কালীগঞ্জে কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা", আটক এক

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাটঃ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে গত মঙ্গলবার(৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বানীনগর এলাকায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ওই কিশোরীর বাড়ি পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামে।

এ ঘটনায় শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ওই কিশোরী বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

পুলিশ জানান , ধর্ষনের ঘটনায় শুক্রবার(৯ অক্টোবর) রাতে রকি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রকি উপজেলার বানীনগর এলাকার রজব আলীর ছেলে। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে চিকিৎসার জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ আর ও জানায়,ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী ও গ্রেপ্তারকৃত রকি’র তথ্যমতে ধর্ষণের সাথে রকিসহ ৭ জনের নাম প্রকাশ করেছে। এবং ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকসহ ৩ জন সহ মোট ১০ জন কে আসামি করা হয়েছে। সালিশকারী হিসাবে অজ্ঞাত রয়েছে আরও ৪/৫ জন আসামী।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ট্রেনে পাটগ্রাম থেকে এসে কালীগঞ্জের কাকিনা রেল স্টেশনে নামলে স্টেশনে থাকা রকি কৌশলে তাকে আর ট্রেন ধরতে না দিয়ে ইজিবাইকে গন্তত্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সেখান থেকে নিয়ে যায়।

এরপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে রাতে একটি সেচপাম্পের ঘরে নিয়ে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে। এরপর সারারত আরও কয়েকটি জায়গায় একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ শেষে ভোরের দিকে ট্রাকে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে বাধ সাধে সে পরদিন সকালে রকির বাড়ীর খোঁজ নিয়ে বিচার নিয়ে গেলে বাবা-মায়ের সামনে তাকে মারধরও করা হয়।

পরে সেখান থেকে স্টেশন এলাকার একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় ওই কিশোরী। সেখান থেকে গতকাল শুক্রবার কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের ঘটনাটি জানায়। 

কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব থেকে মেয়েটিকে উদ্ধারের কথা জানিয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কাকিনা রেল স্টেশন থেকে মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে অন্তত সাতজন ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর থেকে মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই এলাকায় সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানাও মেয়েটিকে না দিয়ে সেখান থেকে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়’।

অনলাইন পত্রিকার সম্পাদককে মামলার আসামি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনলাইনের ওই সাংবাদিক সালিশ বৈঠক থেকে ঘটনাটিকে পুঁজি করে বেশকিছু টাকা পয়সা নিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠাতে চাপ সৃষ্টি করেন’। ওই কিশোরীর মা জানান, পাটগ্রামের কুচলিবাড়িতে বড়বোনের বাড়িতে কয়েকদিন আগে রেখে এসেছিলেন ঘটনার শিকার মেয়েটিকে। এই অবস্থায় আজ তিনি খবর পান যে, তার মেয়ে কালীগঞ্জ থানায় আছে। খবর পেয়ে তিনি থানায় এসেছেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ফরহাদ হোসেন মন্ডল জানান, ঘটনার সাথে জড়িত ১ জনকে গ্রেফতারের পর লালমনিরহাট জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ