এবারে বর্ষা মৌসূমের শেষে এসে সর্বোচ্চ পরিমান বৃষ্টিপাত হয়েছে পঞ্চগড়ে। গতকাল বুধবার দুপুরে পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় মৌসূমের সর্বোচ্চ ২১৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। টানা বৃষ্টিতে সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। চরম দূর্ভোগে পড়েছে মানুষজন। পানি নিস্কাসনের সুব্যবস্থা না থাকায় বাড়িঘরে পানি উঠেছে।
বাড়িতে পানি জমে থাকায় অনেকে রান্নার কাজ করতে পারেনি। এ অবস্থা আরও তিন দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও অতি বৃষ্টির কারণে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সকল নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে সব নদ নদীর পানি।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় অতি ভারী বৃষ্টিপাত। যা চলে বেলা একটা পর্যন্ত। ভারী বৃষ্টির কারণে সর্বত্র সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। কোন কোন জায়গায় পানি সরে গেলেও অনেক স্থানে পানি সরে যাওয়ার সুব্যবস্থা না থাকার কারণে ডুবে যেতে থাকে রাস্তা-বাড়িঘর।
বিশেষ করে পঞ্চগড় পৌর এলাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতায় মানুষজন চরম দূর্ভোগে পড়ে। শহরের এমআর কলেজ রোডে খাদ্য গুমামে পানি ঢুকে পড়ে ভিজে গেছে চালের বস্তা। বানিয়াপট্টি থেকে কামাতপাড়া সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তার ওপর হাটু পানি লেগে থাকায় ময়লা পানি দিয়েই মানুষ রাস্তা চলাচল করছে। পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া গ্রামের অর্ধ শতাধিক বাড়িতে পানি উঠায় কেউ দিনের বেলা রান্নার কাজ করতে পারেনি।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই আমাদের বাড়িতে পানি উঠছে। পানি সরে যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর অনেক বছর আগে একটি রিং কার্লভার্ট তৈরী করা হয়। কিন্তু রিং দিয়ে পানি দ্রুত সরে না যাওয়ায় দীর্ঘ সময় আমাদের জলাবদ্ধতায় ভুগতে হচ্ছে। রিং কার্লভার্ট ভেঙ্গে এখানে বক্স কার্লভার্ট নির্মাণ করা হলে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না বলে তিনি জানান।
পঞ্চগড় পৌর মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পানি ড্রেন দিয়ে যেতে না পারার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অসচেতনতায় অনেকে বাড়িঘরের ময়লা আবর্জনা ড্রেনে ফেলার কারণে পানি প্রবাহ ব্যহত হচ্ছে। তাই নিয়মিত পরিস্কার করার পরও বৃষ্টিতে ড্রেনের পানি উপচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা ড্রেন পরিস্কার করে পানি সরিয়ে নেয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বুধবার দুপুর থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় ২১৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসূমের সর্বোচ্চ। আগামী ২৬ সেপ্টম্বর দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে বলে তিনি জানান।
0 মন্তব্য