তে কেউ নাই বিদায় আজ আমি অসহায়, প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, আমাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়বে।”
ভুক্তভোগীদের নাম-পরিচয়সহ অভিযোগ:
অছিউর রহমান অভিযোগ করেন, তার জমি জোর করে ধকল করেছে । মামলা দিয়ে হয়রানি করায় তিনি ব্যবসা চালাতে পারছেন না।
স্থানীয় কৃষক আজিজজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন-তার বসতভিটার জমি দখল করে নিয়েছে। উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তিনি আরো জানান,প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাইনি।
আব্দুর রহিম, দোকানদার রহিম, অনাম, জেবুন নেসা কাকলি, গোলাম রহমান, কালু, আজিজজুর রহমান, অশিউর রহমান, ভুলু কোম্পানি, ছোট ব্যবসায়ী, ইটভাটার মালিক মঞ্জুর ও রাবেতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহ এলাকার ৪২ জন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন- অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটতে হয়েছে। বর্তমানে অনেকে জামিনে থাকলেও তার ভয়ে এলাকায় থাকতে সাহস পাচ্ছেন না।
বনভূমি দখলের অভিযোগ:
স্থানীয়রা জানান, হাবিবুর রহমান হাবিব বন বিভাগের প্রায় ১০০ একর সরকারি পাহাড় দখল করে নিয়েছেন। জজ নুরুল হক এর ক্ষমাতা দেখিয়ে বর্তমানে হাবিব এর বোন জামাই দৌলত সেখানে অবৈধ স্থাপনা করে বসত ভিটা করেছে, একজন স্থানীয় পরিবেশ কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন—“হাবিবের দখলদারির কারণে বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করছে।”
খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন—“হাবিবের বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক অভিযোগ আমরা শুনেছি। তবে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নেবে।”
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও):“এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন-“সরকারি বনভূমি দখল করে কেউ পার পাবে না। আমরা শিগগিরই অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযান পরিচালনা করব।”
রামু উপজেলা জামায়াতের আমীর হাসান বলেন- আমাদের দলে ভূমিদস্যুতা সন্ত্রাসী, দখলবাজ ও চাঁদাবাজদের স্থান নেই।
অভিযুক্ত জামায়াতে নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবকে অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার ফোন দেওয়ার পরেও মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য জানার সম্ভব হয়নি।
রামুর খুনিয়াপালংয়ের মানুষ আজ জবরদখল, হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কানাডা প্রবাসীর মার্কেট থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের বসতভিটা ও সরকারি বনভূমি—সব জায়গাতেই সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ। প্রশাসনের তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এ এলাকায় শান্তি ফিরবে না—এমনটাই মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

0 মন্তব্যসমূহ