বন্যার পানি কমলেও দূর্ভোগ কমছেনা বানভাসীদের

মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যা দুর্গত মানুষজনের। ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় এখনও ঘরে ফিরতে পারেনি পাকা সড়ক, বাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষেরা। বন্যা কবলিত এলাকায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদের সংকট বেড়েছে। রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সরকারী-বেসরকারীভাবে ত্রাণ তৎপরতা চললে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অাবুল হোসেন, এরশাদুল ও ফজলার রহমান জানান, বানের পানিতে অামাদের বাড়ী-ঘরের অবকাঠামো ভেঙ্গে গেছে। ঘরের বেড়া ভেঙ্গে যাওয়ায় ভংগুর অবস্থায় বসবাস করছি। পানি কমে গেলেও এখনো কাদা থাকায় চলাফেরায় খুবই সমস্যা হচ্ছে। গরু ছাগল সহ অন্যান্য গবাদি পশু রাখার সময় কাদার উপরে বালু ছিটিয়ে তার উপর খড় বিছিয়ে রাখতে হচ্ছে। 

রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ সরবেশ অালী জানান, অামার ইউনিয়নে বন্যার পানি কমা অার বাড়ার মাঝেই অাছে। মাঝে মাঝে অনবরত বৃষ্টি হওয়ায় অাতঙ্কে দিন পার করছেন বানভাসী মানুষজন। বন্যার পানিতে বাড়ী ঘর তলিয়ে থাকায় মানুষ জন এখনো পানিবন্দি জীবন যাপন করছেন। বানভাসী মানুষজনের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো নৌকা বা কলা গাছের ভেলা। চলমান বন্যায় ইউনিয়নের অধিকাংশ মৌসুমি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষজনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। চুলা পানির নীচে তলিয়ে থাকায় বানভাসী রান্না করে  খেতে পারছে না। 

চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ অাবু হানিফা জানান, পানি কমে গেছে। বানভাসী মানুষজনের রয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। গো-খাদ্য সংকটের কারনে গবাদি পশু নিয়ে মানুষজন রয়েছে বিপাকে। চুলা জ্বালাতে না পেরে অনেকেই না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (৩০ জুলাই) বেলা ১২টার রিপোর্টে জানা যায়, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারীভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ঈদের আগে জেলার ৪ লাখ ২৮ হাজার ৫শ ২৫ পরিবারকে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী আরো খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ