চট্টগ্রাম এপিক হেলথ কেয়ারে সেবার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ রোগীদের

এন আলম আজাদঃ চট্টগ্রাম বিভাগে বেসরকারি হাসপাতালগুলো চলছে অবহেলা অনিয়ম ও ব্যবসার ওপর ভর করে।চিকিৎসার জন্য যাওয়া একাধিক ভুক্তভোগী এসব হাসপাতালে স্বজনদের নিয়ে চিকিৎসার পাওয়ায় আশায় গেলেও তেমন কোন আশানুরূপ সুফল পাচ্ছে না। চট্টগ্রামের চকবাজারে অবস্হিত এপিক হাসাপাতালটি তার মধ্যে অন্যতম। এমনটি অভিযোগ বাঁশখালী থেকে ঐ হাসাপাতালে অসুস্থ ভাইকে নিয়ে যাওয়া এহসান নামক এক যুবকের। এ হাসাপাতালে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভ্যার্থনা কক্ষে আলাপ করা গেলেও কর্তৃপক্ষ কিংবা হাসপাতালের কোন ডাক্তার রোগীর স্বজনদের সাথে আলাপ করতে নারাজ। চট্টগ্রামে রোগীকে সেবা দেয়ার নামে ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য বেসরকারী হাসপাতাল, ডায়গনস্টিক সেন্টার, হেলথ কেয়ার ও ক্লিনিক গড়ে তোলে মোনাফা লোভী কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব স্বনামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান খোলে বসলেও কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি ঐসব হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তাররাও রোগীদের সাথে চিকিৎসার বিষয় নিয়ে সঠিক কোন মতামত দিতে নারাজ বলে জানান সেবাপ্রার্থী এহসান।

তিনি জানান, গত ১০ অক্টোবর তার ছোট ভাই এরফান পায়ে হাড়ভাঙ্গা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যান। সেখানে এপিক হেলথ কেয়ার চকবাজার শাখায় নিয়ে গেলে অভ্যার্থনা কক্ষে দায়িত্বরত এক কর্মচারী অর্থোপেডিক্স ডাক্তার ফাহাদ গনিকে দেখানোর পরামর্শ দেন। কিছুক্ষণ পর এহসান তার ভাই এরফানকে ডাক্তার কক্ষে নিয়ে গেলে তাদের কারোর সাথে কোন প্রকার আলাপ আলোচনা না করে বেন্ডিজ করা শুরু করে দেন হাসাপাতালের কর্তব্যরত ঐ ডাক্তার। এসময় এহসান তার ভাইয়ের অবস্থা জানতে চাইলে ডাঃ ফাহাদ গনি কোন কিছু না বলে তিক্ত ও বিরক্ত মনোভব পোষণ করেন। এতে এহসান ডাক্তারের কোন কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তার এক বড় ভাইয়ের সাথে মুঠোফোনে রোগীর অবস্থার ব্যাপারে কথা বলার জন্য অনুরোধ করলেও ডাক্তার সাড়া না দিয়ে তিক্ততার সাথে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এমনকি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীও এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি আরো জানান, টাকার কুমিরে পরিনত এসব বেসরকারী হাসপাতালে রোগীরা যায় সুস্থ হওয়ার আশা নিয়ে। কিন্তু এসব মোনাফা লোভী বেসরকারী হাসপাতাল গুলো চিকিৎসা সেবাতো দূরের কথা রোগী ও স্বজনদের সাথে এমন দৃষ্টতাপূর্ণ আচারণে রোগীর পাশাপাশি স্বজনেরাও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়।

সূত্র জানায়, করোনার সময় ঐ হাসাপাতালটি করোনা রোগীর পরীক্ষা করার অনুমতি পেয়েও করোনা পরীক্ষা শুরু করতে দেরি করায় পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টেস্ট স্থগিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে চট্টগ্রামে এপিক হেলথ কেয়ার নামক ঐ হাসাপাতালটিও রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই হাসাপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা রত বেশ কয়েকজন রোগির স্বজনরাও জানান, হাসাপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম রোগীদের অবহেলা ডাক্তারদের খেয়ালীপনা সহ চিকিৎসার নামে হরিলুটের বর্ণনা। তাদের দাবি সারাদেশের সরকারি বেসরকারি হাসাপাতাল গুলোর বেসামাল অনিয়ম দূর্নীতির সামাল দিতে সংশ্লিষ্ট আইনী সংস্হা গুলোর এতো তৎপরতার মাঝেও এই এপিক হেলথ কেয়ার কীভাবে এসবের সামাল দিচ্ছে তা প্রশ্নের উদ্যেগ জনমনে।

এই বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য পরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগ চট্টগ্রাম ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনুমোদিত হাসপাতালগুলোতে আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করে থাকি। তবে কোন সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগ পেলে ঐ হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে­র বেসরকারী হাসপাতাল আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রাম নগরের হাসপাতালগুলো আমরা নিয়মিত মনিটরিং করি। এসব হাসাপতালে আমরা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। তবে কোন সেবাপ্রার্থীর নিকট হতে সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ