উৎকোচ নিয়ে ও প্রতিবন্ধির টাকা ও কার্ড কেড়ে নিলেন ইউপি সদস্যা

মো. কামরুল ইসলাম কামু, পঞ্চগড়ঃ 

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের পামুলী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যা প্রতিবন্ধির ভাতার টাকা  কেড়ে নিয়েছে। এমন অভিযোগ এনে একটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত দিয়ে ভূক্তভোগি। দেবীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাইফুল গত ১২ আগস্ট দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ইউপি সদস্য রাশেদা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। 

অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২ সেপ্টেম্বর অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হয়। তথাপি ও বিষয় টি আপোষ না হলে গত ১৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কে তদন্তের দায়িত্ব দেন কিন্তু অজ্ঞাত কারনে গত ৪ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাক্ষরিত তদন্তের নির্দেশনার পত্রটি হাতে পায় তদন্ত কর্মকর্তা।জানা যায়, 

দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের কাঠালতলী হাসানপুর এলাকার প্রতিবন্ধী সাইফুল ইসলামকে প্রায় তিন মাস আগে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেন পামুলী ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের  মহিলা সদস্য রাশেদা বেগম। 

রাশেদা বেগম ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে কার্ড করে দিবেন বলে জানিয়ে দেন। শর্ত অনুযায়ী কার্ড পাওয়ার পূর্বে রাশেদা বেগমকে ৩ হাজার টাকা প্রদান করেন ভূক্তভোগি সাইফুল ইসলাম। এরপর কার্ড পেলে প্রথমবার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের লক্ষীরহাট শাখা থেকে ৯ হাজার টাকা উত্তোলনের পর ব্যাংক থেকে বেরিয়ে আসার পরপরই রাশেদা বেগম সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের কার্ড টি কেড়ে নেন। 

পরবর্তীতে ব্যাংক এশিয়ায় একাউন্ট খুলতে মূল কার্ডটির প্রয়োজন হলে রাশেদা বেগম কার্ড ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ৫’শ টাকা দাবি করেন।এ ঘটনায় প্রতিবন্ধী সাইফুল ইসলাম গত ১২ আগস্ট দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত  ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে শুনানি হয়। 

শুনানি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান ইউপি সদস্য রাশেদা বেগমকে এক ঘন্টার মধ্যে ভুক্তভোগীকে টাকা ফেরত দিতে বলেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে বেড়িয়ে আসার পর রাশেদা বেগম টাকা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। 

এরপর ভুক্তভোগি সাইফুল ইসলামের মা হামিদা বেগমকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য মামলার ভয়ভীতি দেখায় বলে জানান অভিযোগকারি সাইফুলের মা হামিদা বেগম।অভিযোগকারী সাইফুল ইসলাম জানান আমার কাছে ইউপি সদস্য রাশেদা বেগম প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার জন্য ৩ হাজার টা নেয়। আমি কার্ড পেয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা ৯ হাজার টাকা কৃষি ব্যাংক থেকে তুললে সেই টাকা আর কার্ড ও কেড়ে নেয় ইউপি সদস্য রাশেদা। 

আমি কার্ড ফেরত চাইলে ও আমাকে কার্ড ফেরত দেয়নি। তার পর আমি ইউএনও বরাবরে অভিযোগ করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুনানি হলে ইউএনও ইউপি সদস্য রাশেদাকে ১ ঘন্টার মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলেন কিন্তু আমাকে টাকা ফেরত না দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে জোর করে ২ হাজার টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। 

এখন কয়েক দিন যাবত ইউপি সদস্য রাশেদা বেগম ও তার লোকজন আমার বাড়িতে এসে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভয়বীতি দেখিয়ে আসছে। ইউপি সদস্য রাশেদা বেগম অভিযোগ তুলে নিলে আমাকে টাকা ফেরত দিতে চেয়েছে।ওই এলাকার ইব্রাহীমের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী ইদ্রীস আলী জানান, 

ইউপি সদস্য রাশেদা তার কাছ থেকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা নেয় এবং ব্যাংক থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা ৯ হাজার টাকা তুললে সেই টাকা ও কার্ড টি ইউপি সদস্য রাশেদা কেড়ে নেয়। ইদ্রীস আলী আরও জানান, ইউএনও অফিসে আমি গেলে আমাকে ২ হাজার টাকা  দিয়ে জোর করে বাড়িতে পাঠায়ে দেয়। 

প্রতিবন্ধী ইদ্রীস আলী আরও জানান, স্থানীয় একজন গ্রাম পুলিশ আপোষ মিমাংসা করলে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিবে বলে ও জানান।এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাশেদা বেগম মুঠোফোনে জানান, তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্ত দেবীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা গোলাম আজম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে শুনানির সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। 

নির্বাহী কর্মকর্তা ইউপি সদস্যকে ১ ঘন্টার মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলেছেন। তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি তদন্ত চলছে এ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবো’।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ