কক্সবাজারে পর্যটন উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসেনি করোনা যুদ্ধে!

এমন হেডলাইন দেখে পর্যটন উদ্যোক্তারা প্রথম উত্তর দিবেন কোভিট-১৯ আসার পর থেকে দীর্ঘ লকডাউনে আমাদের অবস্থা কাহিল। ঠিক মতো কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন পরিশোধ করতে পারিনি। সেইটাও ঠিক, অনেক কর্মচারি বেতন না পেয়ে ঘরে বসে অাছে। একটু উদার  মানসিকতার পরিচয় দিলে চলমান করোনা যুদ্ধে  স্থানীয় কিছু পরিবারের মাঝে হাসি ফুটাতে পারতেন।

কক্সবাজারে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেলে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় প্রতিবছর, এই টাকায় ইটের উপর ইট ওঠে অনেক সুরম্য অট্টালিকা তেরি করেছেন। এমন আপদকালীন এই এলাকার মানুষের পাশে  তেমন কোন সহযোগিতা করতে চোখ পড়েনি। ব্যক্তিগত সাহায্য না হলেও  আপনাদের   সংগঠন গুলোও তো কোন সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি।  অতচ পর্যটন বললেই এইজপদের মানুষের কাছে লক্ষি বলে সব দুষ মাফ করে দিয়ে আপাদের পাশে থেকেছে এটি একেবারে অস্বীকার করতে পারবেন না। ধরে নিলাম কিছু পর্যটন উদ্যোক্তা একটু খারাপ সময় পার করছেন, বেশিরভাগ তো কোটিপতি পর্যটন উদ্যেক্তা। আপনারা চাইলে এই জনপদের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন। যেমন, একটি  চিংড়ী রপ্তানি মুলক প্রতিষ্ঠানের সংগঠন(সেব) সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে করোনা পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সাপ্লাই দিয়েছে। আপনাদের তো মাত্র কয়েক মাস ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে আর তাদের তো কয়েক বছর ব্যবসায়িক মন্দা চলছে এর পরেও করোনা যুদ্ধে তারা এগিয়ে আসতে পেরেছে, প্রশ্নটি রেখে দিলাম আপনাদের কাছে। 

এদিকে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের আচরণে পরিবর্তন আসবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটনের বাজারকে কাজে লাগিয়ে আমাদের পর্যটন খাতের উন্নয়ন ধরে রাখতে পর্যটকদের পরিবর্তিত আচরণের সাথে পর্যটন উদ্যোক্তাদের মানিয়ে চলতে হবে। পর্যটন খাতে পর্যটকদের দ্বারা টেকনোলজির ব্যবহার বাড়বে এবং পর্যটনের উন্নয়নের জন্য তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নতুন পর্যটন গন্তব্য খুঁজে বের করতে হবে এবং পর্যটন পণ্যের বৈচিত্রতা তৈরি করতে হবে। গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যটন গন্তব্যের উপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে একই পর্যটন গন্তব্যে যেন বেশি পর্যটকের ভিড় না হয়।

সরকারি বরাদ্দ বেড়েছে পর্যটন খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ও উন্নয়ন খাতে দ্বিগুণেরও বেশি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও নতুন অর্থবছরে (২০১৯-২০) জন্য তা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা করা হয়েছে। এতে করে পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে এই খাত জিডিপিতে অবদান রাখার পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০১৯ সালে জুলাই পর্যন্ত একলাখ ৮৯ হাজার ৮৯৭ জন পর্যটক বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছেন। আর ২০১৮ সালে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৭০৭ জন, ২০১৭ সালে দুই লাখ ৬৫ হাজার ৪৯১ জন, ২০১৬ সালে দুই লাখ ৯ জাহার ৯৫ জন, ২০১৫ সালে একলাখ ৪১ হাজার ৯১৭ ও ২০১৪ সালে এক লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৮ জন বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছেন।

"টুরিস্ট ক্যারিং ক্যাপাবিলিটি" নিশ্চিত করার জন্য ও  পরিবেশ বাঁচাতে পর্যটনের সাথে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্থানীয় জনগণকে প্রশিক্ষিত করে দক্ষ পর্যটন জনবলে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার।  

লেখকঃ
আব্দুল আলীম নোবেল(সাংবাদিক)
সমন্বয়ক
পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ