বন্ধুকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অতঃপর প্রতারক চাকমা বন্ধু পুলিশের হাতে গ্রেফতার

মোহাম্মদ হায়দার আলী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ  
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা (ভিকটিম) ট্রাক ড্রাইবার মো. মামুন হোসেন (২৯)। বর্তমানে সদরঘাটের পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় থাকেন। খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি এলাকার বাসিন্দা (আসামি) চিং থোয়াই মারমা (২৯) বর্তমানে সে ও থাকেন পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায়।

গত তিন-চার মাস আগে তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্বের সুবাদে সদরঘাট থেকে ভিকটিম তার বন্ধুর (অপহরণকারী) থোয়াই মারমার সাথে ভূজপুরের গহীন জঙ্গলে বেড়াতে যান। আনন্দ ফুর্তির কথা বলে বন্ধুকে বেড়াতে নিয়ে গেলেও (অপরণকারী) পরিকল্পনা মতো (পাঁচ ফুট লম্বা) একনলা বন্দুকের মূখে বন্ধুকে অবরুদ্ধ করে বন্ধুর পরিবারের কাছে ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি করে। এমন অভিযোগ পেয়ে গহীন জঙ্গলে অভিযান চালায় নগরীর সদরঘাট থানার চৌকস একটি টিম। ভূজপুর থানা থেকে দুই-তিন কিলোমিটার দুরে গহীন এই জঙ্গলে একপর্যায়ে টিমটি রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে একটি কুঁড়েঘর থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করেন এবং অপহরণকারী কে একটি পাঁচ ফুট লম্বা একনলা বন্দুকসহ গ্রেফতার করেন।

এ বিষয়ে সদরঘাট থানার এ এস আই জয়নাল আবেদিন দৈনিক অপরাধ অনুসন্ধান এর নির্বাহী সম্পাদক সাংবাদিক হায়দার আলী কে বলেন, গত ২০ জুলাই সদরঘাট থেকে ভিকটিমকে বেড়াতে নিয়ে যায় আসামি ও তার একজন সহযোগী। সেখানে তারা অস্ত্রের মুখে ভিকটিমকে অবরুদ্ধ করেন। এবং পরদিন ২১ জুলাই আসামিরা ভিকটিমের পরিবারের কাছে ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না দিলে ভিকটিমকে খালাস করে দিবে বলেও পরিবারকে ফোনে জানান। বিষয়টি ভিকটিমের ভাই সাইফুল ইসলাম সদরঘাট থানায় অভিযোগ আকারে জানালে গত ২৪ জুলাই ভূজপুরের গহীন সেই জঙ্গলে (পাহাডের প্রায় ৮০০ফুট উপরের কাছাকাছি উচ্চতায়) গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের একসময় একটি কুড়েঁঘর থেকে ভিকটিম মামুন হোসেন প্রকাশ জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং অপহরণকারীকে (পাঁচ ফুট লম্বা) একনলা বন্দুক সহ গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আকতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথেই ভূজপুরের গহীন জঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করি এবং একটি কুঁড়েঘর থেকে ভিকটিম মামুনকে উদ্ধার করি। সেই সাথে অপহরণকারী চিং থোয়াই মারমাকে একটি বন্দুকসহ গ্রেফতার করি। একপর্যায়ে ভিকটিম ও অপহরণকারীকে বন্দুক সহ থানায় নিয়ে আসি।

কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) নোবেল চাকমা গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন,ভিকটিমের ভাই সাইফুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে সদরঘাট থানার চৌকস একটি টিমকে অভিযানে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে অভিযান পরিচালনাকারী টিম স্বফলতার সাথে তাদের অভিযান শেষ করেন এবং ভিকটিমকে উদ্ধার ও অপহরণকারীকে একটি বন্দুকসহ গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে অপহরণকারী আসামি চিং থোয়াই মারমাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এসি নোবেল চাকমা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ