ঠাকুরগাঁওয়ে না বুঝেই নীলগাইটি জবাইয়ের পরিকল্পনা করছিলো এলাকাবাসী


মেহেদী হাসান, ঠাকুরগাঁওঃ 

ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তবর্তী নাগর নদীর তীর এলাকায় বিরল প্রজাতির একটি নীলগাই আটকের পর জবাই করার পরিকল্পনা করেন এলাকাবাসী। তবে জবাই করার আগমুহুর্তে প্রাণীটিকে উদ্ধার করেন ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির কান্তিভিটা সীমান্ত ক্যাম্পের সদস্যরা। গত মঙ্গলবার সন্ধায় জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার শৌলা দোগাছি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

 বুধবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভেটেরিনারি সার্জন (ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা) জাহাঙ্গীর আলম জানান, উদ্ধার হওয়া প্রাণীটি একটি পুরুষ নীলগাই। চিকিৎসা দেওয়ার সময় সেটির গলায় ছুরি দিয়ে কাটাসহ দেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন দেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। নীলগাইটি এখন শঙ্কামুক্ত। তিনি আরও বলেন, নীলগাই এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হরিণবিশেষ বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি বন্য প্রাণী। একসময় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এদের দেখা গেলেও আমাদের এ অঞ্চলে এখন আর দেখা যায় না। 

 প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, অপরিচিত প্রাণীকে দেখতে পেয়ে এলাকার অনেক লোক একত্রিত হয়ে তাকে ধরতে সক্ষম হয়। প্রাণীটি ধরার সময় সেটি অতিরিক্ত দৌড় ঝাপের ফলে শরিরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হয় এবং অনেকটা হয়রান হয়ে একসময় বসে পড়লে এলাকাবাসী না বুঝেই সেটিকে জবাই করতে চায়। 

ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির কান্তিভিটা সীমান্ত ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার নিজামী বলেন, ‘অপরিচিত প্রাণী আটকের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করার চেষ্টা করছে। তাৎক্ষণিক তাদের কাছ থেকে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে আমরা ক্যাম্পে নিয়ে আসি এবং ভেটেরিনারি চিকিৎসক দিয়ে প্রাণীটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন, নীলগাইটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তুতি চলছে। 

 উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের যদুয়ার গ্রামে একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। পরে সেটি দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ