তিন বছর আগে ঢাকার কূটনীতিকপাড়া গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলায় ২২ জনকে হত্যার দায়ে নব্য জেএমবির সাত সদস্যের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
ডেস্ক নিউজ,
ঢাকার
সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ
ট্রাইব্যুনালের বিচারক
মজিবুর রহমান
বুধবার জনাকীর্ণ
আদালতে আলোচিত
এ মামলার
রায় ঘোষণা
করেন।
সর্বোচ্চ
সাজার আদেশ
পাওয়া জাহাঙ্গীর
হোসেন ওরফে
রাজীব গান্ধী,
আসলাম হোসেন
ওরফে র্যাশ,
আব্দুস সবুর
খান, রাকিবুল
হাসান রিগ্যান,
হাদিসুর রহমান,
শরিফুল ইসলাম
ওরফে খালেদ
ও মামুনুর
রশিদ রিপন
এ সময়
কাঠগড়াতেই উপস্থিত
ছিলেন।
রায়
শুনে তাদের
কারও চেহারাতেই
অনুশোচনার কোনো
চিহ্ন দেখা
যায়নি। তাদের
একজন উচ্চস্বরে
বলতে থাকেন,
“আল্লাহু আকবর,
আমরা কোনো
অন্যায় করিনি।”
অপরাধে
সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত
না হওয়ায়
এ মামলায়
বিচারের মুখোমুখি
করা আরেক
আসামি মিজানুর
রহমান ওরফে
বড় মিজানকে
খালাস দেওয়া
হয়েছে রায়ে।
তাকে রায়
শুনে উচ্ছ্বাস
প্রকাশ করতে
দেখা যায়।
বিশ্বজুড়ে
উগ্রপন্থার প্রসারের
মধ্যে ২০১৬
সালের ১
জুলাই রাতে
একদল তরুণের
ওই আত্মঘাতী
হামলা বাংলাদেশকে
বদলে দেয়
অনেকখানি।
জানা
যায়, কেবল
মাদ্রাসাপড়ুয়া গরিব
ঘরের ছেলেরা
নয়, নামি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
পড়া ধনী
পরিবারের সন্তানরাও
বাড়ি পালিয়ে
নিরুদ্দেশ হচ্ছে;
জড়াচ্ছে জঙ্গিবাদের
ভয়ঙ্কর পথে।
নজিরবিহীন হামলা
গুলশান-২
এর ৭৯
নম্বর সড়কের
শেষ মাথায়
লেকের তীরে
হলি আর্টিজান
বেকারির সবুজ
লন ছিল
বিদেশিদের কাছে
খুবই জনপ্রিয়।
বিদেশিদের নিয়মিত
আনাগোনা এবং
শিথিল নিরাপত্তার
কারণেই ওই
রেস্তোরাঁকে জঙ্গিরা
হামলার জন্য
বেছে নিয়েছিল
বলে তদন্তকারীদের
ধারণা।
রোজার
ঈদের মাত্র
এক সপ্তাহ
আগে যেদিন
ওই হামলা
হয়, সেদিন
ছিল শুক্রবার।
পিস্তল, সাব
মেশিনগান আর
ধারালো অস্ত্র
হাতে পাঁচ
তরুণ রাত
পৌনে ৯টার
দিকে ওই
ক্যাফেতে ঢুকে
শুরু করে
নৃশংসতা।
জবাই
ও গুলি
করে ১৭
বিদেশি নাগরিকসহ
২০ জনকে
হত্যা করে
তারা। হামলা
ঠেকাতে গিয়ে
নিহত হন
দুই পুলিশ
কর্মকর্তা। অভিযানের
সময় ও
পরে হাসপাতালে
মারা যায়
হলি আর্টিজান
বেকারির দুই
কর্মচারী।
কয়েক
ঘণ্টার মধ্যে
ওই হামলার
খবর আন্তর্জাতিক
সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনামে
চলে আসে;
তখনও অনেকে
হলি আর্টিজানের
ভেতরে কার্যত
জিম্মি হয়ে
ছিলেন।
রুদ্ধশ্বাস
রাত পেরিয়ে
ভোরে সেনাবাহিনীর
কমান্ডোরা নামে
অভিযানে; ‘থান্ডারবোল্ট’
নামের সেই
অভিযানে হামলায়
সরাসরি অংশ
নেওয়া পাঁচ
তরুণের সবাই
মারা পড়ে।
ভেতর থেকে
উদ্ধার করা
হয় মোট
১৩ জনকে।
এরপর
দুই বছরে
হামলায় জড়িত
আরও অনেকে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
অভিযানে নিহত
হন। গুলশান
হামলার তদন্তে
মোট ২১
জনকে চিহ্নিত
করা হলেও
তাদের মধ্যে
জীবিত অবস্থায়
গ্রেপ্তার আটজনকেই
কেবল বিচারের
মুখোমুখি করা
সম্ভব হয়।
হামলা
: এক
নজরে
হামলা: ১
জুলাই, ২০১৬
, রাত পৌনে
৯টা।
হামলাস্থল: গুলশান
দুই নম্বরের
৭৯ নম্বর
সড়কের পাঁচ
নম্বর বাড়ির
হলি আর্টিজান
বেকারি।
হামলাকারী: মীর
সামেহ মোবাশ্বের,
রোহান ইবনে
ইমতিয়াজ ওরফে
মামুন, নিবরাজ
ইসলাম, খায়রুল
ইসলাম পায়েল
ও শফিকুল
ইসলাম উজ্জ্বল।
(সবাই অভিযানে
নিহত)।
হামলায়
নিহত: বিদেশিদের
মধ্যে ৯
জন ইতালীয়,
৭ জন
জাপানি, একজন
ভারতীয় নিহত
হন। নিহত
বাংলাদেশিরা হলেন
ইশরাত আকন্দ,
ফারাজ আইয়াজ
হোসেন ও
অবিন্তা কবীর।
নিহত
পুলিশ
কর্মকর্তা: ঢাকা
মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশের (ডিবি)
সহকারী কমিশনার
রবিউল ইসলাম
এবং বনানী
থানার ওসি
মো. সালাহউদ্দিন
খান।
জীবিত
উদ্ধার: ভোরে
কমান্ডো অভিযান
শেষে জীবিত
উদ্ধার করা
হয় নারী-শিশুসহ
১৩ জনকে।
বিচার:
এক
নজরে
মামলা
দায়ের: ২০১৬
সালের ২
জুলাই, সন্ত্রাস
দমন আইনে,
গুলশান থানায়।
মামলাকারী: গুলশান
থানার এসআই
রিপন কুমার
দাস।
তদন্তকারী: কাউন্টার
টেররিজম ইউনিটের
পরিদর্শক হুমায়ুন
কবির।
জিজ্ঞাসাবাদ: জিম্মি
অবস্থা থেকে
উদ্ধার হাসনাত
রেজাউল করিম
ও তাহমিদ
হাসিব খানকে
গ্রেপ্তার করে
রিমান্ডে নিয়ে
জিজ্ঞাসাবাদ করা
হলেও পরে
আসামি করা
হয়নি।
অভিযোগপত্র
দাখিল: ২০১৮
সালের ২৩
জুলাই। হামলায়
জড়িত মোট
২১ জনকে
চিহ্নিত করা
হলেও জীবিত
আটজনকেই কেবল
আসামি করা
হয়।
হামলায়
জড়িত,
অভিযানে
নিহত: তামিম
আহমেদ চৌধুরী,
নুরুল ইসলাম
মারজান, সরোয়ার
জাহান, তানভীর
কাদেরী, বাশারুজ্জামান
চকলেট, মোহাম্মদ
জাহিদুল ইসলাম,
মিজানুর রহমান
ছোট মিজান
ও রায়হানুল
কবির রায়হান।
স্বীকারোক্তি: ৬
আসামি দিয়েছেন
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি।
দেননি শরিফুল
ও মামুনুর।
অভিযোগ
গঠন: ২০১৮
সালের ২৬
নভেম্বর, ঢাকার
সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ
ট্রাইব্যুনালে।
সাক্ষ্যগ্রহণ
শুরু: ২০১৮
সালের ৩
ডিসেম্বর। প্রথম
সাক্ষ্য দেন
বাদী এসআই
রিপন।
সাক্ষ্যগ্রহণ
শেষ: ২০১৯
সালের ২৭
অক্টোবর।
রায়ের
তারিখ
ঘোষণা: ২০১৯
সালের ২৬
নভেম্বর।
হামলার উদ্দেশ্য
0 মন্তব্যসমূহ