ঈদ ঘনিয়ে এলেও পাইকারের দেখা নেই

মিজানুর রহমান মিলনঃ 
পবিত্র ঈদুল আযহা ঘনিয়ে এলেও এখনও গবাদিপশুর পাইকারদের আগমন নেই খামারগুলোতে। ফলে কাঙ্খিত দাম পাওয়া তো দুরের কথা বরং লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সৈয়দপুরের খামারিরা। 

এদিকে ঈদুল আযহা যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে তাদের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবারে উপজেলায় ৭৬ টি খামারে ৯ হাজার ১৯০ টি গবাদিপশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬ হাজার ৫৯৬ টি গরু এবং ২ হাজার ৫৯৪ টি ভেড়া ও ছাগল। 

সৈয়দপুরের বেশ কয়েকজন খামার মালিক জানান, মুলত কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা সারা বছর গরু-ছাগল লালন পালনে খামারে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু করোনার কারণে এখন পর্যন্ত খামারে কোন পাইকারের আগমন দেখা যাচ্ছে না। 

অথচ প্রতি বছর রোজার ঈদের পরই ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাদিপশুর পাইকাররা এসে গরু ছাগলের দরদাম ঠিক করে টাকা বায়না দিতেন। কিন্তু এবার করোনাকালে পাইকারদের যেমন দেখা মিলছে না, তেমনি স্থানীয়দের আগমন দেখা যাচ্ছে না। 

এ অবস্থায় তারা গরু-ছাগল বিক্রি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। একই সঙ্গে খামারের বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে আনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন খামারিরা। সৈয়দপুরের খামার ব্যবসায়ী শহরের বাঁশবাড়ি এলাকার মেসার্স ইউসুফ ডেইরি ফার্মের মালিক রোটারিয়ান মো. জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, এবারে তাঁর খামারে কোরবানীর জন্য ১৫০ টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। 

গরুর গঠন অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, প্রতি বছরই রোজার ঈদের পরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা খামারে এসে গরু কিনতেন। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। 

ফলে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছেন তিনি।  উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আদানী মোড়ের রাদিয়া ট্রেডার্সের নারী উদ্যোক্তা খামারি আফসানা ও সবুজ বাংলা খামারের মালিক আরজিনা বেগম জানান, তারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ১৮-২০ টি গরু সারা বছর ধরে লালন-পালন করছেন। এতে তাদের নিজেদেরও অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। 

কিন্তু তাদের খামারেও এখন পর্যন্ত কোন পাইকার আসেনি। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে হাট-বাজারে ক্রেতা মিলবে কি-না এবং মিললেও সঠিক দাম পাওয়া যাবে কি-না এ নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় পড়েছেন তারা।  জানতে চাইলে, সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রাহেদুল হক বলেন, 

করোনার কারণে খামারিদের মাঝে পশুর দাম প্রাপ্তি ও বিক্রি করা নিয়ে কিছুটা ভীতি সঞ্চার হয়েছে। তবে এখনও গরু-ছাগল বিক্রির প্রচুর সময় আছে। খামারিরা যাতে হাট-বাজারে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারেন এবং হয়রানির শিকার না হয় এজন্য প্রশাসনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ